
মো.ইমরান হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা ইকরামুল হাসান শাকিল। পায়ে হেঁটে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেছেন। তার এই অর্জন ও স্বপ্ন পূরণে আবেগ আপ্লুত মা শিরিনা বেগম। এলাকা ও কালিয়াকৈর বাসী উচ্ছ্বসিত।
কালিয়াকৈর উপজেলা ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গজারী বন ঘেরা বাগচালা গ্রামে মৃত খবির উদ্দিনের বড় ছেলে ইকরামুল হাসান শাকিল। তারা তিন ভাই। শাকিলের বাবা খবির উদ্দিন ২০১৯ সালে মারা গেছেন।
বাবার মৃত্যুর পর ছোট দুই ভাই সজিব আহম্মেদ ও সাকিব আহম্মেদকে নিয়ে শুরু হয় তাদের সংগ্রামের জীবন। তবে বয়োবৃদ্ধ মা শিরিনা বেগম সবসময় শান্তশিষ্ট ও আত্মপ্রত্যয়ী শাকিলকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন সব কাজে৷
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে তার মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা কালিয়াকৈর সহ নিজ এলাকার মানুষ আনন্দ প্রকাশ করেন। অনেকে তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমান। সবার মুখে সন্তানের প্রশংসা শুনে তার মা শিরিনা বেগম
খুশিতে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ।
এলাকাবাসী জানান, শাকিল তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌছে দিয়েছে। এ সংগ্রাম তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। শাকিলের এ অর্জন শুধু কালিয়াকৈর ও গাজীপুর বাসীর নয় নয়, সারা বাংলাদেশের। তার এই প্রচেষ্টা আগামী দিনের পর্বত আরোহীদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।
জানা যায়, শাকিল ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের ইনানী সৈকত থেকে হেঁটে দুঃসাহসিক ‘সি টু সামিট’ যাত্রা শুরু করেন। শুরুতে তিনি চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে ১২ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। সেখানে কিছু দিন বিশ্রাম শেষে আবার হাঁটতে শুরু করেন এবং গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ হয়ে ২৮ মার্চ পঞ্চগড়ে পৌঁছান।
এরপর ২৯ মার্চ তিনি সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতের জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং হয়ে ৩১ মার্চ পৌঁছান নেপালে। দীর্ঘ ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে তিনি ২৯ এপ্রিল এভারেস্ট বেজক্যাম্পে পৌঁছান এবং সেখান থেকে শুরু হয় মূল পর্বতারোহণ। শাকিলের এ ঐতিহাসিক অর্জনের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিশ্চিত করেছেন তার অভিযান সমন্বয়কারীরা।
এলাকার শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম ও সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা শাকিলের জন্য গর্বিত৷ ওর কারণে সারা দেশ আমাদের এলাকা পরিচিতি এনে দিয়েছে । মানুষ চেষ্টা করলে সব পারে, সেটি শাকিল ভাই প্রমাণ করেছেন।
শাকিলের মা শিরিনা বেগম বলেন, ওর বাবার মৃত্যুর পর সংসারে অনেক কষ্ট হয়েছে। এভারেস্ট উঠতে চেয়েছে। অনেক কষ্ট করেছি কিন্তু বাধা দেইনি কখনো৷ আজ শাকিলের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমি অনেক খুশি হয়েছি ও আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ।