মোঃ রুবেল খান,
মোংলা প্রতিনিধি।।
মোংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই ভারতগামী নৌযানের নাবিক ও অন্যান্য জেলা থেকে আসা মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে না পারায় করোনা নিয়ে মানুষের বাড়ছে উদ্বেগ। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দিনদিন করোনা শনাক্তের হারও বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে বন্দর ও শহরের আশপাশ এলাকায় এর হরহামেশা চলাচল বন্ধ করতে না পারলে করোনা ভাইরাসে মহামারী আকার ধারণ করার সম্ভাবনা বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল। ইতোমধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে নতুন করে বন্দরের ৫ কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছে।
বন্দর সুত্রে জানা যায়, টানা তিন দিন বৃষ্টি শেষ হতে না হতেই দক্ষিনাঞ্চলে জেঁকে বসেছে প্রচন্ড শীত, অন্যদিকে নতুন করে বেড়ে গেছে করোনা শনাক্তের হার। গত ২৪ ঘন্টার পরিক্ষায় আক্রান্তের হার বেড়ে দাড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
এদিকে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা লাইটার, কার্গো ও কোস্টার জাহাজগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়ার জন্য একমাত্র রুট হলো মোংলা বন্দর হয়ে বঙ্গবন্ধু ঘষিয়াখালী ক্যানেল। পণ্য নিয়ে আসা এ সকল নৌযানের যাত্রী বা নাবিকরা চ্যানেলে নোঙ্গর করে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারসহ অন্যান্য কাজের অজুহাতে কিনারে উঠে চলাচল করাসহ মোংলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৪-৫ দিন ধরে অবস্থান করছে।
মোংলা ও এর আশপাশের উপকুলীয় এলাকার মানুষেরা স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দিনদিন করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে চলাচল করা এখানকার মানুষদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মানিয়ে রাখার জন্য প্রশাসনের এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে করেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নিতে আসা ছাত্র/ছাত্রী সহ মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রতিদিনই এই ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে শুধু টিকা নেয়ার জন্য ভিড় জমালেও মাস্ক বা সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়নি অনেকের মধ্যে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আঃ হামিদ বলেন, আমরা বন্দরসহ শিল্পাঞ্চল এলাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিবসহ ৫ কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সচিব ও হারবার মাস্টার কিছুটা সুস্থ্য হলেও বাকি ৩ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে।
অন্যদিকে, বন্দর ও শিল্পাঞ্চলে আমদানি-রপ্তানীকৃত পন্যবাহী ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপারেরা অবাধে চলাফেরা করছে বন্দরের সর্বক্রই। যা করোনা সংক্রমন ঝুঁকিকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জিবেতোষ বিশ্বাস বলেন, মোংলা উপজেলায় বসবাসকারীরা করোনার নমুনা পরিক্ষার জন্য আসতে চাচ্ছে না। যার ফলে কি পরিমান রোগ আক্রান্ত রয়েছে তা নির্নয় করা সম্ভব না। গত ৪৮ ঘন্টায় ৩৫ জনের মধ্যে ১৮ জন আক্রান্তের রুগী পাওয়া গেছে। তারা সকলেই হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে রয়েছে। তবে নমুনা পরিক্ষা পর্যাপ্ত হলে করোনা রুগীদের চিহ্নিত করে দ্রæত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হতো। তার পরেও আমরা সকল কিছু প্রস্তুত করে রয়েছি, করোনা রুগীদের চিকিৎসায় সদা প্রস্তুত মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।