
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নয়াডাঙ্গী গ্রামে ব্যাক্তি মালিকানাধীন পারিবারিক চলাচলের পথে সরকারি ইটের রাস্তা নির্মানে বাঁধা দেওয়ার জ্বের ধরে উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কাজী বদরুজ্জামান (৪৫) গ্রামের অনেক মুরুব্বীকে লাঞ্চিত করেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গত মঙ্গলবার বিকেলে সদরপুর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কাজী বদরুজ্জামান ও তার সাঙ্গপাঙ্গ- সহ, থানা পুলিশ সাথে নিয়ে উক্ত গ্রামের একাধিক গৃহকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ, হাতাহাতি ও লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ।
ঘটনার পরে কোনো উপায় না পেয়ে গ্রামবাসী মিলে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিয়া সুলতানার কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করলে পারিবারিক চলাচলের পথে সরকারিভাবে ইটের রাস্তা নির্মাম কাজ বন্ধ করে দেন ইউএনও।
জানা যায়, উপজেলা দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদপ্তরের অধীনে টি.আর প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নয়াডাঙ্গী গ্রামে ৩০০ মিটার এইচবিবি রাস্তা নির্মানের জন্য ৮ মে.টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। উক্ত প্রকল্প সভাপতি হলেন চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন। প্রকল্প সভাপতি উক্ত গ্রামের সরকারি কাচা রাস্তায় এইচবিবি করন না করে ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রায় ১৫টি পরিবারের চলাচলের রাস্তায় ইট বিছাতে যায়। উক্ত গ্রামের মেইন কাচা রাস্তা থেকে দক্ষিন দিকে একের পর এক বসতি পরিবার রয়েছে। দুই সারি বসতি পরিবারের মাঝখান দিয়ে রয়েছে ৮ ফুট প্রসস্ত পারিবারিক রাস্তা।
আর প্রকল্প সভাপতি সরকারি কাচা রাস্তায় এইচবিবি করন না করে পারিবারিক রাস্তায় ইট বিছাতে গেলে বাঁধা দেন গ্রামবাসী। এ খবর পেয়ে সদরপুর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কাজী বদরুজ্জামান তার সাঙ্গপাঙ্গ ও পুলিশ- সহ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সাথে করে নিয়ে নিজের শক্তি প্রদর্শন করে গ্রামের অনেককে লাঞ্চিত করেন বলে অভিযোগ।
“এ ব্যপারে বৃহস্পতিবার সদরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নাহারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “ ভাই, কাজী বদরুজ্জামান ও গ্রামবাসীর মধ্যকার বিবাদটা পলেটিক্যাল হতে পারে। তাই সে ব্যাপারে আমি মুখ খুলতে পারবো না। তবে পারিবারিক রাস্তায় নয় বরং ওই গ্রামের সরকারি কাচা রাস্তায় এইচবিবি করন কাজ করতে বলেছি। একই সাথে উক্ত রাস্তা নির্মানে যেসব নিম্নমান ইট ব্যাবহার ও বালু না দিয়ে রাস্তা নির্মান করা হচ্ছে সেগুলো ভেঙে পূণঃবার নির্মান করা হবে বলেও তিনি জানান”।
একই দিন সদরপুর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কাজী বদরুজ্জামান বলেন, “ ওই গ্রামের ৮ ফুট প্রসস্ত পরিবারিক রাস্তাটি আমি কয়েক দফায় সালিশ বৈঠক করে বের করে দিয়েছি। সে সময় এ রাস্তাটি এইচবিবি করন করা হবে বলে সকলে দাবি তুলেছিল। গ্রামবাসীর সেই দাবীর মুখেই সরকারি বরাদ্দ আনার পর এখন রাস্তায় ইট বিছাতে দেবে না। তাই এ নিয়ে অনেকের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে”।
আর ওই গ্রামের এক ভুক্তভোগী শেখ মোতালেব (৫০) জানায়, “ আমাদের পারিবারিক রাস্তায় সরকারি ইট বিছাতে দেয় নাই বলে কাজী বদরুজ্জামান আমাকে লাঞ্চিত করেছে। সে আমাকে কিল ঘুষি ও ঠেলা ধাক্কা অপমান করে পরনের শার্ট ছিড়ে ফেলেছে। এমনকি এই অন্যায়ের যেই প্রতিবাদ করতে গেছে তাকেই সে হেনস্থা করেছে এবং পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকী দিয়েছে”। আরেক ভুক্তভোগী শেখ বাবু জানায়, “ বিএনপি সভাপতি কাজী বদরুজ্জামান ওরফে বদু কাজী আমাদের জোর করে টিপ ও সই নিতে চাইছিল না দিলে পুলিশকে বার বার গ্রেফতার করতে বলেছে এবং তার লোকজন দিয়ে বসতি ঘরে ঢুকেও তান্ডব চালিয়েছে”।