ইসমাইল আরাফাত
গাজীপুর প্রতিনিধি।।
বিএনপির তানভীর সিরাজের আতঙ্কে গাজীপুর গার্মেন্টস মালিক সমিতি গাজীপুরে ঝুট ব্যবসায় আতঙ্ক তানভীর সিরাজ বিএনপির সুনাম বিনষ্ট করে তানভীর সিরাজের অপকর্ম বিএনপি নেতা তানভীর সিরাজ গাজীপুরের টক অফ দ্যা টাউন বিএনপি নেতা তানভীর সিরাজকে বহিষ্কারের গুঞ্জন
গাজীপুর মহানগরীর সকল এলাকায় গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা গড়ে উঠে শিল্প নগরীতে পরিনত হয়ে দেশের বেকারত্বের হার যেমন কমেছে তেমনি এখানকার তৈরি পোশাক ও অন্যান্য দ্রব্যাদী বিদেশে রপ্তানি করে আমরা অর্জন করছি বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু এক শ্রেণীর সন্ত্রাসী- চাঁদাবাজ ও অস্ত্রধারীদের হাতে জিম্মি হয়ে রয়েছে অনেক শিল্প কারখানা ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি। বিএনপির একজন কথিত নেতা জনাব তানভীর সিরাজের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে গাজীপুর নগরীর অনেক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিকগণ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরের বাসন থানাধীন বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ একক আধিপত্য বিস্তার করে ঝুট ব্যবসায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। তানভীর সিরাজের আতঙ্কে ভীত হয়ে পড়েছেন গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিক ও কর্মকর্তারা। তার ভয় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। যখন যে গার্মেন্টসে প্রয়োজন অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন গার্মেন্টস এর পরিত্যক্ত ঝুট।
খোঁজ নিয়ে জান যায়, বিএনপি’র দুঃসময়ে ২০০৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দলীয় কোন কর্মসূচি তাকে দেখা যায়নি তানভীর সিরাজকে। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে তিনি কাউন্সিলর নির্বাচন করেছেন। অদৃশ্য কোনো কারণে তিনি বাসন থানার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে, সন্ত্রাসের মাধ্যমে একক সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন। গত ০৯-০৯-২০২৪ তারিখে বাসন থানাধীন ইসলামপুরে ওশান ফ্যাক্টরিতে শতাধিক সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে জোরপূর্বক ছয় গাড়ি ঝুট ফ্যাক্টরি থেকে বের করে নিয়ে যান। জোরপূর্বক অনেক ফ্যাক্টরি থেকে ঝুট বের করেছেন এর মধ্যে নরপ, রেনেসাঁ, জেনেছিস, ম্যানাল ফ্যাশন, নিডেল ড্রপ, আর এম ফ্যাশন, টার্গেট প্যাকেজিং লিমিটেড, জিসান বক্স, কারলোস লেদার ফ্যাশন, কিং বালি গার্মেন্ট, ওরাম সোয়েটার, রিদিশা অন্যতম। তার আতঙ্কে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না শতাধিক ফ্যাক্টরি, গার্মেন্টসের মালিক কর্মচারীবৃন্দ। তিনি এই ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটির মধ্যে যাদের নাম আছে তারা হলেন মোঃ সিরাজ, সাবেক সদস্য গাজীপুর মহানগর বিএনপি, তাজুল ইসলাম, মজিদ তালুকদার- সভাপতি ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির, আবুল হোসেন সাধারণ সম্পাদক ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি, আমজাদ হোসেন, খোরশেদ আলমসহ প্রায় শতাধিক ক্যাডার বাহিনী।
তানভীর সিরাজ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও দখলে নিয়েছেন নাওজুর বাজার, আড্ডা বাজার, চৌরাস্তা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা। আর এই বাজার থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে তার লোকজন। তার ছেলে আমানত সিরাজ এলাকার ইন্টারনেট ও ডিস ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করেন। উক্ত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে তার সন্ত্রাসী বাহিনীদের নিয়ন্ত্রণ করে তার ছোট ভাই আওয়ামীলীগ নেতা তসলিম সিরাজ। আরো জানা যায়, আওয়ামীলীগের পদধারী নেতা ও সন্ত্রাসী বাহিনীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন এবং তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দখল করছেন এই তানভীর সিরাজ।
তানভীর সিরাজের বাসায় প্রতিদিন বিকেল বেলায় সকল অবৈধ অর্থ সন্ত্রাসী বাহিনীদের মাঝে বন্টন করা হয়। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন গার্মেন্টস মালিক বলেন- আমরা তানভীর সিরাজের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি। তানভীর যখন যে গার্মেন্টসে খুশি, নিজের মতো করে ঢুকে অস্ত্রের মহড়া দেখিয়ে ঝুট নিয়ে চলে যায়। কিন্তু আমরা প্রাণের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাই না। কারণ তানভীরের আছে শক্তিশালী সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী।
বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ নুরু হাজী হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন তানবীর সিরাজ। পরবর্তীতে বিভিন্ন তদবির করে তিনি ছাড়া পেয়ে যান। দেশের এই ক্লান্তি লগ্নে তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে বিএনপি’র সুনাম বিনষ্ট হচ্ছে। তানভীর সিরাজের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিজ্ঞ মহল ও গাজীপুর এলাকাবাসী। তারা তানভীর সিরাজের বহিষ্কার দাবী করছেন।।
এ বিষয়ে তানভীর সিরাজকে ফোন ফোন করা হলে তিনি বলেন- আমি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। ঝুট ব্যবসার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমি পরপর দুইবারের সফল কাউন্সিলর। এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল নিজের স্বার্থ ও ক্ষমতা দখলের লোভে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।