দাউদ রানা – সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একাধিক সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়ে এই চক্রের সদস্যরা ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করছে-এমন অসংখ্য অভিযোগ পাচ্ছে কমিশন। সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী কে দুদকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে টেলিফোন করে বলেন আপনার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ৷ যদি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে চান তাহলে আমাদের কাছে টাকা নিয়ে যোগাযোগ করুন ৷ নয়তো আপনার বিরুদ্ধে দুদক মামলা করবে ৷ পরে সোমবার সকালে দুদক কার্যালয়ে দুদকের পরিচালককে বিয়টি অবগত করলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান কাহ্হার সিদ্দিকী কে জানান আপনাকে কেউ দুদুক পরিচয় ব্ল্যাকমেল করছে ৷ আর আমরা কখনো কাউকে টেলিফোনে বা মুঠো ফোনে মামলাসংক্রান্ত কোন কিছুই জানানো হয়না ৷ পরে দুদকের ফাঁদে ধামরাই উপজেলার সোহাপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে দুদক ৷ আটকের বিষয় তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ভুক্তভোগী আব্দুল কাহার সিদ্দিকী ৷ উল্লেখ্য
দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রতারণার এমন তথ্য পেয়েছে। কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নামে চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তাদের নামে কমিশনে অভিযোগ রয়েছে এমন কথা জানিয়ে অথবা কমিশনের বিবেচনাধীন অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে টেলিফোনে অথবা মোবাইল ফোনে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা দাবি করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে দুদকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে কোনো ব্যক্তির একক অভিপ্রায়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আইনি সুযোগ নেই। টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত বা অভিযোগ-সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো প্রশাসনিক ও আইনি সুযোগ এখানে নেই। এসব প্রতারকদের বেশকিছু সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
এ অবস্থায় কমিশন এমন প্রতারকদের অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছে। এ জাতীয় প্রতারকদের আইনের আওতায় আনতে এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানা অথবা র্যাব কার্যালয় অথবা দুদকের পরিচালক (গোয়েন্দা) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী (মোবাইল নং : ০১৭১১-৬৪৪৬৭৫) ও দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্যের (মোবাইল নং : ০১৭১৬-৪৬৩২৭৬) সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।