মাহবুবুর রহমান শান্ত, সিটি রিপোর্টার।।
রাজধানীর কদমতলীতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এক নারী ব্যাবসায়ী বিষপান করেছে। চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ কদমতলীতে সাবিনা মোস্তারী রুপা (৩২) নামে এক নারী ব্যাবসায়ী বিষপানের মাধ্যমে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা ম্যাচ ওয়াসা গেটে প্রকাশ্যে লোকজনের সামেন বিষপান করেন। তার স্বামী জয়নাল ও স্বজনরা রুপাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ম তলায় ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বিষপানের আগে রুপা তার ব্যবহৃত স্নিগ্ধা স্নিগ্ধা এনজেল নামে ফেসবুক আইডিতে লেখেন, আসসালামু আলাইকুম, কিছু কথা না বললেই নয়। ঢাকা ম্যাচ এরিয়ায় ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য যেই সংগ্রাম যুদ্ধ করেছি, সেই যুদ্ধে আমি পরাজয় শিকার করে নিজের জীবন নিজে দিয়ে দিতে বাধ্য হলাম। ঢাকা ম্যাচ জোর যার মুল্লুক তার। আমি মেয়ে মানুষ একটা ফেক্টুরিতে ব্যবসা করে ষাট হাজার টাকা ইনকাম করতাম। তার অর্ধেক দিয়ে দিতাম সোলেমানের মাকে। তবুও কেন আমি চাঁদাবাজ এসকে মামুনের ছোট ভাই বাবু আমার গত মাসের টাকা নিয়ে গেছে। নবী হোসেন আর এসকে মামুনের ছোট ভাই বাবু আমার গত মাসের টাকা নিয়ে গেছে। নবী হোসেন আর এসকে মামুনের ছোট ভাই দ’ুজন মিলে আমার ইনকামের রাস্তা বন্ধ করে দিল। এই দুনিয়াতে খেয়ে পরে বাঁচার অধিকার সবার আছে। আমি যেহেতেু সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হলাম । তা-ই না বাঁচার সিদ্ধান্তই আমার জন্য শ্রেয়। চলার পথে অনেকের সাথে ভুলভ্রান্তি করেছি সবাই নিজগুনে ক্ষমা করে দিয়েন। আমার আত্মহত্যার জন্য এই মানুষগুলোই দায়ী।
রুপার স্বামী জয়নাল বলেন, আমার স্ত্রী রুপা ঢাকা ম্যাচ খান রোলিং মিলের কাচরা নিয়ে ব্যবসা করেন। তার সাথে পাটনার বাবু নামের এক ব্যক্তিকে নেন। নবী হোসেন আর এসকে মামুনের ছোট ভাই বাবু আমার স্ত্রীর টাকা নিয়ে গেছে এবং তার ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে শ্যামপুর জোনের এসির অফিসে গিয়ে জানালে এসি তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। এতে আমার স্ত্রীর উপার্জনের পথ বন্ধ হওয়ায় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ম তলায় ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢাকা ম্যাচ ওয়াসা গেটের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুপা দীর্ঘ তিন বছর ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছেন। এমনও সময় গেছে মাসে ৬ হাজার টাকা ব্যবসা করতে কষ্ট হয়েছে। এখন ৫০/৬০ হাজার টাকার মতো মাসিক ব্যবসা হয়। এখানে এসকে মামুনের ছোটভাই বাবু ও নবী হোসেন ওই মহিলাকে বিভিন্নভাবে ডিস্ট্রাব করে আসছে। বিষয়টি কদমতলী থানার ওসি ও শ্যামপুর জোনের এসি সাহেব এর কাছে একাধিকবার জানিয়েছে।
শ্যামপুর জোনের এসি সামসুল ইসলাম বলেন, আমি যতটুকু জানি ওই মহিলা শ্যামপুর কোন একটি ফেক্টুরী থেকে কাচরা মালের ব্যবসা করে। সেখানে আরো কয়েকজন একই ব্যবসা করে। ওই ফেক্টুরীর মাল কাকে দিবে সেটা ফেক্টুরীর লোকজন বা মালিক সমিতি জানে। আজ দুপুরে আমার কাছে আসার পর আমি তাকে একথা বলেছি।
তিনি আরো বলেন, মহিলা বলেছে এসকে মামুন, মামুনের ভাই বাবু তাকে ডিস্ট্রাব করে। আমি বলেছি কেউ যদি চাঁদাবাজি করে ব্যবস্যায়ীক কাজে ডিস্ট্রাব করে আপনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন আমরা ব্যবস্থা নিব। পরে জানতে পারলাম ওই মহিলা ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপান করেছে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।