
মোঃ ওমর ফারুক, ভোলা।।
কোনো প্রকার উত্তাপ, উচ্ছাস ছাড়াই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সম্পন্ন হয়েছে আসন্ন ভোলা জেলা পরিষদের নির্বাচন। এ নিরুত্তাপ ভোট নিয়ে ভোলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ও ভোটারদের মধ্যে কোন উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ করা যায়নি। ভোটের আগেই ভোট ছাড়া চেয়ারম্যানসহ সবাই জয়ী হয়েছেন।
গত রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে জেলা রিটার্ণিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী তাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন, গত দুই বারের চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য খাদিজা আকতার স্বপ্না (ভোলা সদর), ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাবিনা ইয়াসমিন, (লালমোহন), ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কামরুন নাহার (মনপুরা), ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য নজরুল ইসলাম গোলদার (ভোলা সদর), ২ নম্বর ওয়ার্ডে মোঃ খায়রুল হাসান খোকন (দৌলতখান), ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নুরুল আমিন নিরব মিয়া (বোরহানউদ্দিন), ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোঃ হাসান (তজুমদ্দিন), ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ারুল ইসলাম রিপন (লালমোহন), ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মোঃ নুরুল ইসলাম (চরফ্যাশন) ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাধরণ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এ,কে,এম শাহজাহান (মনপুরা)। নির্বাচিতরা সকলেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদের নেতাকর্মী। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা রোববার রিটার্ণিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ ভোটার আওয়ামীলীগ দলীয় জনপ্রতিনিধিরা এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অনেক ভোটার বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতামূলক ছাড়া বিজয়ী হওয়ার মধ্যে কোন তৃপ্তি নেই।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মিঠু চৌধুরী বলেন, যেহেতু জেলা পরিষদ নির্বাচনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছিল না। সূতরাং বিজয়ীদের অভিনন্দন জানানো ছাড়া আর কি করার আছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন সরদার বলেন, আমি যেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে সাধারণ ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। সেই ভোটে জয়ী হওয়ার মধ্যে একটা তৃপ্তি ছিল। তেমনি আমিও চাই সবক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন। যদিও জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোন প্রার্থী ছিল না। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবাই নির্বাচিত হয়েছেন। তবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মধ্যে একটা তৃপ্তি আছে। সেই তৃপ্তিটা কিন্তু আলাদা। জেলা পরিষদ নির্বাচনে যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নেই সেহেতু এখানে তৃপ্তি বলতে কোন শব্দ নেই। উৎসবও নেই। আমরা সবসময়ই চাই একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন।
ভোলা জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবির সোপান বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশে আমরা জেলা পরিষদে অংশ নেইনি। তিনি আরও বলেন, শুধু জেলা পরিষদ নয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া জাতীয় নির্বাচনেও অংশ নেবেনা বিএনপি। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় উৎসব মুখর পরিবেশ ছিলনা।
ভোলা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক ভোলার বাণী’কে জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর ভোলা জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় ১১ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।