Dhaka , Saturday, 5 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার ঈদ পুনর্মিলনী ও কর্মশালা কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার অ’র্থনৈ’তিক সহযোগিতা জো’রদা’রে ঢাকার আ’হ্বান শ’হীদদে’র জন্য ৫ জুলাই দেশব্যা’পী দোয়া-মাহফিলের আ’হ্বান হেফাজতে ইসলামের। লালমনিরহাটে আন্ত:সুরকিমীল ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত পাবনায় অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বি’দ্যুৎস্পৃ’ষ্টে চালকের মৃ’ত্যু  কাঁঠালিয়ায় বিএনপির বি’ক্ষো’ভ মিছিল, খু’নি হাসিনার ফাঁ’সি ও আওয়ামী স’ন্ত্রা’সীদে’র বি’চারে’র দাবি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন মোংলা বন্দর চেয়ারম্যান পাবনায় বাস-ট্রাক সং’ঘ’র্ষে নি’হত ৩, আ’হত ১০  হাটহাজারিতে মডেল মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন থানায় হা’মলা ও আ’সামি ছি’নতা’ইয়ে’র ঘ’টনা’য় তিনজন র‍্যাবের হাতে গ্রে’প্তার কালিয়াকৈরে ৩১ দ’ফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ,বিএনপির সদস্য সংগ্রহ -নবায়ন এবং দ্রুত  জাতীয় সংসদ নি’র্বাচনে’র দাবিতে বিশাল সমা’বেশ  হাতীবান্ধা থেকে ২৫.৫ কেজি গাঁ’জাসহ এক মা’দক ব্যবসায়ীকে গ্রে’প্তার করেছে র‍্যাব দেশীয় প্রযুক্তিতে বাং’কার বা’স্টার তৈরি করছে ভারত, আসছে অ’গ্নি-৫-এর নতুন দুই সং’স্ক’রণ চরভদ্রাসনে বিএনপি’র প্রস্তুতিমূলক কমিটিতে আওয়ামীলীগের দো’সর’দের ঠা’ই হয়েছে, তারই প্র’তিবা’দে ত্যা’গী বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মশাল মিছিল পটুয়াখালীর মহিপুরে দুই না’রীর ওপর হা’মলা’র অ’ভিযো’গ ছাত্রদল নে’তার’ বি’রুদ্ধে রূপগঞ্জে সাত বছরেও সুবর্ণা হ’ত্যার বি’চার হয়নি, শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন, সুবর্ণার চাচাকে অ’পহ’রণ করে নি’র্যাত’ন নোয়াখালীতে কি’ডনি ডা’য়ালাইসি’স সেন্টারে দু’দকের অ’ভিযা’ন হাতীবান্ধা থেকে ২০ কেজি গাঁ’জাসহ দুই মা’দক কা’রবারি’কে গ্রে’প্তার করেছে র‍্যাব পাটগ্রাম থানা থেকে দুইজন আ’সামী’কে ছিনিয়ে নেয় দু’র্বৃত্ত’রা, ও’সিসহ আ’হত ২০ আলেমগণ নিজেরাই বি’ভেদ তৈরী করলে ইসলামী ক’ল্যা’ণ রা’ষ্ট্রের সম্ভাবনা পি’ছিয়ে যাবে – ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জ’লবা’য়ু মো’কাবি’লা ও জী’ববৈচি’ত্র্য র’ক্ষা’য় সুইডেনের স’হায়’তায় গ্র’হণ করা হচ্ছে বিশেষ প্র’কল্প। – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান  রামগঞ্জ পৌরসভার বা’জে’ট ঘোষণা  মধুপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শি’ক্ষিকা লাকী’র আ’ত্মহ’ত্যা’র র’হস্য উ’ন্মো’চন ব্যারিস্টার কায়সার কামালের উদ্যোগে শি’শু ঊর্মির হা’র্টে’র অপা’রে’শ’ন সম্পন্ন খেলাধুলা যুব সমাজকে মা’দক মু’ক্ত  রাখতে পারে, উইএনও মো. মোশারফ হোসাইন জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির উত্তরাঞ্চ’লীয় মু’খ্য মু’খ্য সংগঠক অপকর্মের বি’রুদ্ধে বিএনপির অবস্থান ও অ্যাকশন দেখতে চান উজিরপুরে  প্র’তিপ’ক্ষকে ফাঁ’সা’তে  মি’থ্যা মা’মলা দিয়ে হ’য়রা’নি অ’ভিযো’গ গাজীপুরে শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরের বি’রু’দ্ধে আরও দুই হ’ত্যা মা’মলা রামুতে ডে’ঙ্গু ও ক’রো’না ভা’ইরা’স প্রতিরো’ধে সচেতনতা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত দুর্গাপুর মটরযান ক’র্মচা’রী শ্র’মিক ইউনিয়ন নি’র্বাচ’নে সাধারণ সম্পাদক পদে শ্রমিকদের পছন্দের প্রার্থী আলিউল আজিম

কেউ শোনেনা কারো কথা চরম বিশৃঙ্খল ও নেতৃত্ব সংকট বরিশাল বিএনপিতে

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 06:57:26 pm, Friday, 24 January 2025
  • 47 বার পড়া হয়েছে

oplusকেউ শোনেনা কারো কথা চরম বিশৃঙ্খল ও নেতৃত্ব সংকট বরিশাল বিএনপিতে_0

আরিফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিবেদক 
গত ৪ জানুযারি শনিবার রাতে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হালিম মৃধার ওপর হামলা হয়েছে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া সিকদারকে এ জন্য দায়ী করছেন সাবেক জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্যরা।  ঘটনার দুদিন পরই আবার সাবেক ও বর্তমান দুই বিএনপি নেতার বাড়িতে মুখোশধারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা বরিশালে এখন টক অব দা টাউন। জানা গেছে, রাত আটটার পর নগরীর কাউনিয়া এলাকায় মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম এবং নাজিরের পুল এলাকায় মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর সৈয়দ আকবর হোসেনের বাড়িতে পরপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন বেশিরভাগ নেতাকর্মী। এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেছেন- গত শনিবার রাতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হালিম মৃধার ওপর হামলা হয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে আমরা তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে একটি প্রচার কর্মসূচি আহ্বান করেছি। এটা যাতে করতে না পারি- সে জন্য ভীতি সৃষ্টির জন্যই এমন হামলা হতে পারে বলে জানান তিনি। আবার হামলার শিকার আকবর হোসেন এটিকে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বলেই স্বীকার করেছেন। যদিও এর সাথে নিজের জড়িত থাকার বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে দাবী জিয়া সিকদারের। তিনি বলেন- আমাকে নিয়েএকটি মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। 
বিএনপির অভ্যন্তরীণ এই দ্বন্দ্ব বিগত ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারির থেকেই চলমান রয়েছে। আর ঐ সময় থেকেই টানা তিনবছর ধরে আহবায়ক কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বরিশালে। ঐ সময় বরিশাল বিএনপির একচ্ছত্র নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের বর্তমান উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার বরিশালের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকেই সরোযার পন্থী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন ও মনিরুজ্জামান ফারুক পন্থী- বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুস এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া সিকদার পন্থী ছাড়াও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির পন্থী বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে বরিশাল বিএনপিতে। দীর্ঘদিন এখানে জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাথে মহানগরের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার জেলা বিএনপির দেওয়ান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ- মিজানুর রহমান মুকুল এর সাথে মেসবাহউদ্দিন ও আবুল হোসেন এর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে বলে মনে হয়নি বিগত ৫ বছরের কর্মকাণ্ডে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে চেপে থাকা ক্ষোভ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে পেতে তা পরষ্পরের উপর হামলার মতো ঘটনার জন্ম দিচ্ছে বলে দাবী করেন তৃণমূল বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী। যদিও ইতিমধ্যেই বরিশাল বিএনপির সাথে দু-বার বৈঠক ও মতবিনিময় করেছেন দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ঐ বৈঠকে নেতাকর্মীদের দূর্নীতি- চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম থেকে বিরত থাকতে কঠিন ভাবে সাবধান করেছেন তারেক রহমান। কিন্তু তার নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাতারাতি বাস টার্মিনাল- মৎস্য বাজার- কাঁচা বাজার- নৌ ঘাট ইত্যাদি দখলদারিত্বে রীতিমতো প্রতিযোগিতা করেছে বরিশাল বিএনপি। রাতারাতি বদলে দেয়া হয়েছে মাছ বাজারের সাইনবোর্ড। এতোদিন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন মাছ ব্যবসায়ী জহির সিকদার এখন বিএনপির লোক। তিনি নিজেই খুব আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে বরিশালের ইলিশ বাজারের নাম পাল্টে দিয়ে শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের থানা থেকে মুক্ত করতে কিম্বা জামিনে ছাড়িয়ে আনতেও প্রতিযোগিতা দেখা গেছে বিএনপির একটি অংশের। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা যখন গ্রামেগঞ্জে ঘুরে তাদের শক্তি ও সমর্থন বৃদ্ধির জন্য মরিয়া। বানারিপাড়া- আগৈলঝারা ও গৌরনদী উপজেলায় তারা রীতিমতো হিন্দু নেতৃত্ব তৈরি করে নিয়েছেন নিজ নিজ দলে।
আর সেই একইসময় থেকে বরিশালে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটা অংশ আওয়ামী লীগ নেতাদের ফেলে যাওয়া কর্মীদের সাথে নিয়ে চাঁদাবাজি আর দখলদারিত্বের প্রতিযোগিতায় নামে। কেউ কেউ আবার বৈষম্য বিরোধী সমন্বয়কদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ব্যস্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর তারা হামলা করে জাতীয় নাগরিক কমিটির বিজয় দিবসের সমাবেশে। এদের মধ্যে ভদ্র সুশীল শ্রেনীর কিছু বিএনপি নেতারা পদপদবির লোভে স্থানীয় কিছু সাংবাদিকদের দিয়ে টাকার বিনিময়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন বা অনেক পুরাতন কোনো অভিযোগ খুঁজে বের করে তা দিয়ে দীর্ঘদিন মাঠের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের শায়েস্তা করতে উঠেপড়ে লেগেছে। 
এরকম ঘটনায় জলাশয় ভরাট ও বাড়ি দখলের মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনকে হেনস্থা করার চেষ্টায় সংবাদ হয়েছে। যারফলে তার দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে এবং জয়ী হয়েছে প্রতিপক্ষ। আরো কয়েকজন রয়েছেন এই তোপের মুখে। এই মুহূর্তে তারা মুখে কুলুপ এঁটে গৃহবন্দী জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে। তারউপর রয়েছে ভারপ্রাপ্তের ভারে ভারাক্রান্ত যুবদল। গত প্রায় ১০ বছর ধরেই ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে বরিশাল মহানগর যুবদল। আর ছাত্রদলের আপাদমস্তক নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার দাবী মহিলাদলসহ বিএনপির অন্যান্য অংগসংগঠনের।সবমিলিয়ে বরিশালের রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণে কোথাও সাধারণ মানুষের জন্য ভাবনা খুঁজে পাওয়া যায়নি গত পনের বছর।  আওয়ামী দুঃশাসনের সময় আপোষ করে কিম্বা মুখ বুঝে ছিলেন এখানের বেশিরভাগ নেতারা। ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের পর এই চিত্র এতটুকুও বদলায়নি। নিত্যপন্যের দাম, বাজার দর, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটসহ কোনো বিষয়েই সাধারণ মানুষ পাশে পায়নি রাজনৈতিক নেতাদের কাউকেই। 
বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধীক মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়, তাদের পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই জানেনা বরিশাল জেলা বা মহানগর বিএনপি। এমনকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বরিশালে নিহত ও আহতদের কোনো পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত নেই জেলা বা মহানগর বিএনপির কাছে। নিজ দলের শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎও করেছেন সংবাদ হওয়ার পরে। তারপর বিভাগে আহত ও নিহতের বিষয়ে  জেলা কিম্বা মহানগর বিএনপির কেউই বলতে পারেন নাই সঠিক পরিসংখ্যান। তবে নিজেদের ভিতর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে স্বীকার করেন একাধিক নেতা। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বললেন, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের সাথে যারাই জড়িত তাদের পিছনে ও পাশে আওয়ামী লীগের ভুত রয়েছে এখনো। মহানগর কমিটির রিপোর্টই এজন্য যথেষ্ট বলে জানান মনিরুজ্জামান ফারুক। যদিও সাধারণ কর্মীদের কাছে মনিরুজ্জামান ফারুক জাতীয় পার্টি থেকে আসা একজন নেতা। তিনি নির্ঝঞ্ঝাট টাইপের ভালো মানুষ এবং নেতৃত্বের জন্য পারফেক্ট নয় বলে জানালেন তৃনমূলের একাধিক কর্মী। বেশ কয়েকজন মাঠ পর্যায়ের সাধারণ নেতাকর্মীদের বিশ্লেষণ হচ্ছে, জেলা বা মহানগরের শীর্ষ নেতাদের সাথে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের এখন ব্যাপক দূরত্ব। বিশেষ করে কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় জেলা ও মহানগর নেতারা এখন চার ভাগে বিভক্ত বলে দাবী সাধারণ কর্মীদের। তারা বলেন, কাউন্সিল বা সম্মেলনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ভোটে কমিটি গঠন করা না হলে এই দলে স্বচ্ছ নেতৃত্ব তৈরি হবেনা। আর এই ভোটাভুটি ইউনিয়ন পর্যায় থেকে হতে হবে বলে দাবী তাদের। 
সাবেক একজন উপজেলা বিএনপির নেতা আরো বলেন, বরিশাল জেলা বা মহানগরের কোনো নেতাকে একটু সদর উপজেলার গ্রামে ঘুরে আসতে বলেন, তাহলেই স্পষ্ট হবে তাদের জনপ্রিয়তা কতটুকু। একজন উপজেলা নেতাও তাদের কমাণ্ড মানেনা বলে জানান তিনি। 
এদিকে আবার বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া সিকদারকে নিয়ে রয়েছে নানাবিধ বিতর্ক। কেউ কেউ বলেন, তার মূল লক্ষ্য বাস টার্মিনাল দখল। ইজারা ও টেন্ডার বাণিজ্য এখন তার উপর নির্ভরশীল। তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার অভিযোগ, মোটরসাইকেল বহর নিয়ে আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এর মতই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি এখন। ভীতি সৃষ্টি করছেন জনমনে। দখল করছেন বিভিন্ন ইজারা। ছাত্রদলের সভাপতি রনিকে দিয়ে কাজ করায় সে। রনির ছাত্রত্ব পার হয়েছে বহু আগে, তারপরও আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে আজো বহাল আছে। ফলে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরা সম্ভব হলে ছাত্রলীগের সবাইকে তার দলে নিয়ে নেবে যেকোনো সুযোগে। আর তার পিছনে বরিশালের রাজনৈতিক মাঠ দখল করতে সচেতন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান। তৃণমূলের এ অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলতে রাজী হননি ছাত্রদল সভাপতি রনি। যদিও বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেছেন, আমি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু করিনি, কখনো করবোও না। তবে হাঃ কাউন্সিল ও ভোটাভুটির মাধ্যমেই প্রতিটি কমিটি গঠনের পক্ষে আকন কুদ্দুসসহ প্রায় সকলেই। 
এদিকে বাস টার্মিনাল দখলে নিজ ভাইদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ বিএনপির বরিশালের শীর্ষ নেতা কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার। সম্প্রতি তাকেও দেখা গেছে নগরীর স্টিমারঘাট জামে মসজিদের কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায়। 
বরিশাল  যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত ভারে ভারাক্রান্ত। তবে এখানের নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত কোনো সংকট বা অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যে কারণে রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মিজানুর রহমান ও মাহবুব খান বলেছেন, বরিশাল বিএনপি রাজনীতিকে মাঠ পর্যায়ে সচল রেখেছে মুলত এখানের যুবদল। মহানগর বা জেলা যুবদলের ভুমিকা এখানে প্রশংসার দাবিদার বলে জানান তারা।  এদিকে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ভূমিকা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ বরিশালে। ছাত্রদলের আপাদমস্তক নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরী বলে দাবী করেছেন বরিশাল বিএনপির মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা বেগম। এ জন্য প্রতিবাদ সভা ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি নিজেও।
সাধারণ কর্মী ও সমর্থকসহ গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষের কাছে তারপরও বিএনপি ও দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর স্থান অনেক উঁচুতে। তারেক রহমান এর সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেন বরিশালের সাধারণ মানুষ। তাদের বেশিরভাগ অংশের দাবী, বাছাইকৃত পদধারী নেতাদের সাথে নয়, বরিশালের মাঠ পর্যায়ের বিএনপি সমর্থক ও সাধারণ মানুষের সাথে তারেক রহমান সরাসরি কথা বললেই পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন বলে জানান জেলা কৃষক দলের একজন নেতা। এ বক্তব্যে সহমত পোষণ করেন মহানগর বিএনপির সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক, মহসিন মন্টুসহ বরিশাল বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী। মহানগর ও জেলা বিএনপি তারেক রহমানকে সঠিক তথ্য দিচ্ছেনা দাবী করে তারা বলেন, বরিশালে এই মুহূর্তে একজনও বিএনপির নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য লোক নেই। নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা নিজেরাই নিজেদের কথা শোনেন না বলে জানান তারা।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার ঈদ পুনর্মিলনী ও কর্মশালা কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত

কেউ শোনেনা কারো কথা চরম বিশৃঙ্খল ও নেতৃত্ব সংকট বরিশাল বিএনপিতে

আপডেট সময় : 06:57:26 pm, Friday, 24 January 2025
আরিফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিবেদক 
গত ৪ জানুযারি শনিবার রাতে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হালিম মৃধার ওপর হামলা হয়েছে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া সিকদারকে এ জন্য দায়ী করছেন সাবেক জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্যরা।  ঘটনার দুদিন পরই আবার সাবেক ও বর্তমান দুই বিএনপি নেতার বাড়িতে মুখোশধারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা বরিশালে এখন টক অব দা টাউন। জানা গেছে, রাত আটটার পর নগরীর কাউনিয়া এলাকায় মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম এবং নাজিরের পুল এলাকায় মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর সৈয়দ আকবর হোসেনের বাড়িতে পরপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন বেশিরভাগ নেতাকর্মী। এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেছেন- গত শনিবার রাতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হালিম মৃধার ওপর হামলা হয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে আমরা তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে একটি প্রচার কর্মসূচি আহ্বান করেছি। এটা যাতে করতে না পারি- সে জন্য ভীতি সৃষ্টির জন্যই এমন হামলা হতে পারে বলে জানান তিনি। আবার হামলার শিকার আকবর হোসেন এটিকে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বলেই স্বীকার করেছেন। যদিও এর সাথে নিজের জড়িত থাকার বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে দাবী জিয়া সিকদারের। তিনি বলেন- আমাকে নিয়েএকটি মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। 
বিএনপির অভ্যন্তরীণ এই দ্বন্দ্ব বিগত ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারির থেকেই চলমান রয়েছে। আর ঐ সময় থেকেই টানা তিনবছর ধরে আহবায়ক কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বরিশালে। ঐ সময় বরিশাল বিএনপির একচ্ছত্র নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের বর্তমান উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার বরিশালের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকেই সরোযার পন্থী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন ও মনিরুজ্জামান ফারুক পন্থী- বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুস এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া সিকদার পন্থী ছাড়াও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির পন্থী বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে বরিশাল বিএনপিতে। দীর্ঘদিন এখানে জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাথে মহানগরের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার জেলা বিএনপির দেওয়ান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ- মিজানুর রহমান মুকুল এর সাথে মেসবাহউদ্দিন ও আবুল হোসেন এর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে বলে মনে হয়নি বিগত ৫ বছরের কর্মকাণ্ডে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে চেপে থাকা ক্ষোভ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে পেতে তা পরষ্পরের উপর হামলার মতো ঘটনার জন্ম দিচ্ছে বলে দাবী করেন তৃণমূল বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী। যদিও ইতিমধ্যেই বরিশাল বিএনপির সাথে দু-বার বৈঠক ও মতবিনিময় করেছেন দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ঐ বৈঠকে নেতাকর্মীদের দূর্নীতি- চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম থেকে বিরত থাকতে কঠিন ভাবে সাবধান করেছেন তারেক রহমান। কিন্তু তার নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাতারাতি বাস টার্মিনাল- মৎস্য বাজার- কাঁচা বাজার- নৌ ঘাট ইত্যাদি দখলদারিত্বে রীতিমতো প্রতিযোগিতা করেছে বরিশাল বিএনপি। রাতারাতি বদলে দেয়া হয়েছে মাছ বাজারের সাইনবোর্ড। এতোদিন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন মাছ ব্যবসায়ী জহির সিকদার এখন বিএনপির লোক। তিনি নিজেই খুব আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে বরিশালের ইলিশ বাজারের নাম পাল্টে দিয়ে শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের থানা থেকে মুক্ত করতে কিম্বা জামিনে ছাড়িয়ে আনতেও প্রতিযোগিতা দেখা গেছে বিএনপির একটি অংশের। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা যখন গ্রামেগঞ্জে ঘুরে তাদের শক্তি ও সমর্থন বৃদ্ধির জন্য মরিয়া। বানারিপাড়া- আগৈলঝারা ও গৌরনদী উপজেলায় তারা রীতিমতো হিন্দু নেতৃত্ব তৈরি করে নিয়েছেন নিজ নিজ দলে।
আর সেই একইসময় থেকে বরিশালে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটা অংশ আওয়ামী লীগ নেতাদের ফেলে যাওয়া কর্মীদের সাথে নিয়ে চাঁদাবাজি আর দখলদারিত্বের প্রতিযোগিতায় নামে। কেউ কেউ আবার বৈষম্য বিরোধী সমন্বয়কদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ব্যস্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর তারা হামলা করে জাতীয় নাগরিক কমিটির বিজয় দিবসের সমাবেশে। এদের মধ্যে ভদ্র সুশীল শ্রেনীর কিছু বিএনপি নেতারা পদপদবির লোভে স্থানীয় কিছু সাংবাদিকদের দিয়ে টাকার বিনিময়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন বা অনেক পুরাতন কোনো অভিযোগ খুঁজে বের করে তা দিয়ে দীর্ঘদিন মাঠের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের শায়েস্তা করতে উঠেপড়ে লেগেছে। 
এরকম ঘটনায় জলাশয় ভরাট ও বাড়ি দখলের মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনকে হেনস্থা করার চেষ্টায় সংবাদ হয়েছে। যারফলে তার দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে এবং জয়ী হয়েছে প্রতিপক্ষ। আরো কয়েকজন রয়েছেন এই তোপের মুখে। এই মুহূর্তে তারা মুখে কুলুপ এঁটে গৃহবন্দী জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে। তারউপর রয়েছে ভারপ্রাপ্তের ভারে ভারাক্রান্ত যুবদল। গত প্রায় ১০ বছর ধরেই ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে বরিশাল মহানগর যুবদল। আর ছাত্রদলের আপাদমস্তক নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার দাবী মহিলাদলসহ বিএনপির অন্যান্য অংগসংগঠনের।সবমিলিয়ে বরিশালের রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণে কোথাও সাধারণ মানুষের জন্য ভাবনা খুঁজে পাওয়া যায়নি গত পনের বছর।  আওয়ামী দুঃশাসনের সময় আপোষ করে কিম্বা মুখ বুঝে ছিলেন এখানের বেশিরভাগ নেতারা। ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের পর এই চিত্র এতটুকুও বদলায়নি। নিত্যপন্যের দাম, বাজার দর, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটসহ কোনো বিষয়েই সাধারণ মানুষ পাশে পায়নি রাজনৈতিক নেতাদের কাউকেই। 
বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধীক মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়, তাদের পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই জানেনা বরিশাল জেলা বা মহানগর বিএনপি। এমনকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বরিশালে নিহত ও আহতদের কোনো পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত নেই জেলা বা মহানগর বিএনপির কাছে। নিজ দলের শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎও করেছেন সংবাদ হওয়ার পরে। তারপর বিভাগে আহত ও নিহতের বিষয়ে  জেলা কিম্বা মহানগর বিএনপির কেউই বলতে পারেন নাই সঠিক পরিসংখ্যান। তবে নিজেদের ভিতর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে স্বীকার করেন একাধিক নেতা। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বললেন, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের সাথে যারাই জড়িত তাদের পিছনে ও পাশে আওয়ামী লীগের ভুত রয়েছে এখনো। মহানগর কমিটির রিপোর্টই এজন্য যথেষ্ট বলে জানান মনিরুজ্জামান ফারুক। যদিও সাধারণ কর্মীদের কাছে মনিরুজ্জামান ফারুক জাতীয় পার্টি থেকে আসা একজন নেতা। তিনি নির্ঝঞ্ঝাট টাইপের ভালো মানুষ এবং নেতৃত্বের জন্য পারফেক্ট নয় বলে জানালেন তৃনমূলের একাধিক কর্মী। বেশ কয়েকজন মাঠ পর্যায়ের সাধারণ নেতাকর্মীদের বিশ্লেষণ হচ্ছে, জেলা বা মহানগরের শীর্ষ নেতাদের সাথে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের এখন ব্যাপক দূরত্ব। বিশেষ করে কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় জেলা ও মহানগর নেতারা এখন চার ভাগে বিভক্ত বলে দাবী সাধারণ কর্মীদের। তারা বলেন, কাউন্সিল বা সম্মেলনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ভোটে কমিটি গঠন করা না হলে এই দলে স্বচ্ছ নেতৃত্ব তৈরি হবেনা। আর এই ভোটাভুটি ইউনিয়ন পর্যায় থেকে হতে হবে বলে দাবী তাদের। 
সাবেক একজন উপজেলা বিএনপির নেতা আরো বলেন, বরিশাল জেলা বা মহানগরের কোনো নেতাকে একটু সদর উপজেলার গ্রামে ঘুরে আসতে বলেন, তাহলেই স্পষ্ট হবে তাদের জনপ্রিয়তা কতটুকু। একজন উপজেলা নেতাও তাদের কমাণ্ড মানেনা বলে জানান তিনি। 
এদিকে আবার বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া সিকদারকে নিয়ে রয়েছে নানাবিধ বিতর্ক। কেউ কেউ বলেন, তার মূল লক্ষ্য বাস টার্মিনাল দখল। ইজারা ও টেন্ডার বাণিজ্য এখন তার উপর নির্ভরশীল। তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার অভিযোগ, মোটরসাইকেল বহর নিয়ে আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এর মতই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি এখন। ভীতি সৃষ্টি করছেন জনমনে। দখল করছেন বিভিন্ন ইজারা। ছাত্রদলের সভাপতি রনিকে দিয়ে কাজ করায় সে। রনির ছাত্রত্ব পার হয়েছে বহু আগে, তারপরও আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে আজো বহাল আছে। ফলে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরা সম্ভব হলে ছাত্রলীগের সবাইকে তার দলে নিয়ে নেবে যেকোনো সুযোগে। আর তার পিছনে বরিশালের রাজনৈতিক মাঠ দখল করতে সচেতন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান। তৃণমূলের এ অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলতে রাজী হননি ছাত্রদল সভাপতি রনি। যদিও বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেছেন, আমি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু করিনি, কখনো করবোও না। তবে হাঃ কাউন্সিল ও ভোটাভুটির মাধ্যমেই প্রতিটি কমিটি গঠনের পক্ষে আকন কুদ্দুসসহ প্রায় সকলেই। 
এদিকে বাস টার্মিনাল দখলে নিজ ভাইদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ বিএনপির বরিশালের শীর্ষ নেতা কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার। সম্প্রতি তাকেও দেখা গেছে নগরীর স্টিমারঘাট জামে মসজিদের কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায়। 
বরিশাল  যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত ভারে ভারাক্রান্ত। তবে এখানের নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত কোনো সংকট বা অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যে কারণে রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মিজানুর রহমান ও মাহবুব খান বলেছেন, বরিশাল বিএনপি রাজনীতিকে মাঠ পর্যায়ে সচল রেখেছে মুলত এখানের যুবদল। মহানগর বা জেলা যুবদলের ভুমিকা এখানে প্রশংসার দাবিদার বলে জানান তারা।  এদিকে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ভূমিকা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ বরিশালে। ছাত্রদলের আপাদমস্তক নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরী বলে দাবী করেছেন বরিশাল বিএনপির মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা বেগম। এ জন্য প্রতিবাদ সভা ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি নিজেও।
সাধারণ কর্মী ও সমর্থকসহ গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষের কাছে তারপরও বিএনপি ও দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর স্থান অনেক উঁচুতে। তারেক রহমান এর সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেন বরিশালের সাধারণ মানুষ। তাদের বেশিরভাগ অংশের দাবী, বাছাইকৃত পদধারী নেতাদের সাথে নয়, বরিশালের মাঠ পর্যায়ের বিএনপি সমর্থক ও সাধারণ মানুষের সাথে তারেক রহমান সরাসরি কথা বললেই পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন বলে জানান জেলা কৃষক দলের একজন নেতা। এ বক্তব্যে সহমত পোষণ করেন মহানগর বিএনপির সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক, মহসিন মন্টুসহ বরিশাল বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী। মহানগর ও জেলা বিএনপি তারেক রহমানকে সঠিক তথ্য দিচ্ছেনা দাবী করে তারা বলেন, বরিশালে এই মুহূর্তে একজনও বিএনপির নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য লোক নেই। নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা নিজেরাই নিজেদের কথা শোনেন না বলে জানান তারা।