
সাইফ উল্লাহ, সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
সর্বদলীয় সম্প্রীতি উদ্যোগ দিরাই পিএফজির উদ্যোগে আসন্ন দূর্গাপুজা উপলক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে “নাগরিক সমাজের ভাবনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা” অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভা শেষে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আসন্ন দূর্গাপুজা উপলক্ষে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রখার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন পিএফজি নের্তৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার সকালে জালালসিটি কনফারেন্স রুমে দিরাই পিএফজির পিস এ্যাম্বাসেডর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সিরাজ-উদ-দৌল্লার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুর রহমান মামুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিরাই পৌর সভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায়, দিরাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহন চৌধুরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, দিরাই পিএফজির পিস এ্যাম্বাসেডর, সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট রিপা সিনহা, দিরািই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, দিরাই পিএফজির পিস এ্যাম্বাসেডর আব্দুর রশিদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, দিরাই পিএফজির পিস এ্যাম্বাসেডর গোলাপ মিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, দূর্গাপুজাকে শান্তিপূর্ণ করতে আমরা প্রশাসন ও জনগণ একসাথে কাজ করে যাচ্ছি। গতকালও আমরা সামাজি সম্প্রীতি সমাবেশ করেছি। আশাকরি এ এলাকার শতবছরের ঐতিহ্য অটুট থাকবে। তিনি বলেন, উৎসব মূখর পরিবেশে উদযাপিত হয় পুজা আবার ভাবগাম্ভির্জেল মধ্য দিয়ে পালিত হয় ঈদে মিলাদুনবী। যে খানে উৎসব মূখর পরিবেশ থাকে সেখানে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। তবে এব্যাপারে আমরা জিরোটলারেন্স। পুজার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি দিরাইয়ে এবার উৎসব মূখর পরিবেশে পুজা সম্পন্ন হবে। তিনি এব্যাপরে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
দিরাই প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি দিরাই পিএফজির পিস এ্যাম্বাসেডর সামছুল ইসলাম সরদার খেজুরের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন, দিরাই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার দাস, জগদল কলেজের অধ্যক্ষ পংকজ কান্তি রায়, দিরাই উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা পারমিতা দাস, দিরাই সরকারী কলেজের প্রভাষক অঞ্জন দাস, দিরাই প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তরের দিরাই প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটন, সুরমা কলেজের প্রভাষক মোস্তাহার মিয়া মোস্তাক, দিরাই উপজেলা পরিষদ মসজিদের পেশ ঈমাম হাফিজ ইদ্রিস আহমদ, পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ধনীর রঞ্জন রায়, ব্র্যাকের ম্যানেজার বশির আহমদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পলিটেকনিক এর রুহুল আমীন, দিরাই সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক লালবাঁশী দাস, দিরাই মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রায়, নিকাহ রেজিস্টার আবুনূর মোঃ নুরুল আজিজ চৌধুরী, সুজানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বকুল রায়, নিউ শতাব্দীর দিরাই প্রতিনিধি প্রশান্ত সাগর দাস, শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক নারায়ন দাস, দিরাই প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মোজাহিদ সরদার, ডিএসএস প্রি ক্যাডে একাডেমীর প্রতিষ্টাতা শাহজাহান সিরাজ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের শরমীন রীমা, রাবেয়া মেমোরিয়াল একাডেমির শিক্ষক রবি শংকর রায়, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শাহ আলম, যুবলীগ নেতা সেলিম মিয়া, পৌল যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া, করিমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন, আওয়ামী লীগ সদস্য পারভিন বেগম, লিলি বেগম, নলেজ হোমে প্রি একাডেমির শিক্ষক মহসিনা খাতুন রুমি, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোজাম্মে,ল হক প্রমূখ।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, দিরাই একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এলাকা। এখানে দুই ধর্মের মানুষ সমাজিক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। দীর্ঘকাল ধরে আমরা যার যার ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছি। রোজা এবং পুজা একসাথে হলেও এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় ছিল। আমরা সর্বদলীয় সম্প্রীতি উদ্যোগ দিরাই-পিএফজির পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং পুজাকে উৎসবে রূপদিতে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।
দিরাই উপজেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে বিএনপি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মিলে সর্বদলীয় সম্প্রীতি উদ্যোগ দিরাই-পিএফজি গঠন করেছি। এ সংগঠনের ব্যানারে আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কাজ করছি। আমরা বিশ্বাস করি রাজনীতি হবে আদর্শিক, সেখানে সহিংসতার কোন স্থান হবে না। সে লক্ষকে সামনে রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনের সময় সকল দলের প্রার্থীদের নিয়ে সুষ্ঠ্যু নির্বাচনের জন্য গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে প্রার্থীদের সে ঘোষণা দেওয়ার জন্য কাজ করি। সর্বশেষ দিরাই পৌরসভা নির্বাচনের সময় আপনার হলরুমে এ সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
সর্বদলীয় সম্প্রীতি উদ্যোগ দিরাই-পিএফজি রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতি নিয়ে কাজ করে, তাই আসন্ন দূর্গাপুজাকে সামেন রেখে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি বজায় রাখতে আপনার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
এবছর দিরাই উপজেলায় ৬৭ টি মন্ডপে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিরাই পৌর সদরে ৭ টি এবং ৯ টি ইউনিয়নে ৬০ টি মন্ডপে এ পুজা অনুষ্ঠিত হবে। সরকারি নির্দেশ রয়েছে সকল পুজামন্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর। কিন্তু দিরাই উপজেলার সকল মন্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সামর্থ নেই। তাই এসব মন্ডবে আনসার ও পুলিশি নিরাপত্বা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।
আমরা আশা করি, আপনার সার্বিক সহযোগিতায় এবার দুর্গাউৎসব হবে আরো প্রাণবন্ত। প্রয়োজনে কোথাও সহযোগিতার প্রয়োজন মনে করলে আমরা আপনার সহযোগী হতে চাই। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় দুর্গা উৎসব হোক সবার জন্য।