
উৎপল রক্ষিত , গাজীপুর প্রতিনিধি:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, “পুলিশ বাহিনীর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আগে থানায় মামলা ও জিডি নিতে অনীহা থাকায় আমরা একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মামলার আবেদন ও জিডি অনলাইনে করার সুযোগ রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে সিলেটে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, ধীরে ধীরে সারা দেশেই তা চালু করা হবে। এতে সাধারণ মানুষকে আর থানায় যেতে হবে না, হয়রানিরও সুযোগ কমে যাবে।”
মঙ্গলবার(১০ জুন) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “থানার ভেতরে রিমান্ডে নেওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাঁচঘেরা কক্ষ নির্মাণ করা হবে, যাতে অন্যরা পর্যেবক্ষণ করতে পারে আসামিদের সঙ্গে কোনো অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে কিনা।
পুলিশের দুর্নীতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যে কোনো দুর্নীতির অভিযোগে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এখন পর্যন্ত ৮৪ জন কর্মকর্তাকে এটাচ রাখা হয়েছে এবং ৩০ থেকে ৪০ জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও পাঠাতে কুণ্ঠাবোধ করবো না। দুর্নীতি দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা, এটি আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। একে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে দেশ অনেক এগিয়ে যেত।
বর্তমানে বিভিন্ন থানায় চলমান মামলাগুলো নিয়ে তিনি বলেন, “অনেক মামলায় দোষীদের পাশাপাশি নির্দোষ মানুষও আসামি হচ্ছেন। এ কারণে তদন্তে সময় লাগছে। আমরা চেষ্টা করব, যাতে দোষীরা শাস্তি পায় এবং নির্দোষ কেউ যেন কোনো অবস্থায় সাজা না পান।
গাছা থানা পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। সেখানে পৌঁছেই তিনি কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। এরপর কারা রক্ষীদের সঙ্গে একান্তে মতবিনিময় করেন এবং তাদের পেশাগত জীবন, কাজের পরিবেশ ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
কারাগার প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা বলেন, “কারাগার শুধু শাস্তির স্থান নয়, এটি সংশোধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। যেসব বন্দি সাজাপ্রাপ্ত, তাদের আমরা সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রাখতে চাই না। তাদেরকে দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে হবে, যেন তারা মুক্তি পেয়ে সমাজে একজন স্বনির্ভর ও উপযোগী মানুষ হিসেবে জীবন শুরু করতে পারে। এতে যেমন অপরাধ পুনরাবৃত্তির হার কমবে, তেমনি তারা হয়ে উঠবে দেশের সম্পদ।
তিনি আরও বলেন, “কারাবন্দিদের জীবন মানোন্নয়নে সরকার ইতিমধ্যে কারাগারভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও মানসিক পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেছে। এ কার্যক্রম আরও বিস্তৃত ও যুগোপযোগী করা হবে।