
মোঃ জাকারিয়া হোসেন, ভূরুঙ্গামারী প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। কম খরচে বেশি উৎপাদন ও লাভ হওয়ায় ভুট্টার আবাদে ঝুকছে কৃষক। ফলে ছাড়িয়ে গেছে ভুট্টা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ও দুধকুমার নদের বিস্তীর্ণ চর জুড়ে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। চারদিক সবুজ ভুট্টা ক্ষেত দোল খাচ্ছে বাতাসে। ভালো ফলনের আশায় স্বপ্ন বুনছেন কৃষক।
কৃষকরা জানান, ধান চাষের পর ভুট্টার চাষ বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। কারণ ভুট্টা চাষে লাভ বেশি। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৪০ মন ভুট্টা উৎপাদন সম্ভব । এছাড়াও ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নত মানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ভুট্টার শুকনো গাছ জ্বালানি হিসেবে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। একসাথে অনেকগুলো সুবিধার কারণে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের।
একাধিক কৃষক জানান, উপজেলার কৃষকরা অন্যান্য ফসলের আবাদ কমিয়ে দিয়ে ভুট্টা চাষে ঝুকছেন। ফলনো বেশ ভালো হচ্ছে কিন্তু কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। কৃষকদের দাবি, এখানে সরকারিভাবে ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্র চালু হলে কৃষক সরাসরি তাদের কাছে ভুট্টা বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এছাড়াও কৃষি প্রণোদনার আওতায় উপজেলার ৩১০ জন কৃষকের প্রত্যেককে ২ কেজি ভুট্টা, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি করে এমওপি সার প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
চর-ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, দুধকুমার নদের চরে ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। আশা করি ভালো ফলন পাবো।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের মাওলানা পাড়ার কৃষক বরকত আলী জানান, ভুট্টা চার মাসের ফসল। ডিসেম্বরের শুরুতে বীজ বপন করতে হয়। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে প্রায় ১১ হাজার টাকার মত খরচ হয়। ভালো ফলন আর সঠিক দাম পেলে প্রতি বিঘা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। যা অল্প সময়ে বড় লাভের সুযোগ তৈরি করে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টার আবাদ বেশি হয়েছে। কৃষকদের স্বল্প খরচে উচ্চফলনশীল ভুট্টা উৎপাদনে সহায়তা ও পরামর্শ দিতে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাগন সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। যাতে কৃষক সর্বোচ্চ ফলন পেয়ে লাভবান হতে পারেন।