সন্তানকে কুপিয়ে খুন করলো বাবা, মাতারবাড়িতে যুবক খুন, কুমিল্লার যুবকের লাশ মিলল প্যারাবনে
মহেশখালীতে আলাদা ঘটনায় দুইজন খুন ও এক জনের রহস্যজনক মরদেহ পাওয়াগেছে। উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নে ঘুমান্ত অবস্থায় পিতা ও সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়েছে সন্তান। জোবায়ের নামের ওই যুবককে কুপিয়ে খুন করা হয়।
অপরদিকে উপজেলার মাতারবাড়িতে দুলাভাই এর হাতে খুন হয়েছে শ্যালক। মহেশখালী পৌরসভার চরপাড়া এলাকার প্যারাবনের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কুমিল্লার এক যুবকের রহস্যজনক মরদেহ। পুলিশের আলাদা ইউনিট ঘটনার অনুসন্ধানে নেমেছে। শাপলাপুরের ঘটনায় ঘাতক বাবাসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সরজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে জানাগেছে -সোমবার রাত দেড়টার দিকে শাপলাপুরের জামির ছড়ি এলাকায় জমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের জের ধরে খুন হয় জোবায়ের আহমদ (৩২) নামের এক যুবক । জোবায়েরের সৎ মায়ের সন্তানগণ, পিতা আলতাজ মিয়া ও কিছু ভাড়াটে সন্ত্রাসী তাকে কুপিয়ে খুন করে। স্থানীয় প্রত্যদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায় -আলতাজ মিয়ার চার স্ত্রীর মধ্যে প্রথম স্ত্রীর সন্তান জোবায়ের।
প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল আলতাজের। এ বিরোধের জের ধরে গভীর রাতে ঘরের দরোজা ভেঙ্গে ঢুকে জোবায়ের এর মা ও ভাই-বোনসহ বাড়ির ৫ সদস্যকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। এতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে জোবাইরের মৃত্যু হয়। তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। আহত অপর চার জনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনার পরপরই শাপলাপুর থেকে পুলিশ ঘাতক পিতা আলতাজ ও নিহত জোবায়ের এর এক সৎ ভাইকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় অন্য আহতরা হলেন জোবায়ের এর ভাই মোহাম্মদ ফয়সাল, মা জান্নাতআরা বেগম, বোন জুনু বেগম এবং জুনু বেগমের মেয়ে শামিমা।
নিহত জোবায়ের চট্টগ্রামের একটি ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
এদিকে উপজেলার মাতারবাড়িতে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে দুলাভাই এর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে শ্যালক কফিল উদ্দিন (২৮)। সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাতারবাড়ির উত্তর রাজঘাট বাজার এলাকায় ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে আপন দুলাভাই মোহাম্মদ রুবেল তার শ্যালক কপিল উদ্দিনকে বুকে ছুরিকাঘাত করে। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসা চলা অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে যুবক কফিলের মৃত্যু হয়।
এ সব বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হাই জানান -এ সব ঘটনায় গতকাল রাত ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ মামলার এজাহার নিয়ে আসেনি। তবে ঘটনার পর থেকে পুলিশের আলাদা ইউনিট মাঠে কাজ করছে।
শাপলাপুরের ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাগুলোই জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে রয়েছে।
তিনটি ঘটনাই গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে মহেশখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান -তিনটি ঘটনার বিষয়েই পুলিশ নিবিড় ভাবে অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে শাপলাপুরের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ ২ জন গ্রেফতার হয়েছে, বাকিদেরও গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যহত আছে।