মো: গোলাম কিবরিয়া
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি।।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ -রামেক- হাসপাতাল থেকে তিন দিনের এক নবজাতক চুরির অভিযোগ উঠেছে । বুধবার -৯ অক্টোবর- বিকেলে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে চুরির এ ঘটনা ঘটে।
নবজাতকের বাবার নাম সুমন মিয়া। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগাছা থানার তাম্বুলপুর গ্রামে। সুমনের স্ত্রীর নাম মোছা. মনি খাতুন। তাঁর বাবার বাড়ি ঈশ্বরদীর গোকুলনগর গ্রামে।
নবজাতকের স্বজনরা বলছেন- বাচ্চা তার নানির কোলে ছিলেন । এসময় অপরিচিত এক মহিলা বাচ্চার উন্নত চিকিৎসার কথা বলে হাসপাতালের বাইরে নগরীর বাটার মোড়ে এক আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখান থেকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে কৌশলে বাচ্চা চুরি করা হয় ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে- মোছা. মনি খাতুন নামের এক নারী গত ৭ তারিখে পুত্র সন্তান জন্ম দেন । ৩ দিন পর জানতে পারি, বাচ্চার নানি নিজেই অপরিচিত এক মহিলার কাছে শিশুটিকে দিয়ে দিয়েছেন ।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, শিশুটির কোন অবিভাবক আমাদের নিকট কোনো অভিযোগ করেননি । তবে ঘটনা জানার পর থেকে আমরা নিজেরাও ক্ষতিয়ে দেখছি এবং কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনকে জানিয়েছি । সকল সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে এবং পুলিশের সহযোগীতায় খুব দ্রুত একটা সমাধানে আশতে পারবো বলে আশা করি ।
সন্তান চুরির এ ঘটনার একদিন পর নগরীর রাজপাড়া থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বাবা সুমন আলী । তিনি বলেন, গত সোমবার আমার স্ত্রী সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন । বুধবার বিকেলে আমার শাশুড়ি বাচ্চা কোলে নিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে দাড়িয়ে ছিলেন। এসময় বোরকা পরিহিত অপরিচিত এক মহিলা নিজেকে স্বেচ্ছাসেবী দাবি করে বাচ্চা অসুস্থ এবং ভালো চিকিৎসার কথা বলে শহরের এক হোটেলের রুমে নিয়ে যাওয়ার পর কৌশলে বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে যান ।
বাটার মোড়ের ওই হোটেলের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় । সেখানে দেখা যাচ্ছে, ৪.২৩ মিনিটে বোরকা পরিহিত দুজন মহিলা হোটেলে প্রবেশ করছে । এরপর মুখে মাস্ক পরিহিত ওই মহিলা হোটেলে রুম বুকিং দিলে তার পাশেই নবজাতককে কোলে নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তার নানিকে। পরে সেখান থেকে হোটেল বয় তাদের রুম দেখিয়ে দিলে ৪.৪০ মিনিটে রুম থেকে মাস্ক পরিহিত মহিলাকে বাচ্চা নিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় ।
এদিকে, গতকাল রাতে নবজাতকের নানা হাসান আলী ও নানি রুমি বেগম রাজপাড়া থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করতে যান। পরে তাঁদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ তাঁদের আটক রাখে।
এ বিষয়ে রাজপাড়া রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা এমন সংবাদ পাওয়া মাত্রই তদন্ত শুরু করেছি । আশাকরি তাড়াতাড়ি সন্ধান পাওয়া যাবে। আর নানা-নানিকে আটকে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁদের কথাবার্তা সন্দেহজনক ছিল। ওই নারীর কাছ থেকে কিছু টাকাও নিয়েছেন নবজাতকের নানি। সব মিলিয়ে শিশুর বাবা এলে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।