Dhaka , Tuesday, 17 September 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
মহানবী (সা.) এর পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ -ধর্ম উপদেষ্টা।। শেখ মুজিবকে চিরতরে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা- এস.এম.ফজলুল হক।। মীর নোয়াবুল হক মেমোরিয়াল হাইস্কুলে পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।। ঝালকাঠিতে গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু।। চট্টগ্রামে ভূমি অফিস পরিদর্শনকালে আবেদনকারীর হাতে ই-নামজারি খতিয়ান তুলে দিলেন ভূমি উপদেষ্টা।। রূপগঞ্জে বিসমিল্লাহ আড়তের দখল ও প্রদেয় টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন।। নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ।। আহত সিলেটের কাউন্সিলর আফতাব হোসেন এর ভাতিজার অবস্থা আশঙ্কাজনক।। রামগঞ্জে নানা আয়োজনে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন।। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলো রামু বিএনপির সভাপতি মোক্তার।। তিতাসে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উদযাপন উপলক্ষ্যে আনন্দ র‍্যালী ও সভা অনুষ্ঠিত।। ঈদগড়ে গভীর রাতে বসতবাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি -নগদ টাকাসহ মোবাইল লুট।। তারাকান্দায় রেজভীয়া দরবার শরীফের অনুসারীদের উপড় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের হামলা যানবাহন ভাংচুর আহত-৫।। চাঁদাবাজি হত্যার হুমকিতে ২০ দিন নেই কর্মস্থলে।। লক্ষ্মীপুরে মাছঘাট দখল করে পদ হারালেন যুবদল নেতা।। তাহিরপুর সীমান্তে কোয়ারি ধ্বসে কয়লা শ্রমিক নিহত।। লাকসামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু।। রাসুলের (স.)আদর্শের বিকল্প নেই -ধর্ম উপদেষ্টা।। বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ নেতা আটক।। রাজধানীর দক্ষিণখানে বাড়ি ভাংচুর লুটপাট ও বাড়িওয়ালাকে হত্যার হুমকি- মামলা দায়ের।। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদদের স্মরণে দুর্গাপুরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।। কক্সবাজারর টেকনাফর আলী ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক।। চাঁদপুরে বৃষ্টিতে জনজীবন স্থবির।। ক্রীড়া জগতে বৈষম্য দূর করতে কাজ করবো মাসুদুজ্জামান।। সীতাকুণ্ড বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ,অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।। মোংলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে জামায়াতের প্রীতি সমাবেশ।। রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত।। জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সুন্দরগঞ্জে বিক্ষোভ।। পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত আহত সাতজন।। বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে সাবেক এমপি কিরনের কারখানার শ্রমিকদের মানববন্ধন।।

ভোলার রাজাপুরে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 10:29:27 am, Monday, 28 August 2023
  • 158 বার পড়া হয়েছে

ভোলার রাজাপুরে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে।।

স্টাফ রিপোর্টার

ভোলা।।

 

ভোলার সদর উপজেলার ১ নং রাজাপুর ইউনিয়ন য়েখানে প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের বসবাস। তবে দুর্ভাগ্য হলেও সত্য,এ ইউনিয়নটি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভাঙছে। এ দীর্ঘ সময় ভাঙ্গনের কারণে কমপক্ষে ১০টি মৌজার কয়েক হাজার একর জমি-বাড়িঘর ভেঙ্গে ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিবছর এমনি ভাবে এ ইউনিয়নটি নদী গর্বে বিলীন হয়ে যেতে যেতে আয়তনে অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে। এমনিভাবে নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে প্রতিবছর চরম দুর্ভোগে পড়েন এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

২৮ আগষ্ট সোমবার বেলা ১২ টার সময় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাজাপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের কন্দ্রকপুর গ্রামের কোড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উত্তাল সেই নদীর দূরত্ব মাত্র ৩৫-৪০ হাত দূরে। শঙ্কার কথা হলো বিদ্যালয়ের পাশের মসজিদের বিশাল পুকুর। সম্প্রতি পুকুরের উত্তরপাড় ভেঙে নদী এসে বিদ্যালয়ের মসজিদ ভবন ছুঁই ছুঁই করছে।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভাঙনের মুখে ব্লক ফেলে তীর সংরক্ষণের দাবিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করলেও নদী ভাঙ্গন রোধে আদৌ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ভাঙন প্রতিরোধের কেউ কোনো চেষ্টাও করেনি। তাই বিদ্যালয় ও মসজিদ ভবনটি এখন হুমকির মুখে সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়খাল থেকে মেহেন্দীগঞ্জের চর বাহাদুরপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই নদীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে । এ ভাঙ্গনের ফলে ইতোমধ্যে ২৫০ একর ফসলি জমি নদী গর্বে চলে গেছ। কোথাও কোথাও আবার নদী বসত বাড়ির খুব কাছে চলে আসায় ৫০টি পরিবার অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয় নদীভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০টি মসজিদ-মাদ্রাসা ও প্রায় ৫ হাজার পরিবার। এসব পরিবারগুলোর বসতঘরে ও প্রতিষ্ঠানে অধিকাংশ সময় জোয়ারের পানিতো অকপটে ঢুকেই। তারউপর নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে এবং একটু বৃষ্টি হতেই পানিবন্দী হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এখানকার বাসিন্দারা।

যদিও এর থেকে বাঁচতে ভুক্তভোগী বাসিন্দারা কংক্রিটের ব্লক ফেলে তীর সংরক্ষণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসলেও। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে কয়েকবার ঢাকায় প্রকল্প নকশা তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু এখনো ওই প্রকল্প পাস হয়ে আসেনি।

অস্বাভাবিক জোয়ারে এখানকার বাসিন্দারা পানি বন্দী হওয়ার পাশাপাশি জলাবদ্ধতায় মানুষের ঘর থেকে বেরোনোর রাস্তাঘাট ডুবে যায়। চেনার কোন উপায় থাকে না, দেখে মনে হয়, নদীর মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে ঘর। জোয়ার উঠে মিঝি বাজার থেকে জোড়খাল সড়ক, ছায়েদ আলীর দোকান থেকে উত্তরে রামদাসপুর স্কুল সড়ক, রাজাপুর বানিয়ারচর থেকে জংশন মাদ্রাসা সড়ক, দারগারখাল বাজার থেকে আবদুল খালেক ডাক্তার বাড়ি, চরসিতারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কসহ ১৫টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে একাধিক কালভার্ট।

আরও জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জের অংশ বাদ দিয়ে ভোলার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় আড়াই কিলোমিটার, কন্দ্রকপুরের সাড়ে তিন কিলোমিটার এবং দক্ষিণ রাজাপুরের সোয়া এক কিলোমিটারসহ সোয়া সাত কিলোমিটার তীর অরক্ষিত রয়েছে। দুই বছর আগে রাজাপুরের জোড়খাল পর্যন্ত ব্লক ফেলে কিছুটা ভাঙন প্রতিরোধ করলেও তার পশ্চিমে সাত কিলোমিটারে ভাঙন প্রতিরোধে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে ইউনিয়নের ২, ৩ ও ৪নম্বর ওয়ার্ড সম্পূর্ণ অরক্ষিত। যেখানে ও বেশ কয়েকটি পরিবারের বসতি থাকায় বাঁধের বাইরে কয়েক হাজার একর জমিতে কয়েক শ কোটি টাকার ফসল উৎপাদ করছে তারা। সেই জমিগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়া সময়ের দাবি মাত্র। তা নিয়ে রীতিমত শঙ্কিত সেখানে বসবাসকারী ভুক্তভোগীরা।

নদীভাঙনকবলিত জোড়খাল এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যখন ব্লক ফেলে তীর সংরক্ষণ হয়, তখন পূর্ব দিকে আরও (৩০০ হাত) ছিল। এখন সেই ৩০০ হাত ভেঙে আরও ১০০ হাত ভেঙে নদীর পেটে গিয়ে এখন আমার ঘরের সামনে চলে এসেছে। অমাবস্যা-পূর্ণিমার সময় আমার ঘরে পানি ওঠে।

রাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুহুল আমিন মিজি জানান, তাঁর পরিবারের ১০ একর জমি মেঘনা ও ইলিশা নদী গর্ভে চলে গেছে । কয়েকবার বাড়ি সরিয়ে উত্তর রামদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গড়েছেন। এখন সেটিও ভাঙনের মুখে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জোয়ারে তাঁর ঘর প্লাবিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল হক মিঠু চৌধুরী বলেন, ‘রাজাপুর ইউনিয়ন ২৫ বছর ধরে ভাঙছে। এ দীর্ঘ সময়ে কমপক্ষে ১০টি মৌজার কয়েক হাজার একর জমি-বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ১০টি বিদ্যালয়, বাজার, রাস্তাঘাটসহ পাঁচ হাজার পরিবার হুমকির মুখে আছে।’

পাউবোর ভোলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, জরুরিভিত্তিতে ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও টেক্সটাইল বস্তা ফেলা হবে। সর্বশেষ সদর উপজেলার রাজাপুর, ইলিশা, কাচিয়া, ধনিয়া ও শিবপুর ইউনিয়ন মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার মেঘনার তীর সংরক্ষণের একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য জমা আছে।আশা করি অচিরেই তা পাস হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

মহানবী (সা.) এর পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ -ধর্ম উপদেষ্টা।।

ভোলার রাজাপুরে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে।।

আপডেট সময় : 10:29:27 am, Monday, 28 August 2023

স্টাফ রিপোর্টার

ভোলা।।

 

ভোলার সদর উপজেলার ১ নং রাজাপুর ইউনিয়ন য়েখানে প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের বসবাস। তবে দুর্ভাগ্য হলেও সত্য,এ ইউনিয়নটি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভাঙছে। এ দীর্ঘ সময় ভাঙ্গনের কারণে কমপক্ষে ১০টি মৌজার কয়েক হাজার একর জমি-বাড়িঘর ভেঙ্গে ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিবছর এমনি ভাবে এ ইউনিয়নটি নদী গর্বে বিলীন হয়ে যেতে যেতে আয়তনে অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে। এমনিভাবে নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে প্রতিবছর চরম দুর্ভোগে পড়েন এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

২৮ আগষ্ট সোমবার বেলা ১২ টার সময় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাজাপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের কন্দ্রকপুর গ্রামের কোড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উত্তাল সেই নদীর দূরত্ব মাত্র ৩৫-৪০ হাত দূরে। শঙ্কার কথা হলো বিদ্যালয়ের পাশের মসজিদের বিশাল পুকুর। সম্প্রতি পুকুরের উত্তরপাড় ভেঙে নদী এসে বিদ্যালয়ের মসজিদ ভবন ছুঁই ছুঁই করছে।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভাঙনের মুখে ব্লক ফেলে তীর সংরক্ষণের দাবিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করলেও নদী ভাঙ্গন রোধে আদৌ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ভাঙন প্রতিরোধের কেউ কোনো চেষ্টাও করেনি। তাই বিদ্যালয় ও মসজিদ ভবনটি এখন হুমকির মুখে সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়খাল থেকে মেহেন্দীগঞ্জের চর বাহাদুরপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই নদীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে । এ ভাঙ্গনের ফলে ইতোমধ্যে ২৫০ একর ফসলি জমি নদী গর্বে চলে গেছ। কোথাও কোথাও আবার নদী বসত বাড়ির খুব কাছে চলে আসায় ৫০টি পরিবার অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয় নদীভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০টি মসজিদ-মাদ্রাসা ও প্রায় ৫ হাজার পরিবার। এসব পরিবারগুলোর বসতঘরে ও প্রতিষ্ঠানে অধিকাংশ সময় জোয়ারের পানিতো অকপটে ঢুকেই। তারউপর নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে এবং একটু বৃষ্টি হতেই পানিবন্দী হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এখানকার বাসিন্দারা।

যদিও এর থেকে বাঁচতে ভুক্তভোগী বাসিন্দারা কংক্রিটের ব্লক ফেলে তীর সংরক্ষণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসলেও। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে কয়েকবার ঢাকায় প্রকল্প নকশা তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু এখনো ওই প্রকল্প পাস হয়ে আসেনি।

অস্বাভাবিক জোয়ারে এখানকার বাসিন্দারা পানি বন্দী হওয়ার পাশাপাশি জলাবদ্ধতায় মানুষের ঘর থেকে বেরোনোর রাস্তাঘাট ডুবে যায়। চেনার কোন উপায় থাকে না, দেখে মনে হয়, নদীর মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে ঘর। জোয়ার উঠে মিঝি বাজার থেকে জোড়খাল সড়ক, ছায়েদ আলীর দোকান থেকে উত্তরে রামদাসপুর স্কুল সড়ক, রাজাপুর বানিয়ারচর থেকে জংশন মাদ্রাসা সড়ক, দারগারখাল বাজার থেকে আবদুল খালেক ডাক্তার বাড়ি, চরসিতারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কসহ ১৫টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে একাধিক কালভার্ট।

আরও জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জের অংশ বাদ দিয়ে ভোলার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় আড়াই কিলোমিটার, কন্দ্রকপুরের সাড়ে তিন কিলোমিটার এবং দক্ষিণ রাজাপুরের সোয়া এক কিলোমিটারসহ সোয়া সাত কিলোমিটার তীর অরক্ষিত রয়েছে। দুই বছর আগে রাজাপুরের জোড়খাল পর্যন্ত ব্লক ফেলে কিছুটা ভাঙন প্রতিরোধ করলেও তার পশ্চিমে সাত কিলোমিটারে ভাঙন প্রতিরোধে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে ইউনিয়নের ২, ৩ ও ৪নম্বর ওয়ার্ড সম্পূর্ণ অরক্ষিত। যেখানে ও বেশ কয়েকটি পরিবারের বসতি থাকায় বাঁধের বাইরে কয়েক হাজার একর জমিতে কয়েক শ কোটি টাকার ফসল উৎপাদ করছে তারা। সেই জমিগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়া সময়ের দাবি মাত্র। তা নিয়ে রীতিমত শঙ্কিত সেখানে বসবাসকারী ভুক্তভোগীরা।

নদীভাঙনকবলিত জোড়খাল এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যখন ব্লক ফেলে তীর সংরক্ষণ হয়, তখন পূর্ব দিকে আরও (৩০০ হাত) ছিল। এখন সেই ৩০০ হাত ভেঙে আরও ১০০ হাত ভেঙে নদীর পেটে গিয়ে এখন আমার ঘরের সামনে চলে এসেছে। অমাবস্যা-পূর্ণিমার সময় আমার ঘরে পানি ওঠে।

রাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুহুল আমিন মিজি জানান, তাঁর পরিবারের ১০ একর জমি মেঘনা ও ইলিশা নদী গর্ভে চলে গেছে । কয়েকবার বাড়ি সরিয়ে উত্তর রামদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গড়েছেন। এখন সেটিও ভাঙনের মুখে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জোয়ারে তাঁর ঘর প্লাবিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল হক মিঠু চৌধুরী বলেন, ‘রাজাপুর ইউনিয়ন ২৫ বছর ধরে ভাঙছে। এ দীর্ঘ সময়ে কমপক্ষে ১০টি মৌজার কয়েক হাজার একর জমি-বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ১০টি বিদ্যালয়, বাজার, রাস্তাঘাটসহ পাঁচ হাজার পরিবার হুমকির মুখে আছে।’

পাউবোর ভোলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, জরুরিভিত্তিতে ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও টেক্সটাইল বস্তা ফেলা হবে। সর্বশেষ সদর উপজেলার রাজাপুর, ইলিশা, কাচিয়া, ধনিয়া ও শিবপুর ইউনিয়ন মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার মেঘনার তীর সংরক্ষণের একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য জমা আছে।আশা করি অচিরেই তা পাস হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।