
জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর।।
শরীয়তপুরের সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ও গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে হতদরিদ্র কয়েকটি পরিবারের কাছ থেকে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় এক প্রতারকের বিরুদ্ধে।
উপজেলার ভেদরগঞ্জ পৌরসভার গৈড্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বারবার অভিযোগ দিয়েছেন রাজিয়া ও ফিরোজা বেগম নামে দুজন ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত প্রতারক ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পুটিয়া এলাকার মৃত হাবিবুর রহমান তালুকদার ছেলে মফিজ উদ্দিন তালুকদার। এছাড়াও মফিজ উদ্দিন তালুকদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে অন্যতম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় বেশ কয়েকদিন জেল ও খাটেন তিনি।
গৈড্ডা এলাকার ফিরোজা বেগম নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে মফিজ তালুকদার প্রায় ৩ বছর আগে ২০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু এখনো টিউবওয়েল দেন নি। এখন টিউবওয়েলের টাকা ফেরত চাইলে হুমকি ধামকি দেয়। ওনার এক ভাই সচিব তাই আমরা গরিব মানুষ ভয়ে কথা বলি না। আমি চাই আমার টাকা টা ফেরত দিয়ে দেক।
রাজিয়া বেগম নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, মফিজ উদ্দিন তালুকদার একদিন আমার বাসায় এসে বলে। সরকার নলকূপ দিচ্ছে আপনি চাইলে নিতে পারেন। পরে আমি নিতে কি করতে হবে জানতে চাইলে মফিজ তালুকদার বলেন ৩০ হাজার টাকা লাগবে। আমি তাকে আমার ভোটার আইডি কার্ড ও ২৫ হাজার টাকা দিয়ে দেই। কিন্তু আজ ১০ মাস হলেও আমার টিউবওয়েল ও টাকা কোনটাই পাই নি । আমি তাকে একাধিক বার অনুরোধ করছি কিন্তু সে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। আমরা দরিদ্র মানুষ কার কাছে অভিযোগ করবো। তার ভাই সচিব আমরা অভিযোগ করতে গেলে উল্টো হুমকি দেয় মফিজ তালুকদার। আমি আমার টাকা ফেরত চাই। আমার স্বামী মারা গেছে ৪০ বছর আগে। খুব কষ্ট করে কিস্তি নিয়ে তাকে টাকাটা দিসি। আমি ওর বিচার চাই।
নারায়নপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রাজিব তালুকদার বলেন- মফিজ তালুকদার একজন ভূমিদস্যু,মাদকসেবি ও চাঁদাবাজ। ও কিছুদিন পরপর রিহ্যাবে ভর্তি হয়। নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় কিছুদিন জেল খেটেছে। আমাদের এলাকার অধিকাংশ মানুষ প্রবাসি। প্রবাস থেকে যে কেউ আসলে অথবা কেউ বাড়ি নির্মান করতে গেলে মফিজ কে চাঁদা দিতে হয় না হলে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়। আমি মেম্বার থাকা অবস্থায় শুনেছি অনেকের কাছ থেকে সরকারি টিউবওয়েল, ঘর সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। একাধিক বার বলেও তাকে সংশোধন করতে পারিনি। এতে করে আমাদের বংশিয় সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।মফিজকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত মফিজ তালুকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাজিবুল ইসলাম বলেন- ইতোমধ্যে দুজন ভুক্তভোগী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।