Dhaka , Monday, 30 June 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে সমৃ’দ্ধি উন্নয়ন মেলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত সাংবাদিকতায় সম্মাননা পেলেন দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি মামুন রনবীর সম্পত্তির জন্য পিতাকে হ’ত্যার উদ্দেশ্যে কু’পিয়ে জখম, ছেলে রুবেল গ্রে’ফতা’র লালমনিরহাটে একদিনে ১৬ অ’পরা’ধীকে গ্রে’প্তার করেছে পুলিশ সলিথা গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জ’মি প’রিদর্শ’নে ইউএনও রূপগঞ্জে ১৮ কোটির বাজেট ঘো’ষণা, উদ্বৃ’ত্ত দেড় কোটির বেশি রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বাজেট ঘোষণা গবাদিপ’শুর রো’গ প্র’তিরো’ধে সময়মতো ভ্যা’কসি’ন নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা রূপগঞ্জে ১৫৫ বোতল ফে’নসিডি’লসহ তিন নারী মা’দক ব্যব’সা’য়ী গ্রেফ’তার রূপগঞ্জে শ্রমিকদলের উঠান বৈঠক  র‍্যাবের অ’ভিযা’নে ফে’নসি’ডিল’সহ দুইজন মা’দক ব্য’বসা’য়ী গ্রে’প্তার  ‎সরকারি গাছ কা’টায় প্রশাসনের নীর’বতা প্রভা’বশালী বলেই কি ছাড় পাচ্ছেন সাখাওয়াত কোম্পানীগঞ্জে বর্ণি স্টুডেন্ট ফোরামের নতুন কমিটি ঘোষণা গ্লোবাল টেলিভিশনের সাংবাদিক মনিরুল আলম কে হ’ত্যার হু’মকি রূপগঞ্জে ৫ শতাধিক অ’বৈধ গ্যা’স সং’যো’গ বি’চ্ছি’ন্ন সরাইলে দা’ঙ্গা – হা’ঙ্গামা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক সভা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রাজশাহীতে পরিবেশ দিবস পালিত মু’নাফা’র জন্য নয়, মানুষের জন্য জ’লবা’য়ু অ’র্থায়’ন করো নোয়াখালীতে মাদরাসা ছাত্র হ’ত্যার বি’চার দা’বীতে বি’ক্ষো’ভ পাবনা-ঢাকা রুটে বাস চলাচল শুরু,ধ’র্মঘ’ট প্র’ত্যাহা’র রূপগঞ্জে ৭০ লাখ টা’কা মু’ক্তিপ’ণ দা’বি’তে ব্যবসায়ী অ’পহর’ণ, কয়েক ঘণ্টা পর উ’দ্ধা’র বাবুই পাখির কা’ন্না কেউ শু’নল না—তালগাছ কে’টে মু’ছে দেওয়া হলো শত ছানার জী’বন র‍্যাবের অ’ভিযা’নে লালমনিরহাটে বি’পুল পরি’মাণ গাঁ’জা’সহ এক মা’দক কা’রবা’রি গ্রে’প্তার ক’রোনা-ডে’ঙ্গু-চি’কুনগু’নিয়া মো’কাবেলা’য় তিন মাসের বিশেষ অ’ভিযা’ন চালাবে চসিক:- মেয়র ডা. শাহাদাত রূপগঞ্জের অ’বৈ’ধ অ’স্ত্র উ’দ্ধার ও স’ন্ত্রাসী’দের গ্রে’ফতা’রের দাবি  নেত্রকোণার দুর্গাপুরে দী’র্ঘ ষোল বছর পর বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত নীলফামারী-১ আসনের সাবেক এমপি তুহিনকে গ’ণ সং’বর্ধ’না ও বি’নামূ’ল্যে চ’ক্ষু চি’কিৎসা ক্যাম্প সাভারের আশুলিয়ায় এক ইতালি প্রবা’সীকে পি’টিয়ে গুরুতর আ’হত করে সাত হাজার ইউরো ছি’নিয়ে নেওয়ার অ’ভিযো’গে না’রীস’হ পাঁচজনের বি’রুদ্ধে মা’মলা দায়ের করা হয়েছে। কিশোরীকে ৫ মাস আ’টকে রেখে ধ’র্ষণ,গ্রে’প্তার-১ দুর্গাপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হলেন যারা

নারায়ণগঞ্জ হাজীগঞ্জ খেয়াঘাটে নদী দূষণ ও দখল নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর কান্না নামক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 03:12:03 pm, Friday, 11 October 2024
  • 67 বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ হাজীগঞ্জ খেয়াঘাটে নদী দূষণ ও দখল নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর কান্না নামক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত।।

জান্নাতুল ফেরদৌস।।

 

নারায়ণগঞ্জ হাজীগঞ্জ খেয়াঘাটে নদী দূষণ ও দখল নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর কান্না নামক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার -অক্টোবর- পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির আয়োজনে সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ হোসাইন এর সভাপত্বিতে মহাসচিব মীযানুর রহমানের তত্বাবধানে অনুষ্ঠান সভা হয়।

উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এমএ মান্নান ভূইয়া, প্রধান আলোচক ছিলেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির বন্দর উপজেলা শাখার সহসভাপতি জহিরুল হক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ লীড গ্লোবাল এর প্রেসিডেন্ট রাকিবুল ইসলাম ইফতি, ইয়ুথ লীড গ্লোবাল এর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মেহেদী হাসান আশিক, কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান রাকিবুল হাসান, মারবদী সাহেবপাড়া যুবকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মীমরাজ হোসেন রাহুল, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির প্রচার সম্পাদক মোক্তার হোসেন,পানাম সিটি গ্রুপের এডমিন আদনান ইমরান।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাঙালির সভ্যতা-সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে নদীকেই কেন্দ্র করে। মিশরকে নীল নদের দান বলা হয়; তেমনি নদীমাতৃক বাংলাদেশকে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদ-নদীর দান বলা যায়। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে অভিন্ন ৫৭টি নদী।নদী বিধৌত এ’দেশে ছোট-বড় মোট ২৩০টি নদী আছে আর শাখা-প্রশাখাসহ নদীর সংখ্যা প্রায় ৮০০টি। এ নদীগুলো সারাদেশে রক্তের শিরা-উপশিরার মতো বহমান। মেঘনা ব্রহ্মপুত্র শীতলক্ষ্যা ধলেশ্বরী বুড়িগঙ্গা আর বালু নদী পরিবেষ্টিত নারায়ণগঞ্জ জেলা। এই নদীগুলো নারায়ণগঞ্জের পরিবেশের বিচিত্র অনুষঙ্গ। আমাদের দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠির জীবন ও জীবিকার সম্পর্ক রয়েছে নদীর সাথে। খরস্রোতা নদীগুলোতে জেলেরা মাছ ধরত, নৌকাবাইচ হতো, উৎসবের আমেজে মেতে উঠত নদীর পাড়ের মানুষগুলো। কৃষি, মৎস্য, জেলেদের পেশা এবং সংস্কৃতির পাশাপাশি মানুষের নিত্যদিনের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ সবকিছুর একমাত্র উৎস ছিল এই নদীগুলো। বাংলাদেশের নদীগুলো মিঠা পানির প্রধান উৎস্য এবং দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কিন্তু আমাদের দায়িত্বহীনতায় নদীগুলো দখল ও দূষণের শিকার। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বত্রই ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলছি। কিন্তু সেই নদী আজ দখল, দূষণ আর ভরাটের প্রতিযোগিতায় বিপন্ন; অনেকাংশে বিলুপ্ত। নদীগুলোর নাব্যতা হারানোর নানাবিধ কারণের মধ্যে অবৈধ দখলদারিত্ব, অপরিকল্পিত নদীশাসন, দূষণ, ভরাট, অপরিকল্পিত ড্রেজিং, ইচ্ছামতো বাঁধ নির্মাণ ইত্যাদি অন্যতম। সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠছে বড় বড় কলকারখানা, শত শত বাঁধ। দূষণ-দখলের কবল থেকে কিছুতেই বাঁচানো যাচ্ছে না শীতলক্ষ্যা নদীকে। প্রতিদিনই বাড়ছে দূষণ; বাড়ছে দখলদারদের সংখ্যাও। প্রভাবশালীরা নদী ভরাট করে দখলের উৎসবে মেতেছে। খাল, নদ-নদী, নর্দমা হয়ে অপরিশোধিত অবস্থায় নদীগুলোতে জমা হচ্ছে। নদীগুলোকে গিলে খাচ্ছে পলিথিনসহ শিল্প-কারখানার বিষাক্ত কেমিক্যাল ও বর্জ্য, হাসপাতাল-ক্লিনিকের পরিত্যক্ত কেমিক্যাল, লঞ্চ-জাহাজের পোড়া তেল, মবিল, ওয়াসার পয়ঃবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য ও নদীর পাড়ে।
মিঠা পানির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে বহু আগে। জীব বৈচিত্রও নেই। এ নদীর পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্যের কোঠায়। আদালতের রায় অনুযায়ী নদীগুলো এখন ‘জুরিসটিক পারসন’ বা ‘লিগ্যাল পারসন’। এর মধ্য দিয়ে মানুষের মতো নদীরও মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। সুতরাং নদীকে হত্যা করার অর্থ হলো বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হত্যা করা। আদালত স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের সব নদীই মূল্যবান এবং সংবিধান, বিধিবদ্ধ আইন ও পাবলিক ট্রাস্ট মতবাদ দ্বারা সংরক্ষিত। বাংলাদেশকে ‘নদীমাতৃক’ বলা হয়। নদী মায়ের মতো; নদী মা হিসেবে স্বীকৃত। নদী দূষনও মাকে হত্যা করার সামিল।

এই নদী দূষণ ও দখলে জারা জড়িত তাদের সহযোগিতা করছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুলোর অসাধু কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এ সকল অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান নদী দূষণে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেগুলো প্রয়োজনে বন্ধ করে দিতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের জন্য উন্নয়ন। নদী দখল দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১৮ কোটি মানুষের জীবনের হুমকি। তাই উন্নয়নের নামে অসাধু ও শিল্প প্রতিষ্ঠান অপ্রয়োজনীয় বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। যারা নদী দখল করে নদীর নাব্যতা ভিন্ন করছে তাদের কেউ শাস্তির আওতায় আনার জন্য উক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা দাবি জানান। পরিশেষে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদ শীতলক্ষ্যা নদী দূষণমুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ না করলে নদীপাড়ের লাখো মানুষের সমন্বয়ে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে সমৃ’দ্ধি উন্নয়ন মেলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নারায়ণগঞ্জ হাজীগঞ্জ খেয়াঘাটে নদী দূষণ ও দখল নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর কান্না নামক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত।।

আপডেট সময় : 03:12:03 pm, Friday, 11 October 2024

জান্নাতুল ফেরদৌস।।

 

নারায়ণগঞ্জ হাজীগঞ্জ খেয়াঘাটে নদী দূষণ ও দখল নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর কান্না নামক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার -অক্টোবর- পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির আয়োজনে সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ হোসাইন এর সভাপত্বিতে মহাসচিব মীযানুর রহমানের তত্বাবধানে অনুষ্ঠান সভা হয়।

উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এমএ মান্নান ভূইয়া, প্রধান আলোচক ছিলেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির বন্দর উপজেলা শাখার সহসভাপতি জহিরুল হক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ লীড গ্লোবাল এর প্রেসিডেন্ট রাকিবুল ইসলাম ইফতি, ইয়ুথ লীড গ্লোবাল এর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মেহেদী হাসান আশিক, কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান রাকিবুল হাসান, মারবদী সাহেবপাড়া যুবকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মীমরাজ হোসেন রাহুল, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির প্রচার সম্পাদক মোক্তার হোসেন,পানাম সিটি গ্রুপের এডমিন আদনান ইমরান।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাঙালির সভ্যতা-সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে নদীকেই কেন্দ্র করে। মিশরকে নীল নদের দান বলা হয়; তেমনি নদীমাতৃক বাংলাদেশকে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদ-নদীর দান বলা যায়। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে অভিন্ন ৫৭টি নদী।নদী বিধৌত এ’দেশে ছোট-বড় মোট ২৩০টি নদী আছে আর শাখা-প্রশাখাসহ নদীর সংখ্যা প্রায় ৮০০টি। এ নদীগুলো সারাদেশে রক্তের শিরা-উপশিরার মতো বহমান। মেঘনা ব্রহ্মপুত্র শীতলক্ষ্যা ধলেশ্বরী বুড়িগঙ্গা আর বালু নদী পরিবেষ্টিত নারায়ণগঞ্জ জেলা। এই নদীগুলো নারায়ণগঞ্জের পরিবেশের বিচিত্র অনুষঙ্গ। আমাদের দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠির জীবন ও জীবিকার সম্পর্ক রয়েছে নদীর সাথে। খরস্রোতা নদীগুলোতে জেলেরা মাছ ধরত, নৌকাবাইচ হতো, উৎসবের আমেজে মেতে উঠত নদীর পাড়ের মানুষগুলো। কৃষি, মৎস্য, জেলেদের পেশা এবং সংস্কৃতির পাশাপাশি মানুষের নিত্যদিনের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ সবকিছুর একমাত্র উৎস ছিল এই নদীগুলো। বাংলাদেশের নদীগুলো মিঠা পানির প্রধান উৎস্য এবং দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কিন্তু আমাদের দায়িত্বহীনতায় নদীগুলো দখল ও দূষণের শিকার। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বত্রই ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলছি। কিন্তু সেই নদী আজ দখল, দূষণ আর ভরাটের প্রতিযোগিতায় বিপন্ন; অনেকাংশে বিলুপ্ত। নদীগুলোর নাব্যতা হারানোর নানাবিধ কারণের মধ্যে অবৈধ দখলদারিত্ব, অপরিকল্পিত নদীশাসন, দূষণ, ভরাট, অপরিকল্পিত ড্রেজিং, ইচ্ছামতো বাঁধ নির্মাণ ইত্যাদি অন্যতম। সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠছে বড় বড় কলকারখানা, শত শত বাঁধ। দূষণ-দখলের কবল থেকে কিছুতেই বাঁচানো যাচ্ছে না শীতলক্ষ্যা নদীকে। প্রতিদিনই বাড়ছে দূষণ; বাড়ছে দখলদারদের সংখ্যাও। প্রভাবশালীরা নদী ভরাট করে দখলের উৎসবে মেতেছে। খাল, নদ-নদী, নর্দমা হয়ে অপরিশোধিত অবস্থায় নদীগুলোতে জমা হচ্ছে। নদীগুলোকে গিলে খাচ্ছে পলিথিনসহ শিল্প-কারখানার বিষাক্ত কেমিক্যাল ও বর্জ্য, হাসপাতাল-ক্লিনিকের পরিত্যক্ত কেমিক্যাল, লঞ্চ-জাহাজের পোড়া তেল, মবিল, ওয়াসার পয়ঃবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য ও নদীর পাড়ে।
মিঠা পানির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে বহু আগে। জীব বৈচিত্রও নেই। এ নদীর পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্যের কোঠায়। আদালতের রায় অনুযায়ী নদীগুলো এখন ‘জুরিসটিক পারসন’ বা ‘লিগ্যাল পারসন’। এর মধ্য দিয়ে মানুষের মতো নদীরও মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। সুতরাং নদীকে হত্যা করার অর্থ হলো বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হত্যা করা। আদালত স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের সব নদীই মূল্যবান এবং সংবিধান, বিধিবদ্ধ আইন ও পাবলিক ট্রাস্ট মতবাদ দ্বারা সংরক্ষিত। বাংলাদেশকে ‘নদীমাতৃক’ বলা হয়। নদী মায়ের মতো; নদী মা হিসেবে স্বীকৃত। নদী দূষনও মাকে হত্যা করার সামিল।

এই নদী দূষণ ও দখলে জারা জড়িত তাদের সহযোগিতা করছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুলোর অসাধু কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এ সকল অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান নদী দূষণে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেগুলো প্রয়োজনে বন্ধ করে দিতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের জন্য উন্নয়ন। নদী দখল দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১৮ কোটি মানুষের জীবনের হুমকি। তাই উন্নয়নের নামে অসাধু ও শিল্প প্রতিষ্ঠান অপ্রয়োজনীয় বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। যারা নদী দখল করে নদীর নাব্যতা ভিন্ন করছে তাদের কেউ শাস্তির আওতায় আনার জন্য উক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা দাবি জানান। পরিশেষে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদ শীতলক্ষ্যা নদী দূষণমুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ না করলে নদীপাড়ের লাখো মানুষের সমন্বয়ে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।