মোঃ আবু তৈয়ব
হাটহাজারী- চট্টগ্রাম- প্রতিনিধি।।
রবিবার -২২ ডিসেম্বর- গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পতিত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর সাদপন্থীদের হত্যাযজ্ঞের বিচারের দাবিতে মিছিল করায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে মঈনুদ্দিন গং রাজধানী ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত মাদরাসাতুল কাউসার আল ইসলামিয়া বন্ধ করার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আমরা যারপরনাই বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন- গতকাল ২১ ডিসেম্বর- শনিবার শেরে বাংলা নগর থানা বিএনপির যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সেক্রেটারী পদপ্রার্থী পরিচয়ে মঈন উদ্দিন তার দলবল নিয়ে মাদরাসায় উপস্থিত হয়। ইজতেমা ময়দানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্ররা অংশগ্রহণ এবং সাদপন্থীদের সকল কার্যক্রম বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি জবাবদিহিতা তলব করে। এক পর্যায়ে তারা মাদরাসার আসাতিযায়ে কেরামের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং মারমুখী ভঙ্গিতে নানা ধরনের হুমকি ধমকি দিতে থাকে। এমনকি তারা দ্বিগুণ লোক দিয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
ইসলামাবাদী আরো বলেন- এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে- কেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার কাছে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি করতে হবে? মাদরাসা একটি স্বতন্ত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেখানে ছাত্রদেরকে পারিবারিক- সামাজিক নৈতিক শিষ্টাচার ও নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব- কর্তব্য এবং দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া হয়। এর পরও মঈন উদ্দিন প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে নিজের ক্ষমতার জোর খাটিয়ে হুমকি দেওয়ার দুঃসাহস দেখায়- যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন- এই ঘটনার মাধ্যমে মাদরাসার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও ছাত্রদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এটি শুধু মাদরাসার জন্য নয়- বরং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্যও গভীর উদ্বেগের বিষয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিও আহ্বান জানাচ্ছে, যেন তারা এই ঘটনার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যতে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে- সে বিষয়ে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়।
তিনি আরো বলেন- সেইসাথে স্পষ্টভাবে বলতে চাই- মাদরাসা ও আলেম সমাজের উপর কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব বা হুমকির মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিষ্ট আমলের মত কোণঠাসা করে রাখা যাবে না। তদুপরি- মাওলানে সাদের অনুসারীরা প্রশাসনের আইন ভঙ্গ করে বিভিন্ন সহিংস কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের কার্যক্রম দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিশেষে তিনি বলেন- আমরা দেশের সর্বস্তরের নাগরিক ও রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাই- মাদরাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে অহেতুক রাজনৈতিক প্রভাব থেকে দূরে রেখে ঐক্য ও সহমর্মিতার পরিবেশ বজায় রাখুন।