
চঞ্চল,
শহীদ ওসমান হাদির স্মরণে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে লালমনিরহাটে দেখা গেছে সরকারি বিধি লঙ্ঘনের এক নজিরবিহীন চিত্র। জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সরকারি দপ্তরে আজ শনিবার উড়েনি জাতীয় পতাকা, মানা হয়নি পতাকা অর্ধনমিত রাখার সরকারি আদেশ। খোদ সরকারি দপ্তরের এমন উদাসীনতায় জেলাজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কৃষি অফিস, মৎস্য অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ অন্তত সাতটি সরকারি দপ্তরে শোক দিবসের কোনো চিহ্ন নেই। পতাকা স্ট্যান্ডগুলো ছিল একদম ফাঁকা। এমনকি জেলা শিক্ষা অফিস ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সামনে সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হয়ে ফোন দেওয়া শুরু করলে সেখানে দায়িত্বরতরা তড়িঘড়ি করে পতাকা উত্তোলনের চেষ্টা চালান।
এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে বেরিয়ে আসে তাদের চরম দায়িত্বহীনতা। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহেদুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। একই অফিসের উচ্চমান সহকারী নাজমুল ইসলাম দায়সারাভাবে বলেন, “রাতে খবরটি শুনলেও আমার স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি থাকায় আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।”
আবার একাডেমিক সুপারভাইজার মুরাদ হোসেন অজুহাত দিয়ে বলেন, “আমি অসুস্থ, আমার জ্বর এসেছে তাই পতাকা ওঠাতে পারিনি।”
এমনকি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আজ তো শনিবার, সম্ভবত এ কারণেই কেউ অফিসে যায়নি। আমি বাইরে আছি, তবে খোঁজ নিচ্ছি।”
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনোনীতা দাস জানান, তিনি নিজে সরকারি গ্রুপে এই নির্দেশনার কথা জানিয়েছিলেন। এরপরও কেন পতাকা উত্তোলন করা হলো না, সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে এমন অবহেলা মেনে নিতে পারছে না লালমনিরহাটের সচেতন নাগরিক মহল। তাদের মতে, যখন সারা দেশ শ্রদ্ধাবনত চিত্তে শহীদ ওসমান হাদিকে স্মরণ করছে, তখন লালমনিরহাটের এসব কর্মকর্তাদের অসুস্থতা বা ছুটির দিনের অজুহাত দেখানো কেবল হাস্যকরই নয়, বরং চরম উদাসীনতা।
এই ঘটনায় দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন তারা।

























