
মোঃ রাকিবুল হাসান
(শেরপুর) প্রতিনিধি।।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে কৃষকেরা সরিষা মাড়াই এর কাজ শুরু করেছে। এ বছর এই এলাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। শেরপুরে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষা লক্ষমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানে চাষ হয়েছে। বর্তমানে অনেক সরিষা ফসল পাকায় কৃষকেরা উত্তলন শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহ থেকে পাকা সরিষা উত্তলন শুরু হয়ে আমাগী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রায় পাকা সরিষা উত্তলন শেষ হবে এমন ধারনা করা হচ্ছে। আগাম জাতের সরিষা গুলি পাকায় কৃষকেরা উত্তলন ও মাড়ায়ের কাজ শুরু করেছে। এ বছর সরিষা চাষিরা তাদের উৎপাদিত সরিষার এমন ভালো ফসল দেখে বেজায় খুশি। অত্র জেলার কৃষকেরা বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছে। কারন অল্প খরচে অধিক লাভ জনক হওয়ায় বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছে অত্র এলাকার কৃষক। উল্লেখ্য সরিষার উৎপাদন ভালো হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর সিংহভাগ কৃষক সরিষা চাষ করেছে। প্রকাশ থাকে যে সরকারি ভাবে দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষিদেরকে সরিষা উৎপাদনের জন্য প্রত্যেক কৃষককে এক বিঘা জমি সরিষা চাষের জন্য প্রনদনা হিসাবে সরিষা বীজ ও সার বিনা মূল্যে প্রদান করেছে। এতে কৃষকরা অতি আগ্রহ হয়ে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি নিজেরাও শরিষা উৎপাদনে ঝুকেছে। ফলে আগের চেয়ে অনেক চাষিরা এবার সরিষা চাষে উৎসাহি হয়ে বহু জমিতে নতুন কৃষকেরা সরিষা উৎপাদন করায় লক্ষ মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এ বছর কৃষকেরা সরিষা উৎপাদন করে বারতি আয়ের সুযোগ পেলো। আর দেশের জন্য তেল আমদানি নির্ভরতা অনেকটাই কমে আসবে বলে কৃষিবীদ মহল মনে করে। যদি প্রতি বছর কৃষকেরা এই ধারাবাহিকতা রেখে সরিষা চাষে আগ্রহি হয়ে উঠে তাতে কৃষকরাও লাভবান হবে এবং দেশের তেল চাহিদার জুগানে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারবে। কৃষকের উৎপদিত সরিষায় যদি দেশের তেলের চাহিদা পূূর্ণ করতে পারে তাহলে দেশের কোটি কোটি টাকা তেল আমদানি থেকে বেচে যাবে। এতে সমবৃদ্ধ হবে দেশ আর কৃষক হবে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান। এ ব্যপারে ঝিনাইগাতি উপজেলার কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা মো.ফরহাদ হোসেন ও নাদিয়া আক্তার , উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার মঞ্জুরুল হক ও আল-আমিন এর সাথে কথা হলে তারা জানায়, এ বছর সরিষা উৎপাদনের জন্য সারবিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করেছি। যে কারনে এ বছর পূর্বের তুলনায় অনেক জমিতে কৃষকেরা সরিষা উৎপাদন করেছে এবং সরিষাও ভালো হয়েছে। লক্ষ মাত্রার চেয়ে অধিক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতি পূর্বে অনেক কৃষক স্বল্প খরচে অল্প সময়ে অধিক লাভ জনক ফসল উৎপাদনের প্রতি আগ্রহ ছিল না। কৃষকরা অন্য কৃষকের কাছ থেকে সরিষা উৎপাদনের লাভের বিষয়টি জানতে পেরে অনেক কৃষক এ বছর সরিষা চাষ করেছে। যে কারনে লক্ষ মাত্রার চেয়ে এ বছর সরিষা উৎপাদন অনেক বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদি কৃষকরা সরিষা ঠিক সময়ে ঘরে তুলতে পারে তাহলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবে। তেমনি তেলের চাহিদা পূরণ করতে যুগান্তকারি সহায়ক ভূমিকা রাখবে কৃষকের এই উৎপাদিত সরিষা। যা বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সহায়ক হবে। অর্থাৎ বিদেশ থেকে তেল আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে। এই জন্য অত্র জেলার কৃষকেরা সরিষা চাষের জন্য আগাম জাতের আমন ধান চাষ করেছে। আমন ধান কেটে দ্রæততম সময়ে ঐ জমিতে সরিষা চাষ করেছে। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হবে অপরদিকে দেশের তেল উৎপাদনের সহায়ক ভূমিকা রাখবে। প্রতিমণ সরিষা বাজার মূল্য ৪/৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি একর জমিতে ১২/১৫ মণ সরিষা উৎপাদন হবে বলে কৃষকের কাছে থেকে জানা যায়। আগামি ১/২ সপ্তাহের মধ্যে সরিষা মাড়াই শুরু হবে। শেরপুর জেলার ৫টি উপজেলায় এ বছর ব্যপক আকারে কৃষকেরা সরিষা চাষাবাদ করেছে। বেসরকারি হিসাব মতে ৫টি উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার একর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে। এ ব্যপারে ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তা খন্দকার মঞ্জুরুল ও আল-আমিন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় লক্ষ মাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানের সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিগত সময়ের চেয়ে এ বছর অত্র এলাকায় ব্যপক আকারে সরিষা চাষ করেছে কৃষকেরা। উৎপাদিত সরিষায় লাভবান হবে কৃষকের ও দেশের।