
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ,
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ৪র্থ তলায় এ ব্লকের ৪১৭ নং রুমে প্রদর্শনীটি অনু্ষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, রেজিস্ট্রার ইঞ্জিনিয়ার অহিদুজ্জান, বিভিন্ন বিভাগের ডিন, শিক্ষক,কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি চারণ করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদ আহমদ সালেহীন বলেন, “জুলাই মাস আমাদের জীবনের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গণ পদযাত্রার এক বছর অতিবাহিত হলো। এই রাতেই পুলিশের শকুনে নজরে পড়েছিলাম।”
তিনি আরো বলেন, “যখন পুলিশ আমাদের বাসা ঘিরে ফেলেছিল, তখন শুধু হাফপ্যান্ট ও জামা পরে ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়েছিলাম। সেই সময় থেকে শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত শিক্ষকরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের খোঁজ-খবর, সহানুভূতি আর সাহস আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছিল। পুলিশের তাড়া খেয়েছি তখনই মৃত্যুর ভয় অপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে গেছি হয়তো বাঁচবো, হয়তো না।”
আয়োজক কমিটির সভাপতি নিলুফা সুলতানা বলেন, ” আজ আমরা যে ঘটনাকে স্মরণ করছি, সেটা শুধু একটি ঘটনা না, একটি ইতিহাস। এক দিনে বলে শেষ করা যাবে না। আমরা যেমন ৫২ ৫২ ও ৭১ দেখেছি, তেমনি ২৪-এ যা ঘটেছে, তা লিপিবদ্ধ করা দরকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানুক—আন্দোলনের সূচনা ছাত্রদের হাত ধরেই হয় এবং তারা কখনো পরাজিত হয় না।”
তিনি আরো বলেন,”এই আন্দোলন ছিল একটি বিস্ফোরণ, কোটা ছিল শুধু অজুহাত। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাই এতে অংশ নিয়েছেন, তাই এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। যারা শহিদ হয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে। তাদের ত্যাগ যেন মূল্য পায়—এই চেতনা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “আজ ১৭ জুলাই ২০২৫ ঠিক এক বছর পার হয়েছে। আমি সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিতে পারিনি, কিছু শৃঙ্খলার কারণে। সেই সময় ছাত্রদের আন্দোলন ছিল আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি। ১৬ তারিখে যখন আমাকে থানা থেকে কল করে ছাত্রদের ফেরাতে বলা হয়, আমি স্পষ্ট বলেছিলাম—এটা ছাত্রদের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার, এতে হস্তক্ষেপের এখতিয়ার নেই।”
তিনি আরো বলেন, যখন ছাত্ররা আহত হয়েছে, “আমি খোঁজ নিয়েছি, কিন্তু তাদের নিরাপত্তার কারণে তাদের বাসায় যেতে পারিনি। তাদের সর্বত্র খোঁজা হচ্ছিল। আমাদের জুলাইকে স্মরণে রাখতে হবে, লিখে রাখতে হবে, নইলে এই ইতিহাস হারিয়ে যাবে। যারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তাদের প্রতি আমার ভালোবাসা।”