
স্টাফ রিপোর্টার, মেহেরপুর
মেহেরপুরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জেলা সংসদের অষ্টম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা -জাসাস -এবং বিএনপি’র কয়েকটি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাঁধার মুখে সম্মেলনটি পন্ড হয়।
শুক্রবার -১৭ জনুয়ারি- বেলা ১১ টার দিকে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী উদীচীর মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্যরা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উপস্থিত হলে একই সময়ে জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকা বিল্লাহ- জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আজমল হোসেন মিন্টু ও যুবদল নেতা মশিউল আলম দিপু’র নেতৃত্বে বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের ১৪- ১৫ জন নেতাকর্মী সম্মেলন স্থলে উপস্থিত হন। তারা যেকোন মূল্যে উদীচীর সম্মেলন প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মেহেরপুর সদর থানার ওসি’র নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিমও সেখানে গিয়ে পৌঁছে।
যুবদল নেতা মশিউল আলম দিপু বলেন, ‘উদীচী সংগঠনটি ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগের লোকদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এজন্য শিল্পকলা একাডেমিতে উদীচীর অনুষ্ঠানটি প্রতিহত করেছি। ভবিষ্যতেও মেহেরপুর জেলার কোথাও উদীচী কোন অনুষ্ঠান করতে গেলে সেটাও আমরা যেকোন মূল্যে প্রতিহত করবো।
জাসাস মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব বাকা বিল্লাহ বলেন, ‘বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের উপর ভর করে চলেছে, উদীচী এমনই একটি সংগঠন। সব সময় আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় চলার পর এখন যদি তারা বলে আমাদের সাথে আওয়ামী লীগের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই, সেটা আমরা মেনে নেব না। ‘
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব এড. মিজানুর রহমান বলেন- এখানে যারা নেতা সেজে অনুষ্ঠান বন্ধ করছেন, ৫ আগস্টের পূর্বে তাদের চেহারাও দেখা যেত না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই উদীচী তাদের পাশে থেকেছে। গণঅভ্যুত্থানে উদীচী সদস্যদের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। মূল ঘটনা হলো বিএনপির একটি পক্ষের শীর্ষস্থানীয় এক নেতার ইন্ধনেই আমাদের অনুষ্ঠান পন্ড করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- কিছুদিন পূর্বে জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকা বিল্লাহ মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কাছে শিল্পকলা একাডেমির হলরুম বরাদ্দ চেয়েছিলেন কিন্তু রাজনৈতিক পদ থাকাতে সে সময় তিনি অনুমতি পাননি। সেই ক্ষোভ তিনি আমাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করার মাধ্যমে মিটিয়েছেন।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের ঘটনা জানতে পেরে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। উভয়পক্ষ নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকাতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশংকা ছিলো। এজন্য পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের পরামর্শে উদীচীর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।