
রাজধানীর একটি হোটেলে সম্প্রতি বায়োডাইভারসিটি ফর রেজিলিয়েন্ট লাইভলিহুডস (Biodiversity for Resilient Livelihoods) প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পটি পরিচালনা করছে সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস), সহযোগী সংস্থা হিসেবে রয়েছে বেলা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউসিএন, প্রেরণা এবং সিডিও। প্রকল্পটির অর্থায়ন করছে সুইডিশ দূতাবাস, ঢাকা।
চার বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটি বেইজলাইন পর্যায় সফলভাবে শেষ করে এখন বাস্তবায়ন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (পরিকল্পনা বিভাগ) মো. আলী জিন্নাহ, বন বিভাগের রকিবুল হাসান মুকুল এবং সুইডিশ দূতাবাসের সিনিয়র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান।
কর্মশালায় স্থানীয় নারী-পুরুষ নেতা, সিভিল সোসাইটির সদস্য, উন্নয়ন ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও নীতিনির্ধারকসহ প্রায় ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন। সবাই মিলে উপকূলীয় এলাকার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ক্ষয়প্রাপ্ত জলাভূমি পুনরুদ্ধার এবং জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় টেকসই জীবনযাপন গঠনে একযোগে আলোচনা করেন।
সি এন আর এস-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এম. মোখলেছুর রহমান প্রকল্পের পাইলট ও বাস্তবায়ন পর্যায়ের মূল কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “অ্যাডাপটিভ ফার্মিং, খাল পুনঃখনন এবং ইজারামুক্ত জলাভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা রক্ষায় মূল চাবিকাঠি।”
ওপেন ফোরামে সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও গবেষকগণ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই জীবিকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় করেন।
প্রধান অতিথি ফরিদা আক্তার বলেন, “এই প্রকল্পে মানুষকে শুধুমাত্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়নি, বরং তাদের সক্ষম ও সমাধান খোঁজার অংশীদার হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। যদিও জলাভূমির ইজারায় কিছু রাজস্ব আসে, তবে জীবিকার ক্ষতি তুলনাহীন। নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রকল্পের অন্যতম সাফল্য, যা তাদের প্রকৃত ক্ষমতায়নের সূচনা।”
সুইডিশ দূতাবাসের সিনিয়র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “লবণাক্ততা রোধে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ প্রয়োজন। এই উদ্যোগ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এখন দরকার স্থানীয় কমিটি গঠন, কার্যকর সমন্বয়, নীতিমালা সংস্কার এবং শক্তিশালী শাসনব্যবস্থা।”
কর্মশালায় প্রকল্পের পাইলট পর্যায়ের কাজ তুলে ধরতে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি ও ছবি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এটি স্মৃতিচারণের সঙ্গে নতুন চিন্তা ও উদ্যোগের পথ প্রশস্ত করেছে।