মোঃ মাসুদ রানা মনি
রামগঞ্জ লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বিদ্যালয়ে না এসে বেতনভাতা উত্তোলন- অন্য শিক্ষকদের বিভিন্ন অজুহাতে কোনঠাসা ও সরকারি বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতর্কিত সে-ই প্রধান শিক্ষক হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরীকে বদলি করা হলো লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার নছরউদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
আজ সোমবার -১৫ জুলাই- বিকালে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর সরকারি মাধ্যমিক শাখা ৩৭.০২০০০০.১০৬.১৯.০০২.২২.৬৬৭ স্মারকে তাকে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে বিমুক্তি ও যোগদান পূর্বক প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
জানা যায় রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ে তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন। শুধু তাই নয় উনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আরো তিনজন শিক্ষকও বিদ্যালয়ে ঠিকমতো ক্লাশ করেন না। অসুস্থতার অজুহাতে ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না।
অথচ সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন, বেতনভাতা উত্তোলন করছেন।
বিষয়টি নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোছা. শারমিন ইসলাম চলতি মাসের ৪ ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার একই মাসের ১০ জুলাই সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান তিনি আগে যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিলেন- সেখানকার কয়েকটি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির দায়ে তাকে সিলেটের স্বনামধন্য কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে রামগঞ্জ উপজেলার রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে (রামগঞ্জ মধুপুর ইউনিয়ন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) বদলি করা হয়।
যা দৈনিক সমকাল- ডেইলি ম্যাসেঞ্জার- আই নিউজ- সুনামগঞ্জের খবর- সুনাম কণ্ঠ নামের কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো। রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পরও থেমে নেই তার হম্বিতম্বি।
তিনি বিভিন্ন সময়ে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী ও সাংবাদিকদের নিয়ে ফেসবুকে কটাক্ষ বিভিন্ন আপত্তিকর পোষ্ট দিয়েছেন। এলাকাবাসীকে চোর সাব্যস্ত করেও ফেসবুকে পোষ্ট করছেন বিতর্কিত এই প্রধান শিক্ষক।
আগাম স্বাক্ষর দিয়ে তুলেছেন মাসিক বেতন। এতে বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক এহেন অনিয়মে উনাকে সহযোগিতা করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কেউ কেউ মনে করছেন উক্ত বিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষক- যিনি গত ২৬- ২৭ বছর অত্র বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অজুহাতে প্রধান শিক্ষককে কৌশলে বিতাড়িত করে বা অনুপস্থিত রেখে নিজেই চতুর্থ স্থানের সহকারী শিক্ষক থাকার পরও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিজের কাঁধে স্বেচ্ছায় তুলে নেন।
লুটপাট চালান সরকারি তহবিল- বিজ্ঞানাগার ও সরকারী কম্পিউটার ল্যাবের মালামাল শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে না দিয়ে রেখেছেন তালাবদ্ধ। কোনভাবে তিনি এখান থেকে বদলি হতে রাজি নন। মাঝখানে একবার বদলি হলেও অজ্ঞাত কারনে তিনি আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী যোগদানের আগে একজন নারী প্রধান শিক্ষক ঢাকা থেকে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। মাত্র কয়েকমাসের কঠোর পরিশ্রমে সর্বশেষ -২০২৪ই- সনের এসএসসি পরিক্ষায় -১৪জন এ প্লাস- পেয়েছে। দুই যুগের বেশি সময়ের পর উক্ত বিদ্যালয়ের ফলাফল সন্তোষজনক। অভিভাবকদের বাহবা পেয়েছেন শিক্ষকগণ।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা -রাসউবিয়ান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন- ঈদ উল আযহার পরদিন জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিলেও বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কৃতি শিক্ষার্থীদের জন্য নেয়া হয়নি কোন সংবর্ধনার।
এ ব্যপারে প্রধান শিক্ষক -সদ্য বদলিকৃত- হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী জানান- আমি অসুস্থ্য তাই বিদ্যালয়ে আসতে পারিনি। তাছাড়া আমি শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ছুটির দরখাস্ত দিয়েছি।
উপজেলা -মাধ্যমিক- একাডেমিক সুপারভাইজার শরিফুল্লাহ আস শামস জানান- আমরা উনার ছুটির দরখাস্ত কোন দপ্তরে পাইনি।
সরেজমিনে তদন্ত করে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা না পেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।