Dhaka , Thursday, 10 October 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ড্যান্টের ছত্রছায়া পূজার ডিউটিতে আনসার থেকে লাখ টাকার বাণিজ্য।। বাজার শেষে মায়ের সাথে বাড়ি ফেরা হলো না ছালমার ব্রীজ থেকে খালে পরে নিখোঁজ।। তিতাসের মজিদপুর ইউনিয়নের পূজামন্ডব পরিদর্শন।। তিতাসের মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ প্রধান অভিযুক্তকে স্বাক্ষী করায় এলাকায় তোলপাড়।। লালপুরে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা টিপুর  গন সমাবেশ।। চট্টগ্রাম বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবসায়ী গ্রুপের ত্রি- বার্ষিক নির্বাচনে বিজয়ী মো.আমির হোসেন ভূইয়া।। ধর্ম উপদেষ্টার সাথে বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ।। সাভারে মাদ্রাসাশিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা।। লক্ষ্মীপুরে ভুয়া সিআইডি গ্রেফতা।। পাবনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় যুবলীগ সভাপতি আটক।। দেবহাটায় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস ও মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উৎযাপিত।। জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে রাজশাহী নগরীতে লফসের ক্যাম্পেইন।। লক্ষ্মীপুরে মাদক দ্রব্য সহ মা-ছেলে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।। দেবহাটা জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা সম্প্রসারিত কর্মশালা।। পাইকগাছায় পাখির জন্য গাছে বাসা স্থাপনের উদ্বোধন করেন- ইউএনও মাহেরা নাজনীন।। ভোলায় নৌবাহিনী অভিযানে ৩ কোটি টাকার অবৈধ জাল জব্দ।। হাটহাজারীতে সন্ধ্যা আরতীর মধ্য দিয়ে ১২৮ পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা শুরু।। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে- ধর্ম উপদেষ্টা।। পীরগাছায় শিক্ষকদের হয়রানির অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন।। পাইকগাছায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফুটবল বিতরণ।। ইব্রাহিম খলিলুল্লাহর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল চিনাডুলী ফাজিল মাদ্রাসা।। সুন্দরগঞ্জে ঘাঘট নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০ পরিবার।। সিলেটে পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলা তদন্ত পিবিআইতে।। ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় আদালতে আরও একটি মাম।। সারা দেশের ন্যায় রামুতে আন্তর্জাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত।। জননী প্রকল্পের মাধ্যমে পীরগাছা উপজেলায় বাল্য বিয়ের পরিণতি ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।। ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরে আবারো ১৪৪ ধারা জা।। এক বর্গফুট ২১৪ টাকার সিলিং ডেকোরেশন ৫৯৫০ টাকামালেক উকিল মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ছালাম ও ঠিকাদার কাকলির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা।। গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেলের বারবার লিফট দুর্ঘটনা।। চট্টগ্রাম- দোহাজারী লাইনে ডেমু ট্রেন চালুর দাবি

পা পিছলে আলুর দম- বরিশালের বেশিরভাগ গ্রামের সড়ক এখনো মাটির পিচ্ছিল পথ।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 11:43:44 am, Sunday, 29 September 2024
  • 6 বার পড়া হয়েছে

পা পিছলে আলুর দম- বরিশালের বেশিরভাগ গ্রামের সড়ক এখনো মাটির পিচ্ছিল পথ।।

আরিফ আহমেদ
বিশেষ প্রতিবেদক।।
    
    
সড়কে পা রাখা মাত্রই পিছলে পরে হাত-পা ভেঙেছেন এই গ্রামের অনেকে। একটু বৃষ্টি হলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রায় ছয়-সাত কিলোমিটার এরকম মাটির সড়ক আর হেরিংবন বা ইটা বিছানো পথ আছে চার-পাঁচ কিলোমিটার। সে পথের অবস্থা আরো ভয়াবহ। শীতকালে কুয়াশায়ও পা পিছলে যায় বলে জানালেন গ্রামবাসী।  বলছিলাম পূর্ব সুন্দরকাঠী গ্রামের কথা। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ইউনিয়নের একরি গ্রাম। গত পনের বছরে এই গ্রামের সড়কের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জ্বল। আর সংসদ সদস্য ছিলেন জাতীয় পার্টির রত্না আমিন। যদিও এলাকায় রত্না আমিন কখনোই কোনো ভূমিকা রাখেননি বলে ঐ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছিলেন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিককে জয়ী করেন।
    
৭ জানুয়ারির সাংবিধানিক নির্বাচনে তিনি জয়ী হলেও দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৫ মাস। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে আগের সংবিধান বাতিল ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় সংবিধানসহ রাষ্ট্র সংস্কার চলমান রয়েছে। যদিও ইতিমধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের আচরণ ও কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষও। ভারতে ইলিশ রপ্তানি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ,  বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং সর্বশেষ শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা চেষ্টা মামলায় সদ্য বিদেশফেরত আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জামিন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে গ্রামীণ জনপদেও। বরিশালের বাকেরগঞ্জের গোমা বাজারের চা দোকানে চলছিল এ নিয়েই বাকবিতন্ডা। দুধল ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য কামরুল, শাহিন ও সিদ্দিক একত্রিত হয়ে  রাঙামাটি নদীর পারের এই গোমা বাজারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। বাহিরে তখন তুমুল বৃষ্টি। এই দুধল ইউনিয়নে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনজন শহীদ হয়েছেন। যাদের দুজনের বাড়ি ইউপি সদস্য শাহিনের গ্রাম সুন্দরকাঠীতে। একজনের বাড়ি কবিরাজ। ইউপি সদস্য সিদ্দিকের এলাকায়। ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর বৃষ্টিভেজা পথে গোমা ফেরীঘাটে দেখে গেছে মাথার উপর এখনো ঝুলে আছে অসমাপ্ত সেতুটি। ইউপি সদস্য ও গ্রামবাসীর আলোচনার বিষয় ছিলো এই গোমা সেতুর বাকীটা কাজ কতদিনে শেষ হবে? তাদের আলোচনা সেতুর নির্মাণ দিয়ে শুরু হয়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া ও সড়কের বেহাল দশায় এসে থমকে যায়। পুর্ব সুন্দরকাঠী গ্রামের গরুর হাট ও স্কুলের মাঠের অবস্থা এবং খালের ওপারে কবাই ইউনিয়ন পর্যন্ত পিচ্ছিল পথ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাসিন্দারা। ইউপি সদস্য শাহিন স্বীকার করেন- তিনি বারবার এই সড়কের কাজ নিয়ে চাপাচাপি করলেও চেয়ারম্যান উজ্জ্বল এ নিয়ে কোনো ভুমিকা আগে রাখতে পারেননি। কারণ রত্না আমিন তো কখনো আমাদের সাথে দেখাই করতেন না। হাফিজ মল্লিক অবশ্য বলেছিলেন, দুধল ও দাড়িয়াল ইউনিয়নের সড়কগুলো খুবই জরুরী ভাবে দেখবেন। তিনিতো পাঁচ মাস ছিলেন। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি গ্রামের দিকে দৃষ্টি দেয় বলে আশার চোখে সমর্থনের জন্য তাকান তিনি উপস্থিত আরো চার-পাঁচ জনের দিকে।
ব্যাস শুরু হয়ে যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার কাজ। গ্রামের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের মুখেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে এদের তীব্র সমালোচনা। ডিম আর সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। ইলিশ প্রসঙ্গ মুখখিস্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সহ সবকিছু তাদের নখদর্পে। গ্রামের মানুষ কতটা সচেতন তা আরো স্পষ্ট হয় ইউপি সদস্য শাহিন এর দেখানো পথে পূর্ব সুন্দরকাঠী গ্রামের ভিতরে হাওলাদার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে। এঁটো কাদা পিচ্ছিল পথ পেরিয়ে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার ভিতরে বৈষম্যবিরোধী  আন্দোলনে ঢাকার বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ সাজিদ হাওলাদার এর সমাধি এই গ্রামে। গ্রামে আসার পথেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাইস্কুল।  যে স্কুলের মাঠে গরুর হাট বসে সপ্তাহে একদিন। হাটু কাদা ভরা মাঠ পার হয়ে একটি ছোট্ট ব্রীজ। ব্রীজের ওপারে ইটা বিছানো পায়েচলা সরু পথ। ইটা বিছানো এই পথে পা রাখা মাত্রই পিছলে পরার উপক্রম হয়েছিল। গ্রামবাসী একজন থাবা দিয়ে ধরে বললেন- সাবধানে ভাই। সাজিদ হাওলাদার এর সম্পর্কে জানতে সরকারি লোকও এই ব্রীজ পর্যন্ত এসে ফিরে গেছেন। এদিকে আর ঢোকেন নাই। তারা যদি সত্যি দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন তাহলে সাজিদ হাওলাদার এর কবর পর্যন্ত অবশ্যই যেতেন।তাহলেই জানতে পারতেন আমাদের গ্রামের জীবন কতটা কষ্টকর। 
ইটা বিছানো এই সড়ক ১ কিলোমিটারের মতো- তারপর আরো ভয়ংকর সরু ও পিচ্ছিল মাটির সড়ক। শহীদ সাজিদ হাওলাদার এর বড়চাচা মোতালেব হাওলাদার থাকেন এখানে গ্রামের বাড়িতে। জানালেন- ৫-৬ কিলোমিটার এরকম মাটির সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল তাদের। যে কারণে সাজিদ হাওলাদার এর বাবা-মা ও স্ত্রী সহ তিন বছরের শিশু সন্তান নিয়ে তারা শহরে থাকেন। গ্রামে আসাযাওয়া খুব কম। তিনি বলেন- বরিশালে চাকুরীজীবি এই গ্রামের অনেক বাসিন্দাও এখন আর গ্রামে আসেন না বলে জানান তিনি।
গ্রামের সড়কের এই পরিস্থিতি তুলে ধরলে বাকেরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন- এটা দেখার দায়িত্ব যদিও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের। তারপরও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে আমি এলজিডির সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। 
সাইফুর রহমান আরো বলেন- বাকেরগঞ্জের দুধল দাঁড়িয়ালসহ চড়াঞ্চলের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এজন্য ১০২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। সেটি অনুমোদন হলে হয়তো এসব কর্দমাক্ত সড়ক আর থাকবে না বলে জানান তিনি। 

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ড্যান্টের ছত্রছায়া পূজার ডিউটিতে আনসার থেকে লাখ টাকার বাণিজ্য।।

পা পিছলে আলুর দম- বরিশালের বেশিরভাগ গ্রামের সড়ক এখনো মাটির পিচ্ছিল পথ।।

আপডেট সময় : 11:43:44 am, Sunday, 29 September 2024
আরিফ আহমেদ
বিশেষ প্রতিবেদক।।
    
    
সড়কে পা রাখা মাত্রই পিছলে পরে হাত-পা ভেঙেছেন এই গ্রামের অনেকে। একটু বৃষ্টি হলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রায় ছয়-সাত কিলোমিটার এরকম মাটির সড়ক আর হেরিংবন বা ইটা বিছানো পথ আছে চার-পাঁচ কিলোমিটার। সে পথের অবস্থা আরো ভয়াবহ। শীতকালে কুয়াশায়ও পা পিছলে যায় বলে জানালেন গ্রামবাসী।  বলছিলাম পূর্ব সুন্দরকাঠী গ্রামের কথা। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ইউনিয়নের একরি গ্রাম। গত পনের বছরে এই গ্রামের সড়কের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জ্বল। আর সংসদ সদস্য ছিলেন জাতীয় পার্টির রত্না আমিন। যদিও এলাকায় রত্না আমিন কখনোই কোনো ভূমিকা রাখেননি বলে ঐ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছিলেন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিককে জয়ী করেন।
    
৭ জানুয়ারির সাংবিধানিক নির্বাচনে তিনি জয়ী হলেও দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৫ মাস। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে আগের সংবিধান বাতিল ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় সংবিধানসহ রাষ্ট্র সংস্কার চলমান রয়েছে। যদিও ইতিমধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের আচরণ ও কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষও। ভারতে ইলিশ রপ্তানি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ,  বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং সর্বশেষ শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা চেষ্টা মামলায় সদ্য বিদেশফেরত আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জামিন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে গ্রামীণ জনপদেও। বরিশালের বাকেরগঞ্জের গোমা বাজারের চা দোকানে চলছিল এ নিয়েই বাকবিতন্ডা। দুধল ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য কামরুল, শাহিন ও সিদ্দিক একত্রিত হয়ে  রাঙামাটি নদীর পারের এই গোমা বাজারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। বাহিরে তখন তুমুল বৃষ্টি। এই দুধল ইউনিয়নে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনজন শহীদ হয়েছেন। যাদের দুজনের বাড়ি ইউপি সদস্য শাহিনের গ্রাম সুন্দরকাঠীতে। একজনের বাড়ি কবিরাজ। ইউপি সদস্য সিদ্দিকের এলাকায়। ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর বৃষ্টিভেজা পথে গোমা ফেরীঘাটে দেখে গেছে মাথার উপর এখনো ঝুলে আছে অসমাপ্ত সেতুটি। ইউপি সদস্য ও গ্রামবাসীর আলোচনার বিষয় ছিলো এই গোমা সেতুর বাকীটা কাজ কতদিনে শেষ হবে? তাদের আলোচনা সেতুর নির্মাণ দিয়ে শুরু হয়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া ও সড়কের বেহাল দশায় এসে থমকে যায়। পুর্ব সুন্দরকাঠী গ্রামের গরুর হাট ও স্কুলের মাঠের অবস্থা এবং খালের ওপারে কবাই ইউনিয়ন পর্যন্ত পিচ্ছিল পথ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাসিন্দারা। ইউপি সদস্য শাহিন স্বীকার করেন- তিনি বারবার এই সড়কের কাজ নিয়ে চাপাচাপি করলেও চেয়ারম্যান উজ্জ্বল এ নিয়ে কোনো ভুমিকা আগে রাখতে পারেননি। কারণ রত্না আমিন তো কখনো আমাদের সাথে দেখাই করতেন না। হাফিজ মল্লিক অবশ্য বলেছিলেন, দুধল ও দাড়িয়াল ইউনিয়নের সড়কগুলো খুবই জরুরী ভাবে দেখবেন। তিনিতো পাঁচ মাস ছিলেন। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি গ্রামের দিকে দৃষ্টি দেয় বলে আশার চোখে সমর্থনের জন্য তাকান তিনি উপস্থিত আরো চার-পাঁচ জনের দিকে।
ব্যাস শুরু হয়ে যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার কাজ। গ্রামের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের মুখেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে এদের তীব্র সমালোচনা। ডিম আর সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। ইলিশ প্রসঙ্গ মুখখিস্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সহ সবকিছু তাদের নখদর্পে। গ্রামের মানুষ কতটা সচেতন তা আরো স্পষ্ট হয় ইউপি সদস্য শাহিন এর দেখানো পথে পূর্ব সুন্দরকাঠী গ্রামের ভিতরে হাওলাদার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে। এঁটো কাদা পিচ্ছিল পথ পেরিয়ে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার ভিতরে বৈষম্যবিরোধী  আন্দোলনে ঢাকার বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ সাজিদ হাওলাদার এর সমাধি এই গ্রামে। গ্রামে আসার পথেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাইস্কুল।  যে স্কুলের মাঠে গরুর হাট বসে সপ্তাহে একদিন। হাটু কাদা ভরা মাঠ পার হয়ে একটি ছোট্ট ব্রীজ। ব্রীজের ওপারে ইটা বিছানো পায়েচলা সরু পথ। ইটা বিছানো এই পথে পা রাখা মাত্রই পিছলে পরার উপক্রম হয়েছিল। গ্রামবাসী একজন থাবা দিয়ে ধরে বললেন- সাবধানে ভাই। সাজিদ হাওলাদার এর সম্পর্কে জানতে সরকারি লোকও এই ব্রীজ পর্যন্ত এসে ফিরে গেছেন। এদিকে আর ঢোকেন নাই। তারা যদি সত্যি দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন তাহলে সাজিদ হাওলাদার এর কবর পর্যন্ত অবশ্যই যেতেন।তাহলেই জানতে পারতেন আমাদের গ্রামের জীবন কতটা কষ্টকর। 
ইটা বিছানো এই সড়ক ১ কিলোমিটারের মতো- তারপর আরো ভয়ংকর সরু ও পিচ্ছিল মাটির সড়ক। শহীদ সাজিদ হাওলাদার এর বড়চাচা মোতালেব হাওলাদার থাকেন এখানে গ্রামের বাড়িতে। জানালেন- ৫-৬ কিলোমিটার এরকম মাটির সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল তাদের। যে কারণে সাজিদ হাওলাদার এর বাবা-মা ও স্ত্রী সহ তিন বছরের শিশু সন্তান নিয়ে তারা শহরে থাকেন। গ্রামে আসাযাওয়া খুব কম। তিনি বলেন- বরিশালে চাকুরীজীবি এই গ্রামের অনেক বাসিন্দাও এখন আর গ্রামে আসেন না বলে জানান তিনি।
গ্রামের সড়কের এই পরিস্থিতি তুলে ধরলে বাকেরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন- এটা দেখার দায়িত্ব যদিও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের। তারপরও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে আমি এলজিডির সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। 
সাইফুর রহমান আরো বলেন- বাকেরগঞ্জের দুধল দাঁড়িয়ালসহ চড়াঞ্চলের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এজন্য ১০২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। সেটি অনুমোদন হলে হয়তো এসব কর্দমাক্ত সড়ক আর থাকবে না বলে জানান তিনি।