বরিশাল ব্যুরো ।।
বেহাত হয়ে যাচ্ছে দক্ষিনাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সম্পত্তি। এরই মধ্যে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ক্যাম্পাসের প্রায় ৪০ একর জমি দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।বিএম কলেজের সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। অথচ প্রাচীর ভেঙে নিয়মিত প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি বেহাত হলেও ওই কমিটিকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তাঁদের দাবি, দ্রুত মাপজোখ করে বেহাত সম্পত্তি উদ্ধার করা হোক।গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক ছাত্রাবাসের পুকুরের সীমানাদেয়াল ভেঙে চার-পাঁচ হাত জমি দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা।হলের পুকুরসংলগ্ন নিজের কেনা জায়গায় বাড়ি বানাতে গিয়ে তিনি এ কাজ করেছেন। কলেজের সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।শুক্রবারের প্রাচীর ভাঙা সম্পর্কে ফজলুল হক ছাত্রাবাসের তত্ত¡াবধায়ক ড. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘ভবন করতে গিয়ে দেয়াল ভেঙে গেছে।
তবে কলেজের জায়গা দখলের জন্য সীমানাপ্রাচীর ভাঙা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।এ বিষয়ে কলেজের সম্পত্তি সংরক্ষণ কমিটির আহŸায়ক অধ্যাপক শাহরিয়ার কিবরিয়া বলেন, ‘ফজলুল হক হলসংলগ্ন সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে শুনেছি। যত দূর জানি, সম্পত্তি দখল হয়নি।শুধু ফজলুল হক হল এলাকা নয়, একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদ (বাকসু) ভবনের সংলগ্ন পুকুরের পশ্চিম পাড়ে এবং অশ্বিনীকুমার ছাত্রাবাসের এ বøকের পশ্চিম পাশে। গত শনিবারও বিএম কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দুই ছাত্রাবাস ঘেঁষে বাড়ি নির্মাণ করতে দেখা গেছে।একই চিত্র চোখে পড়েছে জিরো পয়েন্টসংলগ্ন বাকসু ভবনের পুকুরের পশ্চিম পাশেও। তিনটি স্থানেই প্রাচীর ভেঙে কলেজের জায়গা দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। এ ছাড়া কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগসংলগ্ন পুকুরের পশ্চিম পাশের ঘাটলার মাতৃমন্দির কোয়ার্টারসংলগ্ন প্রায় ১০ ফুট জমি বেদখল হয়ে গেছে।
কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, আশির দশকে কলেজের সীমানাপ্রাচীর দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সময় কয়েকটি স্থানের প্রাচীর ভেঙে অল্প অল্প জায়গা দখল করে নিয়েছেন প্রতিবেশীরা।মাস ছয়েক আগে অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসের এ বøকের পশ্চিম পাশের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে বাড়ি বানিয়েছেন এক ব্যক্তি। বাড়িটির সুয়ারেজ লাইন কলেজের ভেতরে চলে এসেছে। সিটি করপোরেশনের আইন না মেনে বাড়ি বানানোর কারণে এমনটি হয়েছে।প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি বেদখল হওয়া নিয়ে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, যাঁরা প্রাচীর ভেঙেছেন, তাঁদের নতুন করে প্রাচীর করে দিতে বলা হয়েছে। বাকসু ভবনসংলগ্ন ভূমিমালিকেরা ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকছেন কি না, তা সিটি করপোরেশন নির্ধারণ করবে বলেও জানান তিনি।