
তৌহিদুল ইসলাম চঞ্চল, বিশেষ প্রতিনিধি
লালমনিরহাট সদর থানার সামনে ৫ টি মৃত মুরগী নিয়ে হাজির হন বৃদ্ধা রশিদা বেগম। সে সময় তার কান্না দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন থানা চত্বরে উপস্থিত লোকজন ও সদর থানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।
শনিবার-৫ এপ্রিল- বিকেলে ঘটা এই হৃদয় বিদারক ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন লালমনিরহাটের প্রবীণ সাংবাদিক জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না। পরে তার ধারণকৃত সেই ভিডিও তিনি ফেসবুকে পোস্ট করলে বিষয়টিতে দুঃখপ্রকাশ করেন অনেকেই।
জানা যায়, রশিদা বেগম লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি ভিক্ষা করে মানুষের দেয়া টাকায় চারটি মুরগি কেনেন। আপন সন্তানের মতো মুরগীগুলোর যত্ন নিতেন। বাচ্চাসহ তার মোট এগারটি মুরগী ছিল। শনিবার সকালে তিনি মুরগীগুলোকে খাবার দেয়ার পর সেগুলোকে বাড়ির উঠোনে ছেড়ে দেন। প্রতিবেশী একজনকে মুরগীগুলো দেখে রাখতে বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। পরে বাড়ি ফিরে দেখেন যে তার সবগুলো মুরগী মারা গেছে। তখন তিনি প্রমাণ স্বরূপ ৫ টি মুরগী নিয়ে থানায় আসেন। থানায় এসেই করুন সুরে কাঁদতে থাকেন।
রশিদা বেগম বলেন, “ভিক্ষা করে মুরগীগুলো কিনেছিলাম। শুত্রুতা করে কেউ মেরে ফেলেছে। কিন্তু কে মেরেছে তা জানিনা। এগুলোই আমার সম্বল ছিল । ডিম বিক্রি করে কিছু টাকা আয় হতো। কিছু ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে সেগুলোকে বড় করার ইচ্ছা ছিল। আমি গরীব মানুষ কার কি ক্ষতি করেছি যে আমার এই মুরগীগুলোকে মেরে ফেললো? আমি এর বিচার চাই। তাই মৃত ৫ টি মুরগী নিয়ে থানায় এসেছি।”
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, “রশিদা বেগম ৫টি মৃত মুরগি নিয়ে বিচার চাইতে এসেছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। তবে তিনি কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে চলে যান।
ওসি আরও বলেন, “মুরগীগুলোর মৃত্যুর কারণ জানতে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নারীর সন্দেহভাজন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। প্রয়োজনে মৃত মুরগিগুলোর ময়নাতদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রাণীসম্পদ বিভাগে পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।