মিজানুর রহমান অপু,
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।।
গরিবদের নামে দেয়া সরকারের বিভিন্ন ভাতার অর্থ সুকৌশলে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সমাজকর্মী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা সমাজসেবা দফতরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী জাহিদুল ইসলাম।
ভাতাভোগীর পরিবর্তে নিজের আত্মীয়স্বজনদের মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে সুকৌশলে গরিবদের নামে দেয়া সরকারের বিভিন্ন ভাতার অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে সমাজকর্মী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ ধরণের একটি জালিয়াতির ঘটনায় গলাচিপা থানায় একজন ভুক্তভোগী সাধারণ ডায়েরি করলে আরও বেশ কিছু ঘটনার তথ্য বেরিয়ে আসে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জাহিদুল ইসলাম।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোন নম্বরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বিভিন্ন ভাতার অর্থ পাঠানোর কার্যক্রম শুরুর পর থেকে জাহিদুল ইসলাম অত্যন্ত সুকৌশলে সুফলভোগীর মোবাইল ফোন নম্বরের পরিবর্তে তার আত্মীয়স্বজনদের মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করছেন। অফিসে দায়িত্ব পালনের সুবাদে তিনি এ অপকর্ম করছেন।
গলাচিপা সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মালেকা খাতুন অভিযোগ করেন, তার বিধবা ভাতার কার্ডে নিজস্ব মোবাইল ফোন নম্বরের পরিবর্তে জাহিদুল ইসলাম আমখোলা ইউনিয়নের মুসুরিকাঠি গ্রামের ইয়াকুব সিকদারের মোবাইল ফোন নম্বর বসিয়ে দেন। ফলে তার ভাতার ৬৭৫০ টাকা ইয়াকুব সিকদারের মোবাইল ফোনে চলে যায়। ইয়াকুব সিকদার সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মচারী জাহিদুল ইসলামের আত্মীয়। জাহিদুল ইসলাম সময়সুযোগে সে অর্থ মোবাইল ফোন থেকে বের করে নিয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মালেকা খাতুনের নাতি আমিনুল ইসলাম বাপ্পি থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে একের পর এক ঘটনা বেরিয়ে পড়ে।
আমখোলা ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী আঃ করিম বিশ্বাস অভিযোগ করেন, তিনি নতুন সিম কিনে জাহিদুল ইসলামের কাছে বিকাশ নম্বর দিয়েছেন। কিন্তু ভাতার টাকা পাননি। কয়েকদিন তার অফিসে গিয়েছিলেন। জাহিদুল তাকে জানিয়েছে, তার ভাতা অন্য নম্বরে চলে গেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার মতো গরিবের টাকা আত্মসাৎ করলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।
জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী একইভাবে ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ সমাজসেবা দফতরে জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার মেলেনি।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীদের অর্থ অন্য মোবাইল ফোন নম্বরে কিভাবে যায়, তা আমার জানা নেই।
গলাচিপা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ অলিউল্লাহ বলেন, জাহিদুল ইসলামের এক আত্মীয়ের মোবাইল নম্বরে ভাতাভোগীর টাকা চলে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে তার সম্পৃক্ততা পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।