
মোঃ রাকিবুল হাসান,
শেরপুর প্রতিনিধি।।
শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বিশাল এলাকা জুরে রয়েছে অসমতল ভূমি। এই অসমতল ভূমিকে ধান, পাট বা সবজী চাষ করা যায় না। কারন এই বন্দ¦ুর ভূমিতে পানি প্রবাহ সঠিক ভাবে না দেওয়ার কারনে মৌসুমিও ফসল চাষ করা সম্ভব হয় না। দির্ঘদিন পতিত ভূমি পরে থাকতো। কিন্তু এই সমস্ত পতিত অসমতল ভূমিতে ঝিনাইগাতি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরামর্শে পতিত ভূমি গুলিতে নানা জাতের ফলদ বাগান করে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। বর্তমানে উঁচু পাহাড়ি এলাকা সন্ধাকুড়া, গারো কুনা, গুমরা, হলদি গ্রাম, রাংটিয়া, সমচ্চুড়া সহ আরো অনেক এলাকায় বিভিন্ন উন্নত জাতের নানা ধরনের ফলদ বাগান গড়ে উঠেছে। এই সমস্ত এলাকায় মাল্টা, কমলা, লেচু, লেবু, বাউকুল, আপেল কুল, চাইলতা, আমলকি, জলপাই, আম রুপালি সহ আরো অনেক জাতের ফলের বাগান করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। উল্লেখ্য এক সময় এই এলাকার লোকের চাহিদার জন্য লেচু আমদানি করা হতো আর বর্তমানে অত্র এলাকা থেকে যে পরিমানের বিভিন্ন জাতের লেচু উৎপাদন হয় তাতে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের আভ্যান্তরীন চাহিদায় জুগান দিচ্ছে। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছে অপর দিকে অসমতল পরিত্যক্ত ভূমি গুলো কৃষকের আওতায় চলে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতিপূর্বে যারা মাল্টা চাষ করেছেন এখনতাদের বাগানে মালটা হাসি ছড়াচ্ছে। পাহাড়ি উঁচু নিচু টিলা আর টিলা ঘেষা জমিতে অনেকেই এখন ঝুঁকছে মাল্টা, লেবু ও লেচু চাষের দিকে। ফলগুলো বাজারে চাহিদা থাকায় এবং খুব লাভজনক ও সুস্বাদু হওয়ায় জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে মাল্টা, লেবু, লেচু ও কমলা চাষ। শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি সুনিষ্কাশিত, উর্বর, মধ্যম থেকে দোঁ-আশ এবং এখানকার আবহাওয়া শুষ্ক ও উষ্ণ হওয়ায় এখানে সাইট্রাস (লেবু) এই জাতীয় ফল চাষের প্রচুর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। আর এ জাতীয় ফল বিশেষ করে লেবু ও মাল্টা চাষ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। জানা গেছে, গত তিন বছর আগে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় লেবু ও মালটা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন উদ্যোক্তা আব্দুল বাতেন। বাতেন উপজেলার হলদী গ্রাম এলাকার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় সরকারি গাড়ি চালক। আরো নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হলে এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে, এ অঞ্চলে লেবু ও মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটবে। এছাড়া এই বিদেশী ফলটি দেশে উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করেন মাল্টা চাষী আব্দুল বাতেন। এতে এ অঞ্চল অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকাশ থাকে যে, উক্ত পাহাড়ি উঁচু অসমতল ভূমিতে বিভিন্ন জাতের ফলদ বাগান করেছে তারাই ব্যাপক লাভবান হয়েছে। তাই দিন দিন অত্র এলাকায় নানা জাতের ফলদ বাগানের উজ্জল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।