Dhaka , Wednesday, 30 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
লালমনিরহাটে হাতীবান্ধা থানায় মাদক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম লালমনিরহাটে তিস্তার পানি কমতে শুরু করলেও পানিবন্দি হাজারো পরিবার, দুর্ভোগ চরমে লালমনিরহাটে সনাকের দুর্নীতিবিরোধী অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা সম্পন্ন: স্থানীয় পর্যায়ে আন্দোলন জোরদারের অঙ্গীকার রামগঞ্জে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘শফি ডাকাত’ গ্রেনেড-অস্ত্রসহ গ্রেফতার, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যাবের অভিযান রাতের আঁধারে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ২ হাজার পান গাছ কর্তন! সতর্কতা: দেশের সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস, বেগ হতে পারে ৬০ কিমি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ দিয়ে কৃতি শিক্ষার্থী সম্বর্ধনা,পাশেই উপজেলা পরিষদের হলরুম জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজন সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়: – মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন শফিউল বারী বাবু ছিলেন বিএনপির রাজনীতির এক নির্ভিক সৈনিক :-নাজিমুর রহমান জৈন্তাপুরে ১০,০০০ বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপন অভিযান এর উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক, সিলেট ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে গভীর রাতে তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ ধর্ষণ- ধর্ষক গ্রেফতার । মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার আম্বিয়া সেরীন আবাসিক এপার্টমেন্ট ভবনে ১৫ বিজিবির বড় আঘাত: কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও ইস্কাফ সিরাপ জব্দ শরীয়তপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামীর শাবলের নির্মম আঘাতে স্ত্রী নিহত শিক্ষক, বাবা ও মাকে ফুল কিনে দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ করেছেন – শিক্ষা উপদেষ্টা। বাঘ শুধু প্রাণী নয়, আমাদের অহংকার—চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেত্রকোণার দুর্গাপুরে কমরেড মণি সিংহের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী পালিত রূপগঞ্জে মুচলেকা দেওয়ার পরও  মাদকসহ এলাকাবাসীর কাছে আটক জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও সম্মুখ যোদ্ধাদের ক্রেস্ট ও সন্মাননা প্রদান, সপ্তাহ ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ: রেল দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ লালমনিরহাটে ট্রেন সংঘর্ষ: বিজিবি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেল বিস্তারিত সীমান্তজুড়ে ১৫ বিজিবি’র সফল মাদকবিরোধী অভিযান: বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও ফেনসিডিল আদিতমারীতে জমি বিবাদে রক্তপাত: ৮৫ বছরের বৃদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু, আটক দুই নরসিংদীর রায়পুরায় অস্ত্র ও গুলি সহ দুই নারী গ্রেফতার রূপগঞ্জে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য যুবকের লাশ কবর থেকে উত্তেলন পুলিশ এখন আই উইটনেস হয়েছে, বিচার পক্রিয়া শুরু হয়েছে :- হুম্মাম কাদের নবাবগঞ্জের বক্সনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ, নিরব প্রশাসন সীতাকুণ্ডে ১০ লাখ টাকার অবৈধ সিগারেটসহ গ্রেপ্তার ১ রামগঞ্জে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

জীবিকার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন জুনায়েদ।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 09:08:57 am, Wednesday, 31 July 2024
  • 50 বার পড়া হয়েছে

জীবিকার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন জুনায়েদ।।

মো: আব্দুর রহিম

শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।

   

অভাবের সংসারে তিনবেলা খাওয়া ও ছোটভাই-বোনদের পড়াশোনায় সহযোগীতা করতে নিজে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর এগোতে পারেনি জুনায়েদ। বাবা অন্যের জমিতে কৃষি কাজ ও দিনমজুরের কাজ করে সংসারের হাল ঠিক রাখতে পারেন না- তাই কাজের সন্ধানে বের হয়ে ঢাকায় একটি কম্পিউটারের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করে জুনায়েদ।

বলছিলাম শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের বিলদেওনিয়া এলাকার বাসিন্দা শাহআলম ফরাজির বড় ছেলে মো: জুনায়েদ হোসেনের -১৭- কথা। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার সময়  গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন জুনায়েদ হোসেন।

জানা যায়- গত ১৯ জুলাই বিকেলে জুনায়েদ তার কর্মস্থল মিরপুর ১০ এ অবস্থিত আইটি গ্যালারি নামের কম্পিউটারের দোকান বন্ধ করে মিরপুর ২ এলাকার বাসায় ফিরছিল। তখন সেখানকার সড়কে সংঘর্ষ শুরু হলে জুনায়েদ আবারো তার কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলে বুক বরাবর বাম পাশের পিছন দিক দিয়ে একটি গুলি বিদ্ধ হয়ে সামনে দিয়ে বেড়িয়ে যায়। পরে পথচারীরা তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী  হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে প্রেরণ করলে সেখানে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধা সোয়া ৭ টার দিকে তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

নিহত জুনায়েদের কর্মস্থল আইটি গ্যালারির মালিক সবুজ আলম মুঠোফোনে বলেন, “জুনায়েদ অত্যন্ত শান্ত ও ভদ্র একটি ছেলে ছিল। সবসময় মনোযোগ দিয়ে কাজ করতো। ঐদিন -১৯ জুলাই- যখন মিরপুর ১০ এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয় তখন আমি জুনায়েদসহ আমার দোকানের ৪ কর্মচারীকে দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে চলে আসতে বলি। তার কিছুক্ষণ পরে ফোনে জানতে পারি জুনায়েদ বাড়ীতে আসার সময়  গুলিতে আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তখন হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি জুনায়েদ মারা গেছে। তিনি আরো জানান- ঐদিন আমাদের ঐ গলিতে জুনায়েদসহ আরো ৩-৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। এরমধ্যে ওখানকার এক বাড়ীর দারওয়ান ও চা খেতে আসা এক লোক ছিল।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- জুনায়েদের পরিবারে তার আরো ২ ভাই ও এক বোন রয়েছে। তারা সবাই বিভিন্ন স্কুল কলেজে পড়াশোনা করছে। তাদের মধ্যে জুনায়েদই সবার বড়। এছাড়াও তার পরিবারে রয়েছে বাবা- মা ও তার দাদী। জুনায়েদের পরিবারে উপার্জনক্ষম হিসেবে বাবা শাহআলম ফরাজী ও জুনায়েদ নিজে। তাদের দুজনের আয় দিয়েই সংসার চলতো। জুনায়েদকে হারিয়ে পরিবারটি খুবই ভেঙ্গে পড়েছে।

শনিবার -৩০ জুলাই- জুনায়েদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়- তাকে বাড়ীর সামনে সড়কের পাশেই দাফন করা হয়েছে। তার বাবা- মা- দাদী সহ ছোট ভাইবোনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। জুনায়েদের মা ডলি বেগম বার বার জুনায়েদের কবরের কাছে গিয়ে  কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন। আর বলছেন- ওরা কেন আমার বুকের ধন কেড়ে নিলো। আমার ছেলেতো কারো কোন ক্ষতি করেনি। আমি এখন কার কাছে এই বিচার চাইবো।

নিহত জুনায়েদের বাবা শাহআলম ফরাজি  বলেন- আমাদের বাড়ী ছাড়া নিজেদের আর কোন জমিজমা নেই। আমি অন্যের জমিতে কাজ করি। তাই সংসার চালাতে সহযোগীতা করতে আমার বড় ছেলে জুনায়েদ ঢাকায় একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে প্রতিমাসে ৮-১০ হাজার টাকা পাঠাতো। তা দিয়েই বাকী ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা আর ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতাম। এখন আমি অথৈ সাগরে ভেসে গেলাম। আমার জুনায়েদ মারা যাওয়ার দুই ঘন্টা আগেও ওর মা ও আমার সাথে ফোন করে কথা বলেছিল। বলেছিল দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে চলে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাশ হয়ে ফিরল আমার ছেলেটি। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম  বলেন- জুনায়েদ ছেলেটি খুবই দায়িত্বশীল ও ভদ্র প্রকৃতির ছিল। কখনো কারো সাথে গায়-গেঞ্জামে যেতো না। সে মারা যাওয়ায় পরিবারটি খুবই বিপাকে পড়েছে। কেননা জুনায়েদ যা টাকা আয় করে পাঠাতো তা এবং ওর বাবার দিনমজুরির টাকা দিয়ে পরিবারটি কোনরকমে চলছিল। এখন সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহযোগীতা পেলে হয়তো কোনরকমে চলতে পারবে পরিবারটি। নয়তো জুনায়েদের ছোটভাইবোনের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে  রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু আলেম মাদবর বলেন- আমার বাড়ির পাশেই জুনায়েদদের বাড়ি। সম্পর্কে সে আমার ভাতিজা হয়। পরিবারের হাল ধরতে বড় ছেলে হিসেবে জুনায়েদ ঢাকার একটি কম্পিউটার দোকানে কাজে গিয়েছিলো। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তার পরিবারকে সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করবো।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

লালমনিরহাটে হাতীবান্ধা থানায় মাদক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম

জীবিকার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন জুনায়েদ।।

আপডেট সময় : 09:08:57 am, Wednesday, 31 July 2024

মো: আব্দুর রহিম

শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।

   

অভাবের সংসারে তিনবেলা খাওয়া ও ছোটভাই-বোনদের পড়াশোনায় সহযোগীতা করতে নিজে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর এগোতে পারেনি জুনায়েদ। বাবা অন্যের জমিতে কৃষি কাজ ও দিনমজুরের কাজ করে সংসারের হাল ঠিক রাখতে পারেন না- তাই কাজের সন্ধানে বের হয়ে ঢাকায় একটি কম্পিউটারের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করে জুনায়েদ।

বলছিলাম শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের বিলদেওনিয়া এলাকার বাসিন্দা শাহআলম ফরাজির বড় ছেলে মো: জুনায়েদ হোসেনের -১৭- কথা। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার সময়  গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন জুনায়েদ হোসেন।

জানা যায়- গত ১৯ জুলাই বিকেলে জুনায়েদ তার কর্মস্থল মিরপুর ১০ এ অবস্থিত আইটি গ্যালারি নামের কম্পিউটারের দোকান বন্ধ করে মিরপুর ২ এলাকার বাসায় ফিরছিল। তখন সেখানকার সড়কে সংঘর্ষ শুরু হলে জুনায়েদ আবারো তার কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলে বুক বরাবর বাম পাশের পিছন দিক দিয়ে একটি গুলি বিদ্ধ হয়ে সামনে দিয়ে বেড়িয়ে যায়। পরে পথচারীরা তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী  হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে প্রেরণ করলে সেখানে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধা সোয়া ৭ টার দিকে তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

নিহত জুনায়েদের কর্মস্থল আইটি গ্যালারির মালিক সবুজ আলম মুঠোফোনে বলেন, “জুনায়েদ অত্যন্ত শান্ত ও ভদ্র একটি ছেলে ছিল। সবসময় মনোযোগ দিয়ে কাজ করতো। ঐদিন -১৯ জুলাই- যখন মিরপুর ১০ এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয় তখন আমি জুনায়েদসহ আমার দোকানের ৪ কর্মচারীকে দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে চলে আসতে বলি। তার কিছুক্ষণ পরে ফোনে জানতে পারি জুনায়েদ বাড়ীতে আসার সময়  গুলিতে আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তখন হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি জুনায়েদ মারা গেছে। তিনি আরো জানান- ঐদিন আমাদের ঐ গলিতে জুনায়েদসহ আরো ৩-৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। এরমধ্যে ওখানকার এক বাড়ীর দারওয়ান ও চা খেতে আসা এক লোক ছিল।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- জুনায়েদের পরিবারে তার আরো ২ ভাই ও এক বোন রয়েছে। তারা সবাই বিভিন্ন স্কুল কলেজে পড়াশোনা করছে। তাদের মধ্যে জুনায়েদই সবার বড়। এছাড়াও তার পরিবারে রয়েছে বাবা- মা ও তার দাদী। জুনায়েদের পরিবারে উপার্জনক্ষম হিসেবে বাবা শাহআলম ফরাজী ও জুনায়েদ নিজে। তাদের দুজনের আয় দিয়েই সংসার চলতো। জুনায়েদকে হারিয়ে পরিবারটি খুবই ভেঙ্গে পড়েছে।

শনিবার -৩০ জুলাই- জুনায়েদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়- তাকে বাড়ীর সামনে সড়কের পাশেই দাফন করা হয়েছে। তার বাবা- মা- দাদী সহ ছোট ভাইবোনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। জুনায়েদের মা ডলি বেগম বার বার জুনায়েদের কবরের কাছে গিয়ে  কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন। আর বলছেন- ওরা কেন আমার বুকের ধন কেড়ে নিলো। আমার ছেলেতো কারো কোন ক্ষতি করেনি। আমি এখন কার কাছে এই বিচার চাইবো।

নিহত জুনায়েদের বাবা শাহআলম ফরাজি  বলেন- আমাদের বাড়ী ছাড়া নিজেদের আর কোন জমিজমা নেই। আমি অন্যের জমিতে কাজ করি। তাই সংসার চালাতে সহযোগীতা করতে আমার বড় ছেলে জুনায়েদ ঢাকায় একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে প্রতিমাসে ৮-১০ হাজার টাকা পাঠাতো। তা দিয়েই বাকী ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা আর ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতাম। এখন আমি অথৈ সাগরে ভেসে গেলাম। আমার জুনায়েদ মারা যাওয়ার দুই ঘন্টা আগেও ওর মা ও আমার সাথে ফোন করে কথা বলেছিল। বলেছিল দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে চলে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাশ হয়ে ফিরল আমার ছেলেটি। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম  বলেন- জুনায়েদ ছেলেটি খুবই দায়িত্বশীল ও ভদ্র প্রকৃতির ছিল। কখনো কারো সাথে গায়-গেঞ্জামে যেতো না। সে মারা যাওয়ায় পরিবারটি খুবই বিপাকে পড়েছে। কেননা জুনায়েদ যা টাকা আয় করে পাঠাতো তা এবং ওর বাবার দিনমজুরির টাকা দিয়ে পরিবারটি কোনরকমে চলছিল। এখন সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহযোগীতা পেলে হয়তো কোনরকমে চলতে পারবে পরিবারটি। নয়তো জুনায়েদের ছোটভাইবোনের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে  রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু আলেম মাদবর বলেন- আমার বাড়ির পাশেই জুনায়েদদের বাড়ি। সম্পর্কে সে আমার ভাতিজা হয়। পরিবারের হাল ধরতে বড় ছেলে হিসেবে জুনায়েদ ঢাকার একটি কম্পিউটার দোকানে কাজে গিয়েছিলো। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তার পরিবারকে সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করবো।