মেহেরপুর থেকে জুরাইাস ইসলাম।।
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ শহর কেন্দ্রীক তৎপরতা চালানোর কারণে বিধি নিষেধ কিছুটা মানলেও গ্রামাঞ্চলে কোন তৎপরতা নেই। মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলা বিভিন্ন স্থানে করোনা প্রতিরোধ কমিটি বিধি নিষেধ আরোপ করলেও তা মানা হচ্ছে না ফলে করোনা সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন সচেতন মহল। তবে প্রশান বলছে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ি সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দোকান পাট খোলা রাখা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারী করেন জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ি শহরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী তৎপরতা চালিয়ে দোকান পাট বন্ধ করে দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে দন্ড প্রদান করেন। কিন্তু করোনার আতুর ঘর হিসেবে পরিচিত পল্লী অঞ্চলে প্রশাসনিক তৎপরতা নেই ফলে গভীর রাত পর্যন্ত দোকান পাট খোলাসহ আড্ডা দিতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা সদর, মুজিবনগর ও গাংনী পৌর অঞ্চলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করে। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার ভিতরে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। দিনব্যাপি বিধি নিষেধের ব্যাপারে প্রচারণা চালান গাংনী বাজার কমিটি। কিন্তু অন্য কোন স্থানে ও বাজারে সংশ্লিষ্ট কমিটি কোন প্রচারণা চালান নি। ইউপি চেয়ারম্যানদের ভ‚মিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানগণ করোনা বিস্তার রোধে কোন ভ‚মিকা পালন করছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে রাত আটটার দিকে দেখা গেছে বামন্দী বাজারের দোকানপাট খোলা। চায়ের দোকান খোলা রয়েছে গভীর রাত অব্দি। আবার কাকডাকা ভোরে হোটেল রেস্তোরা ও চায়ের দোকান খুলতে দেখা গেছে। একই অবস্থা রাইপুর, মড়কা হেমায়েতপুর, জোড়পুকুর, বাওট সহড়াবাড়িয়া হোগলবাড়িয়া কাজিপুর নওপাড়াসহ অন্যান্য বাজারে। গভীর রাতে কয়েকটি গ্রামের চায়ের দোকানে টেলিভিশনের সামনে বসে উদাম নাচ উপভোগ করতে দেখা গেছে।
চায়ের দোকানে বসে থাকা কয়েকজন জানান, বড় বড় মার্কেট গো হাট খোলা তাতে সমস্যা নেই অথচ গরীব মানুষের চায়ের দোকান নিয়ে সকলের মাথা ব্যাথা। কেউ কেউ বলছে, সারাদিন কাজ করে বাড়ির দুটো ডালভাত খেয়ে চায়ের দোকানে বসে সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যার আগেই যদি সব বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে চায়ের দোকানীর যেমন আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে তেমনি সাধারণ মানুষের অবসাদ বলে কিছুই থাকবে না।
গ্রামাঞ্চলের লোকজনের এ দাবী অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। তারা বলছেন সীমান্ত এলাকার গ্রামই নয়, সাধারণ মানুষ করোনার প্রতি উদাসীন হওয়ায় শহরের চেয়ে গ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এক্ষেত্রে শহর স্বাভাবিক রেখে গ্রামাঞ্চলের দোকানপাট বন্ধ করা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করণে পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
বামন্দী বাজার কমিটির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আওয়াল হোসেন জানান, দোকানপাট চলছে এবং চলেছে। পুলিশ প্রশাসন দোকান বন্ধে সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটির সহযোগিতা চাইলে তা দেয়া হবে। কিন্তু পুলিশি তৎপরতা না থাকায় এমনটি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে চায়ের দোকান বন্ধে ক্যাম্প পুলিশ টহল দিলেই তা বন্ধ হয়ে যাবে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, সবখানে একই ভাবে বন্ধ সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও পুলিশ চেষ্টা করছে বিধি নিষেধ আরোপের বিষয়টি বাস্তবায়নে। বিভিন্ন এলাকার পুলিশ ক্যাম্পে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান, প্রশাসন বেশ তৎপর রয়েছে। করোনা বিস্তার রোধকল্পে যা যা করণীয় তাই করা হবে। কোন স্থানে বিধি ভঙ্গের ব্যাপারে জানতে পারলে পুলিশ বাহিনীকে সাথে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাচল করতে অনুরোধ জানান।