মোঃ সৌরভ হোসাইন (সবুজ)
স্টাফ রিপোর্টার সিরাজগঞ্জ।।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর শহরের সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন যানবাহন থেকে জোড়পূর্বক পৌর টোল আদায় করা হচ্ছে। কোন যানবাহন চালক এই টোল না দিলে তার উপর চালানো হচ্ছে নিযার্তন। প্রকাশ্য দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মকান্ড চললেও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। এ নিয়ে যানবাহন চালক ও মালিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
তাড়াশ পৌর শহরে যে কোন ধরনের যানবাহন প্রবেশ করলেই প্রতিদিন দিতে হচ্ছে পৌর টোলের নামে চাঁদা। ভ্যান,রিক্সা থেকে শুরু করে কোন যানবাহনই চাঁদা না দিয়ে পৌর শহরে প্রবেশ এবং বের হতে পারছে না। যানবাহন ভেদে ১০ টাকা থেকে বিভিন্ন অঙ্কে এ চাঁদা তোলা হচ্ছে। পৌরসভা এলাকায় অন্তত ৪টি পয়েন্ট থেকে এভাবে লোকদিয়ে যানবাহন থেকে পৌর টোলের নামে টোকেন দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আদিবা মৎস্য খামার নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পৌরসভা থেকে টেন্ডার নিয়ে বিভিন্ন স্পট থেকে এই চাঁদা আদায় করছে।
গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো.আব্দুর রহমান ১২৬৬ নং স্মরকে সকল সিটি কপোর্রেশন এবং পৌরসভার মেয়রদের টার্মিনাল ব্যতিত কোন সকড় মহাসড়ক থেকে টোল আদায় না করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। মাননীয় হাইকোর্টে বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন নং ৪৬৪০/২০২২ এর গত ২১-০৪-২০২২ খ্রিঃ তারিখের আদেশর আলোকে ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু তাড়াশ পৌরশহরে তা অমান্য করে প্রতিদিন সকল ধরনের যানবাহন থেকে পৌর টোলের নামে টোকেন দিয়ে বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রকাশ্য যানবাহন থেকে টোকেন দিয়ে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদার টাকা না দিলেই যানবাহন চালকদের মারধর সহ লাঞ্ছিত করছে প্রতিনিয়িত। তাড়াশের বিভিন্ন যানবাহন চালকদের সাথে এ নিয়ে কথা হলে তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,আমরা কষ্ট করে যানবাহন চালিয়ে আয় করি। আর তারা আমাদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে। ইনকাম হোক বা না হোক তাদের চাঁদা দেয়া বাধ্যতামূলক। তাড়াশ সিএনজি অটোরিক্সা গ্যারেজের চেইন মাষ্টার হাবিবুর রহমান তুফান জানান,তাড়াশে দেড় শতাধিক সিএনজি অটোরিক্সা রয়েছে। প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। বাইরের সিএনজি অটোরিক্সা আসলে তাদের থেকে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়।
তাড়াশ পৌর এলাকার বিভিন্ন স্পট থেকে টোল আদায়ের কথা স্বীকার করে আদিবা মৎস্য খামারের মালিক মাসুদ রানা জানান,আমি পৌরসভা থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকায় এক বছরের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঠিকাদার নিয়োজিত হয়েছি। পৌরসভার আমাকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কিছুই বলেনি। তাই নিয়ম অনূযার্য়ী টোল আদায় করে যাচ্ছি।
তাড়াশ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকতা মো.মেসবাউল করিম তার কাযার্লয়ে গিয়ে নিষেধাজ্ঞার পর কেন পৌর এলাকায় যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে প্রশ্ন করা হলে তিনি তাৎক্ষনিক পৌর নিবার্হী কর্মকতাকে চাঁদা তোলা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তবে পৌর নিবার্হী কর্মকতা তা পালন না করে চলতি বছর পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মো.মাহবুবর রহমানের দৃষ্টি আকর্শন করা হলে তিনি জানান,খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তাড়াশের বিভিন্ন যানবাহন চালক ও মালিকরা দ্রুত পৌর টোলের নামে চাঁদাবাজী বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।