Dhaka , Friday, 20 June 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
শাহজাদাপুর-১নং ওয়ার্ডে মা’দক বিরোধী মিনি ফুটবল ফাইনাল-২০২৫ অনুষ্ঠিত নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আকস্মিক ঘূ’র্ণিঝ’ড়: ঘরবাড়ি-গাছপালা ল’ণ্ডভ’ণ্ড, ক্ষ’তিগ্র’স্ত বহু পরিবার নীলফামারীর ডিমলায় সড়কের দু’পাশ দ’খল করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জ’রিমা’না লালমনিরহাটে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর না’রীদের মাঝে ছাগল বিতরণ কালিয়াকৈরে বিএনপি নেতা পারভেজ আহাম্মেদের মুক্তি ও বহিষ্কার প্রত্যাহার   দাবিতে বিক্ষোভ -সমাবেশ  নোয়াখালীতে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড, জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ গ্রিল কেঁটে টেবুনিয়ায় ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা থেকে ১২ লাখ টাকা চু’রি লালমনিরহাটে বিপুল পরিমাণ গাঁ’জাস’হ দিনাজপুরের দুই মা’দক কা’রবারি গ্রে’প্তার  চকরিয়ায় আ’লীগের ঝটিকা মিছিল সাঁড়াশি অভিযানে ৫৫ জন গ্রে’ফতার বেগমগঞ্জে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত গোপালপুরে শিক্ষার মান উন্নয়নে করনীয় সম্পর্কে মত বিনিময় সভা  রামগঞ্জে নি’ষি’দ্ধ ঘো’ষিত৷ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা গ্রে’ফতার  নোয়াখালীতে বৃদ্ধাকে শ্বা’সরো’ধ করে হ’ত্যা, গ্রে’প্তার-২ হেফাজতে ইসলাম মহেশখালী উপজেলার কাউন্সিল সম্পন্ন নোয়াখালীতে ভবনের ছা’দ থেকে প’ড়ে নির্মাণ শ্র’মিকে’র মৃ’ত্যু   ম’ৎস্যচা’ষিদের জন্য আশার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত  পাবনায় ট্রাকের ধা’ক্কায় নি’হত ১ , আ’হত ২ বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’র  আত্বপ্রকাশে সংবাদ সম্মেলন  কি’ডনি রো’গে আ’ক্রা’ন্ত কৃষ্ণ হাজংয়ের পাশে দাঁড়ালেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বেগমগঞ্জে এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত নোয়াখালীতে মমিন উল্ল্যা চেয়ারম্যানের উপর স’ন্ত্রা’সী হা’মলা’র প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত মণিরামপুরে টাকা আ’ত্মসাতের জন্য ছিন’তাই’য়ের নাটক, ছি’নতাইকা’রীরা ৭জন আ’টক লক্ষ্মীপুরে শি’শু ক’ণ্যাকে ধ’র্ষনে’র অভিযোগে পা’ষন্ড পিতা গ্রে’ফতা’র  কালিয়াকৈরে  উপজেলা ও পৌর বিএনপির  আহ্বায়ক কমিটির  আনন্দ মিছিল পাইকগাছায় টানা কয়েক বৃষ্টিতে জ’নজী’বন বি’পর্য’স্ত  আশুলিয়ায় গ্যা’স লি’কেজ থেকে বি’স্ফো’রণ, দগ্ধ ৬ বেগমগঞ্জে ব’ন্যা ক্ষ’তিগ্র’স্ত প্রান্তিক চা’ষীদে’র মাঝে ম’ৎস্য খা’দ্য বিতরণ সোনারগাঁওয়ে খা’লপা’ড় থেকে যুবকের গ’লাকা’টা লা’শ উদ্ধার সংক্রান্ত ক্লুলেস হ’ত্যাকা’ন্ডে জ’ড়িত ২ জন আ’সামি’কে আ’টক করেছে র‍্যাব-১১ ফ্যাসিস্টরা সমাজকে অ’স্ত্র মা’দক দিয়ে ধ্বং’সের দিকে ঠে’লে দিয়েছে গোলাম ফারুক খোকন   রামুর দক্ষিণ মি’ঠাছড়িতে পা’হাড় কা’টার সময় মা’টি চা’পা পড়ে শ্রমিকের মৃ’ত্যু 

রূপগঞ্জে জাহাজ শিল্পের সম্ভাবনা

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 07:37:46 pm, Sunday, 6 June 2021
  • 380 বার পড়া হয়েছে

রূপগঞ্জে জাহাজ শিল্পের সম্ভাবনা

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ –

শীতলক্ষ্যা ও বালুনদের তীরে গড়ে উঠছে নতুন নতুন জাহাজ তৈরীর কারখানা। দিনে দুপুরেও মানুষের যাতায়াত ছিল না বললেই চলে। নির্জন নিরিবিলী স্থান। মাদকসেবীদের আখড়া নামেই পরিচিত ছিল এসব স্থান। স্বাধীনতা পরবর্তী হঠাৎ করেই কে বা কাহারা ছাওয়ালপীরের নামে একটা আস্তানা খুলে বসে। মাঝে মধ্যে কিছু লালসালু পরিহিত ভন্ড সাধুর আগমন হত। তখন থেকে মাদকসেবীদের আনাগোনা আরো বেড়ে গেল। নব্বই দশকের দিকে ত্রিমুহনী এলাকার কিছু যুবক ইটা তৈরির কারখানা বানালেন। এরপর থেকে এর নাম ইটাখোলা। এ ইটা খোলায় এখন জাহাজের বিশাল শিল্প কারখানার কর্মযঙ্ঘ।

২০-৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে। দিন রাত চলে কার্যক্রম। কেউ জ¦ালা দিচ্ছে। কেউ গ্রান্ডিং করছে। কেউ ডিজাইং করছে। প্লেট কাটছে। রং করছে। অনেকে পাহাদারের কাজও করছে। নির্জন এ স্থানটিতে বর্তমান জাহাজ নির্মান, মেরামত, পুরাতন জাহাজ কাটা, নতুন পুরাতন জাহাজ বেচাকেনা এসব কার্যক্রমকে ঘিরে গড়ে ওঠেছে বিশাল বাজার। পথ চলতেই টুক্ টাক্ শব্দে আপনার কান ঝাপাপালা হবার উপক্রম হবে।
ডেমরা থেকে বালু নদীর পশ্চিম তীর ঘেষে উত্তরে কালো অজগরের মতো একেবেকে গেছে পীচঢালা সড়ক। সেই রাস্তা ধরে মাত্র ৩ কিলোমিটার এগুলোই জাহাজ তৈরীর অসংখ্য কারখানার দেখা মিলবে। কোনটি সবে তৈরি হচ্ছে, কোনটি সমাপ্তির পথে। যে কারো চোখ ধাঁধিয়ে যাবে বড় বড় জাহাজ দেখে। ইতোমধ্যেই বালুনদের পাড়ের এ চরটি এখন এলাকাবাসির কাছে জাহাজের চর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
নয়ামাটি এলাকার সুজন মিয়া বলেন, “একটা সময় কাজের সন্ধানে ছুটতাম। এখন আমার আন্ডারেই কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে। নয়ামাটি এলাকায় বালুনদের তীরে প্রথম ছোট্ট করে শুরু করি। তারপর নব্বই দশকের দিকে আমিই প্রথম এ ইটা খোলায় থ্রি-স্টার নামে ডকইয়ার্ড চালু করি। এরপর আমার পাশাপাশি অনেকেই জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করেন। এখন হাজার হাজার জাহাজ তৈরি হচ্ছে এখানে। সময়ের ব্যবধানে সেখানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য জাহাজ তৈরীর শিল্প। হাজার মানুষের পদচারনায় নির্জন ইটাখোলা এখন এক কর্মমূখর জনপদ।” এছাড়াও বালুরপাড়, ইদেরকান্দি, পূর্বগ্রাম, ভাওয়ালীয়াপাড়া, ডাক্তারখালী, বড়ালু, মাঝিনা, হড়িনা, ও ইছাখালীর চরে রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক জাহাজ তৈরীর কারখানা। এছাড়া উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গানগর ও দড়িকান্দির চরে রয়েছে আরো ৮/১০টি প্রতিষ্ঠান। মাষ্টার ডকইয়ার্ড, থ্রিস্টার ডকইয়ার্ড, ফাইভ ইস্টার ডকইয়ার্ড, খান ডকইয়ার্ড, ফাহিম ডকইয়ার্ড, শামস ডকইয়ার্ড, তালহা ডকইয়ার্ড, আমির ডকইয়ার্ড, মালেক ডকইয়ার্ড, রাজু ডকইয়ার্ড, লিটন ডকইয়ার্ড, ফটিক ডকইয়ার্ড, ভাই ভাই ডকইয়ার্ড, মনির ডকইয়ার্ড, মাস্টাং ইঞ্জিনিয়ারিং জাহাজ কারখানাগুলোর অন্যতম। আড়াই‘শ ফিট থেকে শুরু করে শত ফিটের কোষ্টার বা মালবাহি জাহাজ, সরোঙ্গা, ফেরী, জেটি, পল্টন, বালুবাহি ট্রলার, বলগেট আর ড্রেজার তৈরী হয় এসব কারখানায়।
জাহাজ তৈরীতে মূলত ব্যবহার হয় লোহার প্লেনশীট আর এঙ্গেল, মেশিন সরাসরি আমদানী করতে হয় চীন থেকে। অতিরিক্ত উপাদান বলতে টি-গার্ডার, বিট-গার্ডার, রং, ইট, বালি ,সিমেন্ট, গ্যাস সিলিন্ডার, অক্সিজেন, ওয়েল্ডিং রড আর লেদ মেশিনের কিছু খুচরো কাজ। একটি বড় মাপের কোষ্টার জাহাজ তৈরীর জন্য প্রথমে রাজমিস্ত্রি বেইস লাইন তৈরী করে দেন। পরে ঠিকাদারের নির্দেশনাক্রমে ফিটাররা জাহাজের মলিন তৈরী করেন। ওয়েল্ডার ঝালাইয়ের মাধ্যেমে জাহাজটির খাচা তৈরী নির্মান করেন।
একটি বডি দাড় করানোর পর চলে মেশিন স্থাপন আর রংয়ের কাজ। বড় জাহাজে ৩/৪টি খুপড়ি বা হেস থাকে। যেখানে ৩/৪শ টন পর্যন্ত মাল বহন করা যায়। প্লেনশীট আসে চট্রগ্রাম থেকে। বিদেশী কাটা জাহাজের ৮ থেকে ১২ মিলির শীট ব্যবহার করা হয় জাহার তৈরীতে। ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে শীট কিনতে হয়।
আর লোহার অঙ্গেল ৭৫/৭৬ টাকায় পাওয়া যায় স্থানীয় বাজারে। ৮/৯ লাখ টাকায় জাহাজের মেশিন আমদানী করা হয় চীন থেকে আর অন্যান্য মালামাল আছে ঢাকার বংশালে অথবা চট্রগ্রামের ভাটিয়ারীতে। সময় ও অবস্থাবেধে উপাদানের মূল্যেরও হেরফের হয়। সর্বসাকুল্যে একটি বড় জাহাজ তৈরীতে ৯/১০ কোটি টাকা খরচা হয়। এরপর মালিকরা সুবিধে মতো লাভ করে তা বিক্রি করেন। একটি জাহাজ ২০/২৫জন কারিগর মিলে তৈরী করলে সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ মাস।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে ধ্বস নেমেছে।
এখন আর আগের মত মানুষ জাহাজ বানায় না। তাই খুব একটা ভালো নেই এর নির্মাণ শ্রমিকরা। সকলের সাথেই কথা বলে পাওয়া গেলো হতাশার সুর। লোহার মতো শক্ত সামর্থ্য শরীর তাদের। কিন্তু তাদের ঘরের খুটি অত্যন্ত দূর্বল নড়বড়ে। জীবন জিবিকা আর বাসস্থানের মান নগন্য।
ফিটার আমির, মোজ্জামেল, মোক্তার, জয়নাল ওয়েল্ডার পান্নু, আলমাছ আনোয়ারসহ আরো অনেকে জানান, হিসেব কষে খেয়ে দেয়ে বাকি টাকাটুকু তুলে রাখেন পরিবার পরিজনদের জন্য। তারা বলেন কাজের তুলনায় বেতন অনেক কম তারপরও করার কিছু নেই। এই কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ তারা শিখেননি। এটাই করতে হবে তাদের। আর জাহাজের মালিক রেবেকা সুলতানা, আমির খান, আনোয়ার হোসেন, কামাল, মাহফুজ, নুরুল হক বজুরী, আব্দুল মজিদ কৃষ্ণ গোপাল সরকারসহ আরো অনেকে বলেন, রোজ হাজিরা, মালামাল কেনা , বিদ্যু বিল আর জমির ভাড়া এগুলোর ভেতর লুকিয়ে থাকে জাহাজের লাভ লোকসানের ব্যাপার।
এ কারনে হিসেব কষে সকলকে টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া মালামালের দাম যে হারে বাড়ছে জাহাজের দাম কিন্তু আগের তুলনায় বাড়েনি।

 

ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

শাহজাদাপুর-১নং ওয়ার্ডে মা’দক বিরোধী মিনি ফুটবল ফাইনাল-২০২৫ অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জে জাহাজ শিল্পের সম্ভাবনা

আপডেট সময় : 07:37:46 pm, Sunday, 6 June 2021

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ –

শীতলক্ষ্যা ও বালুনদের তীরে গড়ে উঠছে নতুন নতুন জাহাজ তৈরীর কারখানা। দিনে দুপুরেও মানুষের যাতায়াত ছিল না বললেই চলে। নির্জন নিরিবিলী স্থান। মাদকসেবীদের আখড়া নামেই পরিচিত ছিল এসব স্থান। স্বাধীনতা পরবর্তী হঠাৎ করেই কে বা কাহারা ছাওয়ালপীরের নামে একটা আস্তানা খুলে বসে। মাঝে মধ্যে কিছু লালসালু পরিহিত ভন্ড সাধুর আগমন হত। তখন থেকে মাদকসেবীদের আনাগোনা আরো বেড়ে গেল। নব্বই দশকের দিকে ত্রিমুহনী এলাকার কিছু যুবক ইটা তৈরির কারখানা বানালেন। এরপর থেকে এর নাম ইটাখোলা। এ ইটা খোলায় এখন জাহাজের বিশাল শিল্প কারখানার কর্মযঙ্ঘ।

২০-৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে। দিন রাত চলে কার্যক্রম। কেউ জ¦ালা দিচ্ছে। কেউ গ্রান্ডিং করছে। কেউ ডিজাইং করছে। প্লেট কাটছে। রং করছে। অনেকে পাহাদারের কাজও করছে। নির্জন এ স্থানটিতে বর্তমান জাহাজ নির্মান, মেরামত, পুরাতন জাহাজ কাটা, নতুন পুরাতন জাহাজ বেচাকেনা এসব কার্যক্রমকে ঘিরে গড়ে ওঠেছে বিশাল বাজার। পথ চলতেই টুক্ টাক্ শব্দে আপনার কান ঝাপাপালা হবার উপক্রম হবে।
ডেমরা থেকে বালু নদীর পশ্চিম তীর ঘেষে উত্তরে কালো অজগরের মতো একেবেকে গেছে পীচঢালা সড়ক। সেই রাস্তা ধরে মাত্র ৩ কিলোমিটার এগুলোই জাহাজ তৈরীর অসংখ্য কারখানার দেখা মিলবে। কোনটি সবে তৈরি হচ্ছে, কোনটি সমাপ্তির পথে। যে কারো চোখ ধাঁধিয়ে যাবে বড় বড় জাহাজ দেখে। ইতোমধ্যেই বালুনদের পাড়ের এ চরটি এখন এলাকাবাসির কাছে জাহাজের চর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
নয়ামাটি এলাকার সুজন মিয়া বলেন, “একটা সময় কাজের সন্ধানে ছুটতাম। এখন আমার আন্ডারেই কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে। নয়ামাটি এলাকায় বালুনদের তীরে প্রথম ছোট্ট করে শুরু করি। তারপর নব্বই দশকের দিকে আমিই প্রথম এ ইটা খোলায় থ্রি-স্টার নামে ডকইয়ার্ড চালু করি। এরপর আমার পাশাপাশি অনেকেই জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করেন। এখন হাজার হাজার জাহাজ তৈরি হচ্ছে এখানে। সময়ের ব্যবধানে সেখানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য জাহাজ তৈরীর শিল্প। হাজার মানুষের পদচারনায় নির্জন ইটাখোলা এখন এক কর্মমূখর জনপদ।” এছাড়াও বালুরপাড়, ইদেরকান্দি, পূর্বগ্রাম, ভাওয়ালীয়াপাড়া, ডাক্তারখালী, বড়ালু, মাঝিনা, হড়িনা, ও ইছাখালীর চরে রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক জাহাজ তৈরীর কারখানা। এছাড়া উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গানগর ও দড়িকান্দির চরে রয়েছে আরো ৮/১০টি প্রতিষ্ঠান। মাষ্টার ডকইয়ার্ড, থ্রিস্টার ডকইয়ার্ড, ফাইভ ইস্টার ডকইয়ার্ড, খান ডকইয়ার্ড, ফাহিম ডকইয়ার্ড, শামস ডকইয়ার্ড, তালহা ডকইয়ার্ড, আমির ডকইয়ার্ড, মালেক ডকইয়ার্ড, রাজু ডকইয়ার্ড, লিটন ডকইয়ার্ড, ফটিক ডকইয়ার্ড, ভাই ভাই ডকইয়ার্ড, মনির ডকইয়ার্ড, মাস্টাং ইঞ্জিনিয়ারিং জাহাজ কারখানাগুলোর অন্যতম। আড়াই‘শ ফিট থেকে শুরু করে শত ফিটের কোষ্টার বা মালবাহি জাহাজ, সরোঙ্গা, ফেরী, জেটি, পল্টন, বালুবাহি ট্রলার, বলগেট আর ড্রেজার তৈরী হয় এসব কারখানায়।
জাহাজ তৈরীতে মূলত ব্যবহার হয় লোহার প্লেনশীট আর এঙ্গেল, মেশিন সরাসরি আমদানী করতে হয় চীন থেকে। অতিরিক্ত উপাদান বলতে টি-গার্ডার, বিট-গার্ডার, রং, ইট, বালি ,সিমেন্ট, গ্যাস সিলিন্ডার, অক্সিজেন, ওয়েল্ডিং রড আর লেদ মেশিনের কিছু খুচরো কাজ। একটি বড় মাপের কোষ্টার জাহাজ তৈরীর জন্য প্রথমে রাজমিস্ত্রি বেইস লাইন তৈরী করে দেন। পরে ঠিকাদারের নির্দেশনাক্রমে ফিটাররা জাহাজের মলিন তৈরী করেন। ওয়েল্ডার ঝালাইয়ের মাধ্যেমে জাহাজটির খাচা তৈরী নির্মান করেন।
একটি বডি দাড় করানোর পর চলে মেশিন স্থাপন আর রংয়ের কাজ। বড় জাহাজে ৩/৪টি খুপড়ি বা হেস থাকে। যেখানে ৩/৪শ টন পর্যন্ত মাল বহন করা যায়। প্লেনশীট আসে চট্রগ্রাম থেকে। বিদেশী কাটা জাহাজের ৮ থেকে ১২ মিলির শীট ব্যবহার করা হয় জাহার তৈরীতে। ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে শীট কিনতে হয়।
আর লোহার অঙ্গেল ৭৫/৭৬ টাকায় পাওয়া যায় স্থানীয় বাজারে। ৮/৯ লাখ টাকায় জাহাজের মেশিন আমদানী করা হয় চীন থেকে আর অন্যান্য মালামাল আছে ঢাকার বংশালে অথবা চট্রগ্রামের ভাটিয়ারীতে। সময় ও অবস্থাবেধে উপাদানের মূল্যেরও হেরফের হয়। সর্বসাকুল্যে একটি বড় জাহাজ তৈরীতে ৯/১০ কোটি টাকা খরচা হয়। এরপর মালিকরা সুবিধে মতো লাভ করে তা বিক্রি করেন। একটি জাহাজ ২০/২৫জন কারিগর মিলে তৈরী করলে সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ মাস।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে ধ্বস নেমেছে।
এখন আর আগের মত মানুষ জাহাজ বানায় না। তাই খুব একটা ভালো নেই এর নির্মাণ শ্রমিকরা। সকলের সাথেই কথা বলে পাওয়া গেলো হতাশার সুর। লোহার মতো শক্ত সামর্থ্য শরীর তাদের। কিন্তু তাদের ঘরের খুটি অত্যন্ত দূর্বল নড়বড়ে। জীবন জিবিকা আর বাসস্থানের মান নগন্য।
ফিটার আমির, মোজ্জামেল, মোক্তার, জয়নাল ওয়েল্ডার পান্নু, আলমাছ আনোয়ারসহ আরো অনেকে জানান, হিসেব কষে খেয়ে দেয়ে বাকি টাকাটুকু তুলে রাখেন পরিবার পরিজনদের জন্য। তারা বলেন কাজের তুলনায় বেতন অনেক কম তারপরও করার কিছু নেই। এই কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ তারা শিখেননি। এটাই করতে হবে তাদের। আর জাহাজের মালিক রেবেকা সুলতানা, আমির খান, আনোয়ার হোসেন, কামাল, মাহফুজ, নুরুল হক বজুরী, আব্দুল মজিদ কৃষ্ণ গোপাল সরকারসহ আরো অনেকে বলেন, রোজ হাজিরা, মালামাল কেনা , বিদ্যু বিল আর জমির ভাড়া এগুলোর ভেতর লুকিয়ে থাকে জাহাজের লাভ লোকসানের ব্যাপার।
এ কারনে হিসেব কষে সকলকে টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া মালামালের দাম যে হারে বাড়ছে জাহাজের দাম কিন্তু আগের তুলনায় বাড়েনি।