
তৌহিদুল ইসলাম চঞ্চল, বিশেষ প্রতিনিধি
লালমনিরহাটে সদর থানা পুলিশের অভিযানে হেরোইনসহ ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম-২৭- গ্রেপ্তার হন।
অপরদিকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার –ডিবি- বিশেষ অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা মো. মোশাররফ হোসেন মামুন -৩২- ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম রকি -৩২- গ্রেপ্তার হয়েছেন।
শুক্রবার – ১১ এপ্রিল- রাত আনুমানিক ১১ টায় তাদেরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাটের এসপি মো. তরিকুল ইসলাম ও সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নূরনবী।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রদল নেতা রবিউল সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খোড়াগাছ গ্রামের আফসার আলী মণ্ডলের ছেলে। তিনি পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি।
ছাত্রলীগ নেতা মামুন জেলা শহরের জুম্মাপাড়া এলাকার মো. নূর ইসলামের ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের লালমনিরহাট জেলা শাখার সহ-সভাপতি।
স্বেচ্ছাসেবকলীগের কর্মী রকি জুম্মাপাড়া এলাকার মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লালমনিরহাট পৌর শাখার সাবেক জয়েন্ট সেক্রেটারি। বর্তমানে তিনি স্বেচ্ছাসেবকলীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার সদস্য।
রবিউলের গ্রেপ্তারের বিষয়ে সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নূরনবী বলেন, “শুক্রবার বিকেলে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ উপ-পরিদর্শক আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে একটি দল পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খোড়াগাছ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন । সে সময় ওই এলাকার একটি পুকুরের উপর অবস্থিত টিনের চালায় কয়েকজন ব্যক্তি মাদক সেবন করছিলেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ২-৩ জন পালিয়ে গেলেও রবিউল আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘটনাস্থলে তার ফেলে দেয়া ৮ পুড়িয়া হেরোইন এবং হেরোইন সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।“
এদিকে ছাত্রদল নেতা রবিউল গ্রেপ্তারের বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হুদা লিমন জানান, পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল হেরোইনসহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানার পর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রবিউলকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গির আলম।
অন্যদিকে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার রাত ৭ঃ৩০ মিনিটে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডিবির একটি দল। সে সময় কুলাঘাট বাজার এলাকা থেকে মামুন ও রকিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আ. লীগ সরকারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণার অভিযোগ রয়েছে।
জনশ্রুতি আছে যে, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন তদবিরের কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে একই দিন দুপুরে আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউপির খাতাপাড়া মাজার থেকে সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. এরশাদুল করিম রাজুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পৃথক একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাজুর বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তিনি ২০১৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাবেক এমপি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের পিএস থাকা অবস্থায় তার সহযোগী হিসেবে চাকুরী দেয়ার নামে ঘুষবানিজ্য, টেন্ডারবাজি , বিভিন্ন তদবির, জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত অর্থ কাজ না করে লুটপাট, জমিদখল ইত্যাদি কাজে জড়িত ছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। গ্রেপ্তার রাজু জেলা শহরের তালুক খুটামারা এলাকার মৃত আজিজ আলমের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।