
সোহানুর রহমান বাপ্পি
বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে দানের টাকার অঙ্ক দিন দিন বাড়ছে। এই মসজিদের ১১টি লোহার দানসিন্দুক প্রতি তিন মাস পর পর খোলা হয়, আর প্রতিবারই মেলে কোটি কোটি টাকা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
আজ শনিবার -১২ এপ্রিল- সকালে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এবং প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের নিচতলার বিভিন্ন স্থানে থাকা দানসিন্দুকগুলো খোলা হয়। এরপর ২৮ বস্তা ভর্তি টাকা দ্বিতীয় তলায় নেওয়া হয় এবং শুরু হয় গণনার কাজ।
টাকা গণনায় অংশ নেন রূপালী ব্যাংকের ৭০ জন কর্মী, পাগলা মসজিদ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৭০ জন মানুষ। পুরো দিন জুড়ে চলে গণনার কাজ, যার নিরাপত্তায় মোতায়েন ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, মসজিদের দানসিন্দুক থেকে পাওয়া অর্থ থেকে পরিচালনা ব্যয়, এতিমখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদানের পরও বর্তমানে ব্যাংকে জমা রয়েছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, এই টাকায় শিগগিরই প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এতে থাকছে একটি আধুনিক বহুতল ভবন, ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র এবং ধর্মীয় শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
পাগলা মসজিদের ইতিহাস-
জনশ্রুতি আছে, নরসুন্দা নদীর চরের ওপর এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের সাধনক্ষেত্রে এই মসজিদ নির্মিত হয়। সেই সাধকের নামে পরবর্তীতে মসজিদটির নাম হয় ‘পাগলা মসজিদ’। এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয় – এমন বিশ্বাস থেকে মুসলিম তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও দান করে থাকেন।
গত কয়েক বছরে দানের পরিমাণ চোখে পড়ার মতো বেড়েছে, যা মসজিদটিকে দেশের অন্যতম ধনী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।