Dhaka , Sunday, 8 September 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
সাভার আশুলিয়ায় ও গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে পোশাক কারখানায় অস্থিরতার নেপথ্যে কী।। সাভার আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ আহত ৫ জন।। চাঁপাইনবাবগঞ্জ -৫৩ বিজিবি- অভিযানে  ২ জন আসামীসহ ১৫৯ বোতল  ফেন্সিডিল ও ১টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা আটক।। সেই গুলি বিদ্ধ অব্দুল্লা আল কাফি মিঠুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন  ডাঃ রাজন।। কালিয়াকৈরে শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদের ও আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যা মামলা।। রূপগঞ্জে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা- শিশু সন্তানকে কুপিয়ে যখম।। বিলমাড়ীয়া বাজার কমিটির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে মাসুদ সভাপতি মোমিন সম্পাদক  নির্বাচিত।। নোয়াখালীর কবিরহাটে ইমাম মুয়াজ্জিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত।। বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম চিরকুট লিখে স্কুল শিক্ষকের আত্মহত্যা।। গাজী লাশের রাজনীতি করেছে আমরা উন্নয়নের রাজনীতি করবো- দিপু ভুঁইয়া।। হোমনায়  চাঞ্চল্যকর ৩ খুনের আসামী আক্তার  আটক।। সিলেট এমএজি ওসমানী  হাসপাতালে সিনিয়র নার্সিং অফিসার নজরুল ইসলাম বাবুলের বিদায় সংবর্ধনা।। বামনডাঙ্গা স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি নিয়ে অবরোধ।। বিতর্ক সৃষ্টি হয় এরূপ কোন কর্মে হাত দেওয়া হবে না- ধর্ম উপদেষ্টা।। সকল গায়েবী মামলা প্রত্যাহার করতে হবে- এরশাদ উল্লাহ।। বরিশালে শুরু হয়েছে অসমাপ্ত সড়ক ব্রীজের কাজ- মান নিয়ে সন্তুষ্টি এলাকাবাসীর।। ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকদলের বর্ধিত সভা- তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি।। চাঁপাইনবাবগঞ্জে যৌথ বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে অপহরণের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।। রূপগঞ্জে মাদক- সস্ত্রাস চাঁদাবাজ নৈরাজ্য ও দখলদারদের প্রতিহতে বিএনপির সভা- বিক্ষোভ।। রাজাপুরে যুবদলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।। গণধিকার পরিষদের আলোচনা সভা ও আনন্দ মিছিল।। রামগঞ্জ শাহ জকি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ফোরামের উপহার সামগ্রী বিতরণ।। ঝালকাঠিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা- আহত-৪।। ঝালকাঠিতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কুপিয়ে হত্যা।। দূর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের প্রতিবাদ।। রূপগঞ্জে গাজী টায়ারে ফের আগুন দিয়ে লুটপাট দুর্বৃত্তদের।। রূপগঞ্জে বিএনপির এক পক্ষের সমাবেশকে পন্ড করতে আরেক পক্ষের লোকজনের হামলা- ৮ জনকে কুপিয়ে জখম।। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল আওয়ামী লীগ ও দুর্নীতিবাজ মুক্ত করতে হবে।। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ  চাই।। রামগঞ্জে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে এক যুবকের মৃত্যু।।

দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই সকল পাচার হওয়া অর্থ -প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 05:04:48 am, Friday, 6 September 2024
  • 4 বার পড়া হয়েছে

দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই সকল পাচার হওয়া অর্থ -প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।।

মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ 
সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার।।
স্বৈরাচারের সময় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি- রাজনীতিবিদ ও আমলারা যে পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে তা দেশে ফিরিয়ে আনতে চান বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার -৫ সেপ্টেম্বর- ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের একমাস পূর্তি উপলক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এক বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেছেন- জুলাই এবং আগস্ট মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইব্যুনাল তৈরি করতে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খুনিদের প্রত্যর্পণ এবং স্বৈরাচারের সময় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও আমলারা যে পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে তা দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ শুরু করেছি।
তিনি বলেন- মাত্র একমাস হলো অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা বিপ্লবের প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। আমাদের প্রথম কাজ জুলাই ও আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করার জন্য আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা এদেশে এসেছেন এবং তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন- তোমরা তোমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নিয়েছিলে। শহর ও গ্রামীণ জনপদের দেয়ালে আঁকা তোমাদের স্বপ্নগুলো এখনো নানা রঙের সাজ নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বিপ্লবের সময়- তোমরা পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ঘুমহীন রাত কাটিয়েছ। দিনে নিষ্ঠুর শাসনকে প্রতিহত করার জন্য পরস্পরের থেকে চির বিদায় নিয়ে রাস্তায় নেমেছো। বিপ্লব শেষ হওয়ার পর তোমরা দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয় পাহারা দিয়েছো। সারাদেশে ট্রাফিক পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছো। আমি জানি তোমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই এখন সময় পড়াশোনায় ফেরার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। আমি তোমাদেরকে ক্লাস ও ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে আমাদের একটি সুশিক্ষিত ও দক্ষ প্রজন্মের দরকার।
বিপ্লবের সময় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হাজার হাজার মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করা প্রধান দায়িত্ব বলে মনে করছেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন- হাসিনার দুর্বৃত্তরা তাদের চোখ লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ায় অসংখ্য তরুণ শিক্ষার্থী দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করবো তাদের চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে। আমরা শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছি। মূল তালিকা হয়ে গেছে। এখন শুধু দূরদূরান্তে যাদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যগুলিতে পূর্ণাঙ্গতা দেওয়া হচ্ছে। আহত শত শত মানুষ যাদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন- তাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন এখন তৈরির শেষ পর্যায়ে আছে। যাদের শাহাদাতের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে আমরা তাদের কখনোই ভুলবো না।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমরা বলপূর্বক গুম থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন সনদে স্বাক্ষর করেছি। ফলে স্বৈরাচার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ‘গুম সংস্কৃতি’ এর সমাপ্তি ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। আলাদাভাবে- আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৫ বছরে বলপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করছি। যেসব পরিবার তাদের নিখোঁজ পিতা- স্বামী- পুত্র এবং ভাইদের পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে যন্ত্রণার সাথে অপেক্ষা করছেন, আমরা আপনাদের বেদনায় সমব্যথী। আয়না ঘরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা বলপূর্বক গুমের শিকার ভাইবোনদের কষ্ট ও যন্ত্রণা সম্পর্কে জানতে পারব।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন- গত মাসের শেষের দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া আমার ভাষণে আমাদের সরকার এ পর্যন্ত যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার গ্রহণ করেছে আমরা তার একটা প্রতিবেদন তুলে ধরেছি। আমরা রাজনৈতিক দল- সম্পাদক- ব্যবসায়ী নেতা- সুশীল সমাজের নেতা এবং কূটনীতিকদের সাথে ক্রমাগতভাবে বৈঠক করে যাচ্ছি। তারা আমাদের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করেছেন। আমরা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন পেয়ে অভিভূত হয়েছি। আমাদের সাহসী এবং দেশপ্রেমিক প্রবাসীরাও জাতি পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছেন। আমি তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন- আজ এই স্মৃতিময় বিষাদ দিনে আমি শহিদদের প্রতিটি পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের প্রতি জানাই অসীম কৃতজ্ঞতা। আমি সব শহীদ পরিবারের সদস্যদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানাবো- কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের সঙ্গে দেখা করব। আমি তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা কখনই শহীদদের স্বপ্নের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুঃশাসন ও স্বৈরাচার দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত পূরণ করা। এজন্য আমাদের প্রয়োজন একতা ও সমন্বয়।
প্রফেসর ইউনূস বলেন বলেন- শহীদদের রক্ত এবং আহত ভাইবোনদের আত্মত্যাগকে জাতি হিসেবে আমরা কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেবো না। যে সুযোগ তারা আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন সে সুযোগকে আমরা কখনো হাতছাড়া হতে দেবো না। আজ তাদের স্মৃতিময় দিনে আবারো প্রতিজ্ঞা করলাম তাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়বই।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

সাভার আশুলিয়ায় ও গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে পোশাক কারখানায় অস্থিরতার নেপথ্যে কী।।

দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই সকল পাচার হওয়া অর্থ -প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।।

আপডেট সময় : 05:04:48 am, Friday, 6 September 2024
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ 
সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার।।
স্বৈরাচারের সময় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি- রাজনীতিবিদ ও আমলারা যে পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে তা দেশে ফিরিয়ে আনতে চান বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার -৫ সেপ্টেম্বর- ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের একমাস পূর্তি উপলক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এক বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেছেন- জুলাই এবং আগস্ট মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইব্যুনাল তৈরি করতে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খুনিদের প্রত্যর্পণ এবং স্বৈরাচারের সময় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও আমলারা যে পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে তা দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ শুরু করেছি।
তিনি বলেন- মাত্র একমাস হলো অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা বিপ্লবের প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। আমাদের প্রথম কাজ জুলাই ও আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করার জন্য আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা এদেশে এসেছেন এবং তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন- তোমরা তোমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নিয়েছিলে। শহর ও গ্রামীণ জনপদের দেয়ালে আঁকা তোমাদের স্বপ্নগুলো এখনো নানা রঙের সাজ নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বিপ্লবের সময়- তোমরা পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ঘুমহীন রাত কাটিয়েছ। দিনে নিষ্ঠুর শাসনকে প্রতিহত করার জন্য পরস্পরের থেকে চির বিদায় নিয়ে রাস্তায় নেমেছো। বিপ্লব শেষ হওয়ার পর তোমরা দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয় পাহারা দিয়েছো। সারাদেশে ট্রাফিক পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছো। আমি জানি তোমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই এখন সময় পড়াশোনায় ফেরার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। আমি তোমাদেরকে ক্লাস ও ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে আমাদের একটি সুশিক্ষিত ও দক্ষ প্রজন্মের দরকার।
বিপ্লবের সময় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হাজার হাজার মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করা প্রধান দায়িত্ব বলে মনে করছেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন- হাসিনার দুর্বৃত্তরা তাদের চোখ লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ায় অসংখ্য তরুণ শিক্ষার্থী দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করবো তাদের চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে। আমরা শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছি। মূল তালিকা হয়ে গেছে। এখন শুধু দূরদূরান্তে যাদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যগুলিতে পূর্ণাঙ্গতা দেওয়া হচ্ছে। আহত শত শত মানুষ যাদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন- তাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন এখন তৈরির শেষ পর্যায়ে আছে। যাদের শাহাদাতের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে আমরা তাদের কখনোই ভুলবো না।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমরা বলপূর্বক গুম থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন সনদে স্বাক্ষর করেছি। ফলে স্বৈরাচার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ‘গুম সংস্কৃতি’ এর সমাপ্তি ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। আলাদাভাবে- আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৫ বছরে বলপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করছি। যেসব পরিবার তাদের নিখোঁজ পিতা- স্বামী- পুত্র এবং ভাইদের পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে যন্ত্রণার সাথে অপেক্ষা করছেন, আমরা আপনাদের বেদনায় সমব্যথী। আয়না ঘরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা বলপূর্বক গুমের শিকার ভাইবোনদের কষ্ট ও যন্ত্রণা সম্পর্কে জানতে পারব।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন- গত মাসের শেষের দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া আমার ভাষণে আমাদের সরকার এ পর্যন্ত যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার গ্রহণ করেছে আমরা তার একটা প্রতিবেদন তুলে ধরেছি। আমরা রাজনৈতিক দল- সম্পাদক- ব্যবসায়ী নেতা- সুশীল সমাজের নেতা এবং কূটনীতিকদের সাথে ক্রমাগতভাবে বৈঠক করে যাচ্ছি। তারা আমাদের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করেছেন। আমরা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন পেয়ে অভিভূত হয়েছি। আমাদের সাহসী এবং দেশপ্রেমিক প্রবাসীরাও জাতি পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছেন। আমি তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন- আজ এই স্মৃতিময় বিষাদ দিনে আমি শহিদদের প্রতিটি পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের প্রতি জানাই অসীম কৃতজ্ঞতা। আমি সব শহীদ পরিবারের সদস্যদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানাবো- কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের সঙ্গে দেখা করব। আমি তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা কখনই শহীদদের স্বপ্নের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুঃশাসন ও স্বৈরাচার দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত পূরণ করা। এজন্য আমাদের প্রয়োজন একতা ও সমন্বয়।
প্রফেসর ইউনূস বলেন বলেন- শহীদদের রক্ত এবং আহত ভাইবোনদের আত্মত্যাগকে জাতি হিসেবে আমরা কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেবো না। যে সুযোগ তারা আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন সে সুযোগকে আমরা কখনো হাতছাড়া হতে দেবো না। আজ তাদের স্মৃতিময় দিনে আবারো প্রতিজ্ঞা করলাম তাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়বই।