আবু তালেব
লালপুর -নাটোর- প্রতিনিধি।।
আখের দাম বাড়ায় পাল্টে গেছে নাটোরের দুটি চিনিকলের লোকসানি চিত্র। টানা ১৫ বছর পর গত মৌসুমে একটি চিনিকল মুনাফা করেছে ২০ কোটি টাকা। অপরটি লোকসান কমিয়েছে ৬ কোটি। গত ৩ বছরে প্রতিমণ আখের দাম ১২০ টাকা বাড়ানোর কারণে এই সুফল মিলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থবেঙ্গল চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু হয়েছে গত ১৫ নভেম্বর। আর সদর উপজেলার নাটোর চিনিকলে শুরু হবে ২৯ নভেম্বর। তাই এই চিনিকলে চলছে শেষ মুহূর্তের মেরামতের কাজ।
আখ সংকটের কারণে গত ১৫ বছর টানা লোকসান গুনেছে চিনিকল দুইটি। তবে গত মৌসুমে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৪ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১০ হাজার ৬৬৭ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের মাধ্যমে ২০ কোটি লাভ করেছে নর্থবেঙ্গল চিনিকল। আর নাটোর চিনিকল প্রায় ৬৯ হাজার ৮৪৪ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ২১৫ টন চিনি উৎপাদনের মাধ্যমে লোকসান কমিয়েছে ৬ কোটি টাকা।
গত মৌসুমের চেয়ে এবার নাটোরে জেলায় আখের উৎপাদন বাড়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। নর্থবেঙ্গল চিনিকল ২ লাখ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি এবং নাটোর চিনিকল ৯০ হাজার মেট্রিক টন ৬ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন- আখের দাম বাড়ায় চাষিদের মধ্যে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। পর্যাপ্ত আখের সরবরাহ পেলে আসছে মৌসুমে নাটোর চিনিকল লাভের মুখ দেখবে।
কৃষকরা বলছেন, টানা ৩ বছর জেলার দুইটি চিনকল কর্তৃপক্ষ প্রতিমণ আখের দাম ১২০ টাকা বাড়িয়েছে। বর্তমানে তারা বিক্রি করছেন ২৪০ টাকায়। আগে আখের দাম পাওয়ারও নিশ্চয়তা ছিল না।
একদিকে আখের দাম বৃদ্ধি অন্যদিকে নগদ টাকায় বিক্রি করার সুযোগ মেলায় নিজেরা গুড় উৎপাদন না করে চিনিকলে আখ সরবরাহ করছেন। কৃষকরা বলেন, আখের দাম মণপ্রতি ১০০-১২০ টাকা বেড়েছে। মিলে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। এতে আখ চাষে লাভ বেশি হচ্ছে।
এদিকে চিনিকল বাঁচাতে স্থানীয় প্রশাসনও নিয়েছে কঠোর অবস্থান। দুইটি চিনিকল জোনে চাষ করা আখ থেকে গুড় উৎপাদন করতে দেয়া হবে না। তা নিশ্চিত করতে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাছুদুর রহমান বলেন, গতবছরের মতো এবারও অবৈধভাবে আখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করতে দেয়া হবে না। এজন্য চিনিকল ভিত্তিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য- নাটোরের দুইটি চিনিকল জোন এলাকায় চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।