মোঃ মনির মন্ডল সাভার।।
আশুলিয়ার কান্দাইল এলাকায় আমেরিকান প্রবাসী সাবিহা সুলতানার বাড়িতে প্রায় ১০ বছর ধরে কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন রাজন ঢালী। বাড়িতে মালিক না থাকার সুযোগে ৩০ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান তিনি ও তার স্ত্রী। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সেই দম্পতিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার -১৯ নভেম্বর- দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার -সাভার সার্কেল- শাহীনুর কবির। এর আগে- সোমবার -১৮ নভেম্বর- শরীয়তপুরের সখিপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেন আশুলিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চর ফেলিজ মাদবরকান্দি গ্রামের রাজন ঢালী, তার স্ত্রী মোসা. মরিয়ম বেগম ওরফে ডলি- মো. হায়াতুল্লাহ মান ও মোহাম্মদ আলী।
থানা পুলিশ জানায়- ৫ অক্টোবর আশুলিয়ার কান্দাইল এলাকায় সাবিহা সুলতানার ফ্ল্যাটে চুরি করে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যান রাজন ঢালী এবং তার স্ত্রী। পরে বাড়ির ভাড়াটিয়ারা দেখতে পেয়ে আগুন নেভায় ও বাড়ির মালিককে খবর দেন। ঘটনার সময় সাবিহা বাড়িতে ছিলেন না। পরে ১৮ অক্টোবর আশুলিয়া থানায় মামলা করা হয়। মামলার পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে পুলিশ। একপর্যায়ে রাজনের শ্বশুর বাড়ি শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার চর ফেলিজ মাদবরকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজনের স্ত্রী, শ্বশুর ও শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাশের বকাউলকান্দি গ্রাম থেকে রাজন ঢালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দেখিয়ে দেওয়া স্থান থেকে ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ও চার ভরি চার আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক -এসআই- হারুনুর রশিদ বলেন- আসামিরা ওই বাড়িতে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন। গত ৫ অক্টোবর বাড়ির মালিকের আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে এলে মালিক পাশের বাসায় রাতযাপন করেন। এই সুযোগে কেয়ারটেকার ও তার স্ত্রী সহযোগীদের পরামর্শে বাড়ি থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ ৩০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। এসব টাকা পুড়ে গেছে প্রমাণ করতে কক্ষে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পালিয়ে যান তারা। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, আসামিরা প্রথমে বাড়ি টার্গেট করে কেয়ারটেকার বা ম্যানেজার হিসেবে কাজ নেন। সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করে বাড়ির মালিকের বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করেন তারা। মালিক বিশ্বাস করলে সুযোগ বুঝে বাড়িতে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে পালিয়ে যান তারা। অপরাধ আড়াল করতে কেরোসিন ঢেলে ঘরে আগুনও লাগিয়ে দেন তারা। এ ঘটনায় দুর্গম চরে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন। বাকি টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।