Dhaka , Monday, 23 December 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
চবিতে ক্যাব যুব গ্রুপ চবি ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’র যৌথ অভিযান ৩ টি দোকানে জরিমানা ৩১ হাজার টাকা।। লক্ষ্মীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর সলীল সমাধি।। সুন্দরগঞ্জে পরিত্যক্ত কোয়াটারে যুবকদের আড্ডা।। নরসিংদী সাবেক সংসদ সদস্য হত্যা  মামলায়  ৩ দিনের রিমান্ডে।। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আরেক কিশোরের মৃত্যু।। শ্রীপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।। শ্রীপুরে সেই কারখানা থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার নিহত ৩।। পরিকল্পিত হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত।। বিজিবি’কে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার।। উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে শিশুদের হাতে এন্ড্রোয়েড সেট নয়- অধ্যক্ষ হেলালী।। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে মাদরাসা দখলের হুমকি- হেফাজতের নিন্দা।। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে পুলিশ কমিশনার।। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগেঞ্জ জিংক ধানের সম্প্রসারণে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বীজ বিতরণ।। শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই।। পাইকগাছায় বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পলিথিন ও কারেন্ট জাল জব্দ।। ফিসারীতে হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি গ্রেফতার।। সা’দ পন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে ঈদগাঁওতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত।। শরীয়তপুরে ৫ কোটি টাকা বাজেটের গাইড ওয়ালে ব্যবহার হচ্ছে ভিটি বালু ও ব্যবহৃত পাথর।। দেবহাটায় ছাত্রশিবিরের কর্মী শিক্ষাশিবির অনুষ্ঠিত।। পাইকগাছায় হলুদ ফুলে সোভা ছড়াচ্ছে সরিষা ক্ষেত।। ভোলা জেলার ডিবি পুলিশের অভিযানে ২০ বোতল ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ ১ জন আটক।। প্রথম বারের মতো নারী নেতৃত্বে গবিসাস।। চট্টগ্রামের পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে বাসের ধাক্কায় এক পথচারী নিহত।। গাজীপুরে চাঁদাবাজের হামলায় চাঁদাবাজ কালামের মৃত্যু।। রূপগঞ্জে মীর মুগ্ধ স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত বড় দিন উপলক্ষে দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় সেনাবাহিনীর উপহার সামগ্রী বিতরণ।। চন্দনাইশে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে কর্ণেল অলির নগদ অর্থ বিতরণ।। লালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাংবাদিকের ছেলের মৃত্যু।। দোহাজারী ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া নড়ে না কাগজ রকারি নিয়ম না থাকলেও টানা ৭ বছর ভূমি সহকারী পদে কর্মরত আছেন কাজী মো. এনামুল হকস।। বিভাগের দাবিতে উত্তাল নোয়াখালী।।

নৌপুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভোলার জেলেদের হয়রানি অভিযোগ উঠেছে

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 11:56:50 pm, Sunday, 14 November 2021
  • 163 বার পড়া হয়েছে

নৌপুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভোলার জেলেদের হয়রানি অভিযোগ উঠেছে

হোসাইন রুবেল ভোলা।।

 মেহেন্দিগঞ্জের কালিগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভোলার জেলেদের হয়রানি করে আটকে রাখা, বৈধ জালকে অবৈধ বলে উঠিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয়া, মাসিক চাঁদা আদায় করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। নৌপুলিশের এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলেরা প্রতিবাদ করলে তাদের নদীতে মাছ ধরতে দিবেনা বলে কালিগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ির মাঝিদের দিয়ে ভোলার সীমানার জেলেদের হুমকি প্রদান করা হয়। এমনকি জলদস্যু বলে বন্দুকযুদ্ধে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি প্রদান করা হয় বলে জেলেরা অভিযোগ করেন। তবে এব্যাপারে কালিগঞ্জ নৌথানার ওসি মো: ফারুক বলেন, নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নদী পথ সুরক্ষা রাখার জন্য নৌ-পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদীতে কিছু অসাধু জেলে তারা অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরে মাছের বংশ নিরবংশ করে থাকেন। তাদের জালগুলো ধরলে তারা এই ধরণের মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়ান।
সরকার নদীতে জেলেদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন জায়গায় নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করেছেন। কিন্তু জেলেদের নিরাপত্তার বদলে ভোলার জেলেদের কাছে মেহেন্দিগঞ্জের কালিগঞ্জ নৌপুলিশ যেন মূর্তিমান আতংকের নাম। জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে নামলে কালিগঞ্জ নৌপুলিশ ভোলা সীমানায় প্রবেশ করে জেলেদের জাল নিয়ে আটকে রেখে মোটা অংকের টাকা আদায় করা। কখনও জেলে ও জাল উভয় আটকে রাখা, মাসিক চাদাঁ আদায় করাসহ নানানভাবে জেলেদের হয়রানী করে যাচ্ছেন এই নৌপুলিশ টিম। এমন অভিযোগ এনে জেলেরা সাংবাদিকদের এই হয়রানির কথা জানান। জেলেরা বলছেন এইভাবে প্রতিনিয়ত নৌ-পুলিশ ধারা হয়রানি হলে নদীতে জেলেদের মাছ শিকার বন্ধ করে দিতে হবে।
নিরীহ জেলে মোঃ সবুজ বলেন, আমরা নদীতে যাইয়্যা বৈধ জাল বাইতেছি। জাল ফালাইছি, আমাদের ভোলার আওতার ভিতরে জাল ফালাইয়্যা বইয়্যা রইছি। হেরা আইছে (নৌপুলিশ), আইয়া আমাগো লগে কথা নাই বাতি নাই, আমাদের জাল ধইর‌্যা জাল টানা ধরছে, জাল টাইন্না নৌপুলিশে জাল নিয়া গেছে। জাল নিয়া যাওয়ার পর আমাগোরে বললো তোমরা টাকা পয়সা নিয়া আসো, তোমাদের জাল দিয়া দিমু। আমরা টাকা পয়সা নিয়ে গেছি। হেরা আমাগোরে ঘুরাইয়া রাইতের ১১টা পর্যন্ত রাখলো। রাইতের ১১টা পর্যন্ত বওইয়্যা রাইখ্যা কোন জালপাল দিলো না। জাল চাইলে আমাদেরকে হুমকী দেয়।
সবুজ আরও বলেন, নৌপুলিশ দিছে সরকার গাঙ্গে নিরাপত্তার জন্য, আমরা বাই বৈধ জাল, সরকার অভিযান দেয়, আমরা অভিযান পালন করি। অভিযান পালন করে এখন কোন অভিযান নাই, আমাগো সান্দি জাল হল বৈধ। এখন আমরা মাছ ধরতাছি। এখন সরকার যদি নৌপুলিশ আমাদের নিরাপত্তার জন্য দিয়া,নৌপুলিশ যদি ডাকাতি করে গাঙ্গে,তাহলে তো আমরা নদীতে মাছ ধরতে পারুম না। নৌপুলিশের হাত থেকে কিভাবে বাচঁতে পারি সে জন্য সরকারের কাছে আমাদের আবেদন।
মেঘনার নদীতে ২৬ বছর ধরে মাছ ধরে আসছেন জেলে মহাসিন। তিনি বলেন, নদীতে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে সরকার পুলিশের মধ্যে থেকে নৌপুলিশ নামে একটি পৃথক বাহিনী করে দিয়েছে। এই বাহিনীর কাজ হলো নদীতে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমন করা। নদীতে মাছ শিকার করতে গেলে জেলা জলদস্যু, ডাকাতের হামলার শিকারসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। জেলেদেরকে এসব সমস্যা থেকে সুরক্ষিত রাখাই হলো নৌপুলিশের কাজ। সেই রক্ষকই যখন ভক্ষক! নৌপুলিশই এখন ডাকাতের ভূমিকা পালন করছে এমন অভিযোগ নিরীহ জেলেদের। অসাধু নৌপুলিশ কর্মকর্তাদের হয়রানী ও অত্যাচারের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মেঘনা-তেঁতুলিয়ার জেলেরা। নদীতে অভিযান না থাকলেও জেলের বৈধ জাল তুলে আনা, তাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী, চোর-ডাকাত কিংবা সন্ত্রাসী আখ্যাসহ বিভিন্নভাবে নিরীহ জেলেদেরকে হয়রানী করছে নৌপুলিশ সদস্যরা।
নাম না প্রকাশ শর্তে একাধিক জেলে অভিযোগ করে বলেন, জেলেরা যখন নদীতে বৈধ জাল ফেলে মাছ শিকার করতে যায় হঠাৎ কিছু নৌপুলিশ সদস্য ও তাদের সোর্স এসে জাল অবৈধ বলে নিয়ে যায়। নিরীহ জেলেরা তাদের ভয়ে তখন কিছু বলতে সাহস পাই না। জাল নিয়ে যাওয়ার পর সোর্সের মাধ্যমে জেলেদেরকে নৌপুলিশ সদস্যদের সাথে দেখা করতে বলে। জেলেরা যখন তাদের কাছে যায়, তখন জাল ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দাবী করে নৌপুলিশ। জেলেরা তখন নিরুপায় হয়ে ধারদেনা করে নৌপুলিশের চাহিদা মতো টাকা জোগার করে জাল ছাড়িয়ে আনে। টাকা দিতে না পরলে অসহায় জেলেদের জালগুলো অন্য যায়গায় বিক্রি করে দেয়। কিছু সময় জাল পুড়েও ফেলে নৌপুলিশ সদস্যরা। এতে একদিকে যেমন জেলেরা শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অন্যদিকে মহাজনের দাদনের টাকা কাধে নিয়ে ও সংসারের দুচিন্তায় দিন কাটাতে হয়।
তবে এব্যাপারে কালিগঞ্জ নৌ থানার ওসি মো: ফারুক বলেন, নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নদী পথ সুরক্ষা রাখার জন্য নৌ- পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদীতে কিছু অসাধু জেলে তারা অবৈধ জালদিয়ে মাছ ধরে মাছের বংশ নিরবংশ করে থাকেন। তাদের জালগুলো ধরলে তারা এই ধরণের মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়ান। আর কোন পুলিশ সদস্য যদি জাল ধরে বিক্রি করে দেয় এমন প্রমান মিললে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
নৌপুলিশের এই চাঁদাবাজীর কারণে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে মেঘনা পাড়ের হাজারো জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তারা নৌপুলিশের হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

চবিতে ক্যাব যুব গ্রুপ চবি ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’র যৌথ অভিযান ৩ টি দোকানে জরিমানা ৩১ হাজার টাকা।।

নৌপুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভোলার জেলেদের হয়রানি অভিযোগ উঠেছে

আপডেট সময় : 11:56:50 pm, Sunday, 14 November 2021

হোসাইন রুবেল ভোলা।।

 মেহেন্দিগঞ্জের কালিগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে ভোলার জেলেদের হয়রানি করে আটকে রাখা, বৈধ জালকে অবৈধ বলে উঠিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয়া, মাসিক চাঁদা আদায় করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। নৌপুলিশের এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলেরা প্রতিবাদ করলে তাদের নদীতে মাছ ধরতে দিবেনা বলে কালিগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ির মাঝিদের দিয়ে ভোলার সীমানার জেলেদের হুমকি প্রদান করা হয়। এমনকি জলদস্যু বলে বন্দুকযুদ্ধে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি প্রদান করা হয় বলে জেলেরা অভিযোগ করেন। তবে এব্যাপারে কালিগঞ্জ নৌথানার ওসি মো: ফারুক বলেন, নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নদী পথ সুরক্ষা রাখার জন্য নৌ-পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদীতে কিছু অসাধু জেলে তারা অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরে মাছের বংশ নিরবংশ করে থাকেন। তাদের জালগুলো ধরলে তারা এই ধরণের মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়ান।
সরকার নদীতে জেলেদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন জায়গায় নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করেছেন। কিন্তু জেলেদের নিরাপত্তার বদলে ভোলার জেলেদের কাছে মেহেন্দিগঞ্জের কালিগঞ্জ নৌপুলিশ যেন মূর্তিমান আতংকের নাম। জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে নামলে কালিগঞ্জ নৌপুলিশ ভোলা সীমানায় প্রবেশ করে জেলেদের জাল নিয়ে আটকে রেখে মোটা অংকের টাকা আদায় করা। কখনও জেলে ও জাল উভয় আটকে রাখা, মাসিক চাদাঁ আদায় করাসহ নানানভাবে জেলেদের হয়রানী করে যাচ্ছেন এই নৌপুলিশ টিম। এমন অভিযোগ এনে জেলেরা সাংবাদিকদের এই হয়রানির কথা জানান। জেলেরা বলছেন এইভাবে প্রতিনিয়ত নৌ-পুলিশ ধারা হয়রানি হলে নদীতে জেলেদের মাছ শিকার বন্ধ করে দিতে হবে।
নিরীহ জেলে মোঃ সবুজ বলেন, আমরা নদীতে যাইয়্যা বৈধ জাল বাইতেছি। জাল ফালাইছি, আমাদের ভোলার আওতার ভিতরে জাল ফালাইয়্যা বইয়্যা রইছি। হেরা আইছে (নৌপুলিশ), আইয়া আমাগো লগে কথা নাই বাতি নাই, আমাদের জাল ধইর‌্যা জাল টানা ধরছে, জাল টাইন্না নৌপুলিশে জাল নিয়া গেছে। জাল নিয়া যাওয়ার পর আমাগোরে বললো তোমরা টাকা পয়সা নিয়া আসো, তোমাদের জাল দিয়া দিমু। আমরা টাকা পয়সা নিয়ে গেছি। হেরা আমাগোরে ঘুরাইয়া রাইতের ১১টা পর্যন্ত রাখলো। রাইতের ১১টা পর্যন্ত বওইয়্যা রাইখ্যা কোন জালপাল দিলো না। জাল চাইলে আমাদেরকে হুমকী দেয়।
সবুজ আরও বলেন, নৌপুলিশ দিছে সরকার গাঙ্গে নিরাপত্তার জন্য, আমরা বাই বৈধ জাল, সরকার অভিযান দেয়, আমরা অভিযান পালন করি। অভিযান পালন করে এখন কোন অভিযান নাই, আমাগো সান্দি জাল হল বৈধ। এখন আমরা মাছ ধরতাছি। এখন সরকার যদি নৌপুলিশ আমাদের নিরাপত্তার জন্য দিয়া,নৌপুলিশ যদি ডাকাতি করে গাঙ্গে,তাহলে তো আমরা নদীতে মাছ ধরতে পারুম না। নৌপুলিশের হাত থেকে কিভাবে বাচঁতে পারি সে জন্য সরকারের কাছে আমাদের আবেদন।
মেঘনার নদীতে ২৬ বছর ধরে মাছ ধরে আসছেন জেলে মহাসিন। তিনি বলেন, নদীতে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে সরকার পুলিশের মধ্যে থেকে নৌপুলিশ নামে একটি পৃথক বাহিনী করে দিয়েছে। এই বাহিনীর কাজ হলো নদীতে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমন করা। নদীতে মাছ শিকার করতে গেলে জেলা জলদস্যু, ডাকাতের হামলার শিকারসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। জেলেদেরকে এসব সমস্যা থেকে সুরক্ষিত রাখাই হলো নৌপুলিশের কাজ। সেই রক্ষকই যখন ভক্ষক! নৌপুলিশই এখন ডাকাতের ভূমিকা পালন করছে এমন অভিযোগ নিরীহ জেলেদের। অসাধু নৌপুলিশ কর্মকর্তাদের হয়রানী ও অত্যাচারের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মেঘনা-তেঁতুলিয়ার জেলেরা। নদীতে অভিযান না থাকলেও জেলের বৈধ জাল তুলে আনা, তাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী, চোর-ডাকাত কিংবা সন্ত্রাসী আখ্যাসহ বিভিন্নভাবে নিরীহ জেলেদেরকে হয়রানী করছে নৌপুলিশ সদস্যরা।
নাম না প্রকাশ শর্তে একাধিক জেলে অভিযোগ করে বলেন, জেলেরা যখন নদীতে বৈধ জাল ফেলে মাছ শিকার করতে যায় হঠাৎ কিছু নৌপুলিশ সদস্য ও তাদের সোর্স এসে জাল অবৈধ বলে নিয়ে যায়। নিরীহ জেলেরা তাদের ভয়ে তখন কিছু বলতে সাহস পাই না। জাল নিয়ে যাওয়ার পর সোর্সের মাধ্যমে জেলেদেরকে নৌপুলিশ সদস্যদের সাথে দেখা করতে বলে। জেলেরা যখন তাদের কাছে যায়, তখন জাল ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দাবী করে নৌপুলিশ। জেলেরা তখন নিরুপায় হয়ে ধারদেনা করে নৌপুলিশের চাহিদা মতো টাকা জোগার করে জাল ছাড়িয়ে আনে। টাকা দিতে না পরলে অসহায় জেলেদের জালগুলো অন্য যায়গায় বিক্রি করে দেয়। কিছু সময় জাল পুড়েও ফেলে নৌপুলিশ সদস্যরা। এতে একদিকে যেমন জেলেরা শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অন্যদিকে মহাজনের দাদনের টাকা কাধে নিয়ে ও সংসারের দুচিন্তায় দিন কাটাতে হয়।
তবে এব্যাপারে কালিগঞ্জ নৌ থানার ওসি মো: ফারুক বলেন, নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নদী পথ সুরক্ষা রাখার জন্য নৌ- পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদীতে কিছু অসাধু জেলে তারা অবৈধ জালদিয়ে মাছ ধরে মাছের বংশ নিরবংশ করে থাকেন। তাদের জালগুলো ধরলে তারা এই ধরণের মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়ান। আর কোন পুলিশ সদস্য যদি জাল ধরে বিক্রি করে দেয় এমন প্রমান মিললে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
নৌপুলিশের এই চাঁদাবাজীর কারণে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে মেঘনা পাড়ের হাজারো জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তারা নৌপুলিশের হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।