
মো.ইমরান হোসেন হান্নান,
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি ।।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় আইনী জটিলতা ও দ্রূত সময়ে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে পুলিশের জব্দ করা প্রায় শতাধিক বিভিন্ন ধরনের যানবাহন খোলা আকাশের নীচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে উভয় সংকটে পড়েছেন যানবাহনের মালিক এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে আটক করে জব্দ করা এসব গাড়ির বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
মামলার আলামত হিসেবে এসব যানবাহন থানার সামনে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে বছরের পর বছর। রোদে আর বৃষ্টিতে ভিজে মরিচা ধরায় বেশীর ভাগ যানবাহনই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে । নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইঞ্জিন। অন্যদিকে দিন দিন জব্দ হওয়া যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রাখার স্থানের অভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি মামলার আলামত হিসেবে যানবাহন গুলি সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় থানা পুলিশকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। থানা চত্বরে দিন দিন আটক করা গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালিয়াকৈর থানায় প্রায় শতাধিক গাড়ি পড়ে আছে যার বেশীর ভাগই মোটর সাইকেল। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার, পিকাপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং ট্রাকও রয়েছে।
কালিয়াকৈরে জব্দ করা গাড়ির মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুলিশের দায়ের করা মামলায় নিজেদের জামিন হলেও আইনি জটিলতার কারণে গাড়িটি মুক্ত করতে পারছেন না। তারা আশংকা করছেন, আর কিছুদিন এভাবে থাকার পর আইনি জটিলতা কাটিয়ে উঠলেও হয়তো মোটর গাড়ি নয়,লোহা লক্কর ফেরত নিতে হবে। এছাড়াও সঠিক কাগজ পত্র না থাকায় অনেকেই গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। আবার অনেকে বৈধ কাগজ পত্র থাকা সত্বেও আইনী জটিলতা এবং হয়রানীর কারণে গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।
এব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-সম্পাদক মো.হুমায়ুন কবীর খাঁন বলেন,আইনের জটিলতা, গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকা ও লকডাউনে দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ থাকার কারণে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছেনা। ফলে চালক ও মালিকরা নানা হয়রানির শিকার ও আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এদিকে জব্দকৃত গাড়ি গুলোকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে তা সহজ উপায়ে ছাড়পত্র প্রদানের দাবি জানিয়েছেন পরিবহণ চালক ও মালিকরা।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, জব্দ হওয়া যে সব যানবাহন রয়েছে, তার বেশীর ভাগই নাম্বার বিহীন, চুরি বা ছিনতাই ও মাদক সরবরাহ কাজে ব্যবহৃত। এদের কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় জব্দ করা হয়েছে। যা থানায় মামলার আলামত হিসেবে রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশক্রমে কেবলমাত্র এগুলোর ছাড়পত্র দেয়া যায় অথবা নিলামে বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার অর্থ জমা দেয়া হয়।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, জব্দকৃত গাড়ি দীর্ঘদিন আইনি জটিলতার কারণে থানায় পড়ে থেকে নষ্ট হয় কিন্তু এ প্রক্রিয়া দ্রুত নিষ্পত্তি করে নিলামের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ জমা করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করবো।