Dhaka , Thursday, 10 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
নোয়াখালীতে বেড়েছে পানি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ সুন্দরগঞ্জে ডিলার নিয়োগের অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ সুন্দরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ ঝালকাঠিতে মা ও ছেলের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপন করলেন কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ঝলক  কথাসাহত্যিক তুলতুলের মুক্তিযোদ্ধা বাবা আর নেই তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধির সাক্ষাৎ বেলারুশকে ঢাকায় দূতাবাস খোলার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার টেকনাফে পানিবন্দি শতাধিক পরিবারের মাঝে ‘নাফ বৃহত্তর কওমি ছাত্র সংগঠন’-এর শুকনো খাবার বিতরণ ঢাকার জুরাইনে ১ টি বিদেশী পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি ও ম্যাগজিন- সহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ী র‌্যাব-১০ কর্তৃক গ্রেফতার নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতার বক্সপপ এফটিপিতে ৯ জুলাই তারিখে দেওয়া আছে। মহুরী নদীর পানি বাড়তে থাকায় নোয়াখালীতে বন্যার আশঙ্কা পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটে তীব্র নদী ভাঙনে আতঙ্কে ফেরিঘাটের বাসিন্দারা ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি বিরিশিরি’র পরিচালক হলেন কবি পরাগ রিছিল  চন্দনাইশের দোহাজারীতে শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ পাবনায় মোবাইলে মেয়ের সঙ্গে কথা বলায় বিএনপির দু’গ্রুপের গুলিবর্ষণ, আহত ১৫ ঢাকার ক্লুলেস খোকন হত্যাকাণ্ড: দুই বছর পর গাইবান্ধায় ধরা পড়ল আসামি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে-ধর্ম উপদেষ্টা মোদি সরকারের নীতির প্রতিবাদে ভারত বন্‌ধ ফেনীতে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ৩৫ গ্রাম প্লাবিত, ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় পর্যালোচনা কমিটির মেয়াদ বাড়ল মেহেরপুরে জুলাই পদযাত্রায় এনসিপি নেতৃবৃন্দ বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এইচএসসি পরীক্ষা দিল ছেলে কালিয়াকৈরে অজ্ঞাত যুবকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার মোংলা-ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি  প্রদান পাইকগাছায় অস্ত্র, ককটেল ও মাদকদ্রব্য সহ আটক-৩ দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছার অভাবে পাবনা-ঢাকা সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু হচ্ছে না!   ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী টুটুলের সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভা র‍্যাব-১৩ এর অভিযানে হাতীবান্ধার মাদক ব্যবসায়ী মক্কু গ্রেপ্তার সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সুধিজনদের মিলনমেলা দাবি মোদের একটাই আনোয়ার ভাইকে প্রার্থী চাই” পাবনা-৩ এ কোন প্রার্থীর মনোনয়নই চূড়ান্ত হয়নি: সাবেক এমপি আনোয়ার 

নিজে সিজার করে স্ত্রীর নামে স্বাক্ষর -লাইফ কেয়ার হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 08:27:50 pm, Sunday, 25 September 2022
  • 167 বার পড়া হয়েছে

নিজে সিজার করে স্ত্রীর নামে স্বাক্ষর -লাইফ কেয়ার হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি।।

 

নীলফামারীর ডিমলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।তবে অবাক করা বিষয় হলো ডা. আকতারুজ্জামান বাবু নামের নন বিসিএস এমবিবিএস এক চিকিৎসক সিজারিয়ানে নিজেই একা সার্জারি ও এনেসথেসিয়া(অপারেশন)করে রেজিস্টার খাতায় নন বিসিএস-এমবিবিএস চিকিৎসক স্ত্রীর নামে স্বাক্ষর করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন।এ ব্যাপারে শনিবার(২৪ সেপ্টেম্বর)দুপুরে নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা.জাহাঙ্গীর কবির বলেন,আমরা অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিলাম।একাই এক চিকিৎসকের সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করার কোনো সুযোগ নেই!অবৈধ ক্লিনিক বন্ধের বিষয় গুলো আসলেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের(ইউএনও)দেখার কথা।কারন তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।তারপরও বিষয়টি আমি দেখছি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বুধবার(২১ সেপ্টেম্বর)বিকেল তিনটায় উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়িবাড়ি মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা আতাউর রহমানের স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানের জননী রহিমা বেগম(৩০)উপজেলা সদরের আলম প্লাজা মার্কেটের পিছনে অবস্থিত নাম সর্বস্ব অবৈধ লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজার করতে এসে সেখানে ভর্তি হন।পরে বিকেল পাঁচটায় দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ডাকে চুক্তিবদ্ধ চিকিৎসক নন বিসিএস এম.বি.বি.এস(আর.ইউ),
পি.জি.টি(সার্জারি),এক্স এইচ.এম(উল্লেখযোগ্য ডিগ্রী নয়) ডা. আকতারুজ্জামান বাবু সেখানে হাজির হওয়া মাত্রই অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই প্রসূতিকে জোর পূর্বক অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হয় সিজারের জন্য।এসময় প্রসূতি তার স্বামী ক্লিনিকের বাইরে আছেন বলে তাকে ফোনে ডেকে আনতে চাইলেও ওই চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাতে কোনো কর্ণপাত না করেই প্রসূতিকে অপারেশন রুমে নিয়ে গিয়ে তার সিজার সম্পন্ন করেন।যে সিজারে উল্লেখযোগ্য ডিগ্রি না থাকলেও একাই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করেন চিকিৎসক আকতারুজ্জামান বাবু নিজেই।সিজারের আগে এনেসথেসিয়ায় প্রসূতি পুরোপুরি অবস্ নাহলেও ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হলে সব অভিযোগ নিমিষেই ভুলে যান প্রসূতি ও তার পরিবার।কিন্তু নবজাতক পৃথিবীর মুখ দেখার পর স্বাভাবিক ভাবে কেঁদে ওঠার পরও অহেতুক অনভিজ্ঞ আয়া নবজাতক শিশুটির দু-পা ধরে মাথা নিচু করে অধিক সময় শিশুটিকে দোলাতে থাকেন।এতে শিশুটির নাক ও মুখ দিয়ে ফেনার মত পানি বের হতে থাকলে শিশুটির মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।এসময় ওই ক্লিনিকের রেজিস্টার খাতায় চিকিৎসকের স্বাক্ষরের স্থানে নিজ স্ত্রী নন বিসিএস-এমবিবিএস চিকিৎসক ডা.মারজিয়া শবনমের নাম লিখে ডা.আকতারুজ্জামান বাবু দ্রুত ঝটকে পড়েন।শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার দীর্ঘ আধা ঘন্টারও বেশি সময় ধরে শিশুটিকে কোনো রকম অক্সিজেন না দিয়ে ও চিকিৎসক না দেখিয়ে ক্নিনিক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করেন।এক পর্যায়ে নবজাতক শিশুটির অবস্থা আরো খারাপ হলে দ্রুত শিশুটিকে অক্সিজেন ছাড়াই ডিমলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।অতিতেও এই ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় একাধিক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হলেও অদৃশ্য কারনেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।এই ঘটনার দিন ক্লিনিকটির রেজিস্টার ঘেটে দেখা গেছে একইদিনে(বুধবার)ডা.আকতারুজ্জামন বাবু তিনটি সিজার করে তিনটিতেই স্বাক্ষর করেছেন তার চিকিৎসক স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনমের নামেই!বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে,সিজারে সার্জারি ও এনেসথিস্ট চিকিৎসক ভিন্ন ভিন্ন থাকার নিয়ম থাকলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বেশি ব্যয় থেকে বাঁচতে ডা.আকতারুজ্জামান বাবু ও তার স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনমের দ্বারা দুই হাজার থেকে পঁচিশ শত টাকায় তা করিয়ে নেন।এই জন্যই উপজেলার অধিকাংশ ক্লিনিক তাদের ও তাদের মতই অন্যান্য চিকিৎসক দিয়েই সিজার করিয়ে থাকেন!এর আগে ডা.মারজিয়া শবনম উপজেলা সদরের পপুলার ক্লিনিকে একটি সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের কপালের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছিলেন।
স্থানীরা মনে করেন সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত তদারকি ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা না থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বেশকিছু ক্লিনিক দীর্ঘদিন ধরে অল্প টাকায় মিলে যায় বলে অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে প্রতারনা করার পরও থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে!তাই স্থানীরা এসব নাম সর্বস্ব অবৈধ ক্লিনিকে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত অন্যথায় অনভিজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক দায়সারা চিকিৎসা বন্ধে ওইসব ক্লিনিক বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে নবজাতক শিশুটির মা রহিমা অভিযোগ করে বলেন,অনেক যন্ত্রনা সহ্য করার পর সন্তানের মুখ দেখে আমি সব ভুলে যাই।আয়া আমার সন্তানের পা উপর করে ধরে বেশকিছু সময় দোলাতে থাকলে তার নাক ও মুখ দিয়ে ফেনার মত পানি বের হতে থাকায় শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়।কিন্তু ক্লিনিকের লোকজন অক্সিজেন না লাগিয়ে দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করে হাসপাতালে নিলে আমার সন্তান মারা যায়।নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একাংশের মালিক মতিয়ার রহমান সিজার একাই ডা.আকতারুজ্জামান বাবু করেছেন স্বীকার করে বলেন,নবজাতক শিশুটি হাসপাতালে মারা গেছে।আর আমি ঘটনার সময় ক্লিনিকে উপস্থিত ছিলামনা!
ডা.আকতারুজ্জামান বাবু বলেন,আমি একজন সার্জারি চিকিৎসক।আমি এমবিবিএস(আর ইউ)পি.জি.টি(সার্জারি)এক্স এইচ.এম।নবজাতক শিশুটি মায়ের গর্ভের পানি খেয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।একাই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করেও রেজিস্টারে স্ত্রীর নাম লিখে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি এ ব্যাপারে আপনার সাথে দেখা করে কথা বলব বলে ফোন কেটে দেন তিনি।তার স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনম বলেন,ওইদিন আমি ওই ক্লিনিকে কোনো সিজার করিনি।কেউ আমার স্বাক্ষর করে থাকলে মোটেও তা ঠিক হয়নি।ডিমলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদুজ্জামান বলেন,আমরা অভিযান চালালেই লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ দেখতে পাই।তারা যে গোপনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন এটা জানা ছিলনা।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা.জাহাঙ্গীর কবির বলেন,আমরা অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিলাম।একাই এক চিকিৎসকের সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করার কোনো সুযোগ নেই!বিষয় গুলো আসলেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের(ইউএনও)দেখার কথা।কারন,ওনারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।ওনারা চাইলেই এসব অবৈধ ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করতেও পারেন আবার সেগুলো বন্ধও করে দিতে পারেন।তারপরও বিষয়টি আমি নিজেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।বিষয়টি আমি দেখছি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

নোয়াখালীতে বেড়েছে পানি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ

নিজে সিজার করে স্ত্রীর নামে স্বাক্ষর -লাইফ কেয়ার হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

আপডেট সময় : 08:27:50 pm, Sunday, 25 September 2022

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি।।

 

নীলফামারীর ডিমলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।তবে অবাক করা বিষয় হলো ডা. আকতারুজ্জামান বাবু নামের নন বিসিএস এমবিবিএস এক চিকিৎসক সিজারিয়ানে নিজেই একা সার্জারি ও এনেসথেসিয়া(অপারেশন)করে রেজিস্টার খাতায় নন বিসিএস-এমবিবিএস চিকিৎসক স্ত্রীর নামে স্বাক্ষর করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন।এ ব্যাপারে শনিবার(২৪ সেপ্টেম্বর)দুপুরে নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা.জাহাঙ্গীর কবির বলেন,আমরা অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিলাম।একাই এক চিকিৎসকের সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করার কোনো সুযোগ নেই!অবৈধ ক্লিনিক বন্ধের বিষয় গুলো আসলেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের(ইউএনও)দেখার কথা।কারন তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।তারপরও বিষয়টি আমি দেখছি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বুধবার(২১ সেপ্টেম্বর)বিকেল তিনটায় উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়িবাড়ি মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা আতাউর রহমানের স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানের জননী রহিমা বেগম(৩০)উপজেলা সদরের আলম প্লাজা মার্কেটের পিছনে অবস্থিত নাম সর্বস্ব অবৈধ লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজার করতে এসে সেখানে ভর্তি হন।পরে বিকেল পাঁচটায় দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ডাকে চুক্তিবদ্ধ চিকিৎসক নন বিসিএস এম.বি.বি.এস(আর.ইউ),
পি.জি.টি(সার্জারি),এক্স এইচ.এম(উল্লেখযোগ্য ডিগ্রী নয়) ডা. আকতারুজ্জামান বাবু সেখানে হাজির হওয়া মাত্রই অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই প্রসূতিকে জোর পূর্বক অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হয় সিজারের জন্য।এসময় প্রসূতি তার স্বামী ক্লিনিকের বাইরে আছেন বলে তাকে ফোনে ডেকে আনতে চাইলেও ওই চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাতে কোনো কর্ণপাত না করেই প্রসূতিকে অপারেশন রুমে নিয়ে গিয়ে তার সিজার সম্পন্ন করেন।যে সিজারে উল্লেখযোগ্য ডিগ্রি না থাকলেও একাই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করেন চিকিৎসক আকতারুজ্জামান বাবু নিজেই।সিজারের আগে এনেসথেসিয়ায় প্রসূতি পুরোপুরি অবস্ নাহলেও ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হলে সব অভিযোগ নিমিষেই ভুলে যান প্রসূতি ও তার পরিবার।কিন্তু নবজাতক পৃথিবীর মুখ দেখার পর স্বাভাবিক ভাবে কেঁদে ওঠার পরও অহেতুক অনভিজ্ঞ আয়া নবজাতক শিশুটির দু-পা ধরে মাথা নিচু করে অধিক সময় শিশুটিকে দোলাতে থাকেন।এতে শিশুটির নাক ও মুখ দিয়ে ফেনার মত পানি বের হতে থাকলে শিশুটির মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।এসময় ওই ক্লিনিকের রেজিস্টার খাতায় চিকিৎসকের স্বাক্ষরের স্থানে নিজ স্ত্রী নন বিসিএস-এমবিবিএস চিকিৎসক ডা.মারজিয়া শবনমের নাম লিখে ডা.আকতারুজ্জামান বাবু দ্রুত ঝটকে পড়েন।শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার দীর্ঘ আধা ঘন্টারও বেশি সময় ধরে শিশুটিকে কোনো রকম অক্সিজেন না দিয়ে ও চিকিৎসক না দেখিয়ে ক্নিনিক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করেন।এক পর্যায়ে নবজাতক শিশুটির অবস্থা আরো খারাপ হলে দ্রুত শিশুটিকে অক্সিজেন ছাড়াই ডিমলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।অতিতেও এই ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় একাধিক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হলেও অদৃশ্য কারনেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।এই ঘটনার দিন ক্লিনিকটির রেজিস্টার ঘেটে দেখা গেছে একইদিনে(বুধবার)ডা.আকতারুজ্জামন বাবু তিনটি সিজার করে তিনটিতেই স্বাক্ষর করেছেন তার চিকিৎসক স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনমের নামেই!বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে,সিজারে সার্জারি ও এনেসথিস্ট চিকিৎসক ভিন্ন ভিন্ন থাকার নিয়ম থাকলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বেশি ব্যয় থেকে বাঁচতে ডা.আকতারুজ্জামান বাবু ও তার স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনমের দ্বারা দুই হাজার থেকে পঁচিশ শত টাকায় তা করিয়ে নেন।এই জন্যই উপজেলার অধিকাংশ ক্লিনিক তাদের ও তাদের মতই অন্যান্য চিকিৎসক দিয়েই সিজার করিয়ে থাকেন!এর আগে ডা.মারজিয়া শবনম উপজেলা সদরের পপুলার ক্লিনিকে একটি সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের কপালের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছিলেন।
স্থানীরা মনে করেন সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত তদারকি ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা না থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বেশকিছু ক্লিনিক দীর্ঘদিন ধরে অল্প টাকায় মিলে যায় বলে অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে প্রতারনা করার পরও থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে!তাই স্থানীরা এসব নাম সর্বস্ব অবৈধ ক্লিনিকে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত অন্যথায় অনভিজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক দায়সারা চিকিৎসা বন্ধে ওইসব ক্লিনিক বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে নবজাতক শিশুটির মা রহিমা অভিযোগ করে বলেন,অনেক যন্ত্রনা সহ্য করার পর সন্তানের মুখ দেখে আমি সব ভুলে যাই।আয়া আমার সন্তানের পা উপর করে ধরে বেশকিছু সময় দোলাতে থাকলে তার নাক ও মুখ দিয়ে ফেনার মত পানি বের হতে থাকায় শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়।কিন্তু ক্লিনিকের লোকজন অক্সিজেন না লাগিয়ে দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করে হাসপাতালে নিলে আমার সন্তান মারা যায়।নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একাংশের মালিক মতিয়ার রহমান সিজার একাই ডা.আকতারুজ্জামান বাবু করেছেন স্বীকার করে বলেন,নবজাতক শিশুটি হাসপাতালে মারা গেছে।আর আমি ঘটনার সময় ক্লিনিকে উপস্থিত ছিলামনা!
ডা.আকতারুজ্জামান বাবু বলেন,আমি একজন সার্জারি চিকিৎসক।আমি এমবিবিএস(আর ইউ)পি.জি.টি(সার্জারি)এক্স এইচ.এম।নবজাতক শিশুটি মায়ের গর্ভের পানি খেয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।একাই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করেও রেজিস্টারে স্ত্রীর নাম লিখে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি এ ব্যাপারে আপনার সাথে দেখা করে কথা বলব বলে ফোন কেটে দেন তিনি।তার স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনম বলেন,ওইদিন আমি ওই ক্লিনিকে কোনো সিজার করিনি।কেউ আমার স্বাক্ষর করে থাকলে মোটেও তা ঠিক হয়নি।ডিমলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদুজ্জামান বলেন,আমরা অভিযান চালালেই লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ দেখতে পাই।তারা যে গোপনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন এটা জানা ছিলনা।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা.জাহাঙ্গীর কবির বলেন,আমরা অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিলাম।একাই এক চিকিৎসকের সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করার কোনো সুযোগ নেই!বিষয় গুলো আসলেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের(ইউএনও)দেখার কথা।কারন,ওনারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।ওনারা চাইলেই এসব অবৈধ ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করতেও পারেন আবার সেগুলো বন্ধও করে দিতে পারেন।তারপরও বিষয়টি আমি নিজেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।বিষয়টি আমি দেখছি।