
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।।
প্রেমের সম্পর্ক মাত্র চার মাস। অল্প সময়ের মধ্যে ওই চতুর প্রেমিকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে এখন সবকিছু অস্বীকার করায় বিয়ে দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনশনে বসেছে প্রেমিকা। ওই ঘটনাটি ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের নামাপাড়া গ্রামে ঘটেছে।
জানা গেছে, গত চার মাস আগে আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নামাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সিয়াম পাশ্ববর্তী হরিরামপুর ইউনিয়নের গোলাভিটা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের দ্বিতীয় মেয়ে নুসরাত আক্তার স্বর্ণার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। সম্পর্কস্থাপনের কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন ওই ভন্ড প্রেমিক সিয়াম স্বর্ণাকে জানায় তার বাবা রফিকুল ইসলামের একটি কিডনি নষ্ট। যেকোন সময় তিনি মারা যেতে পারেন, তাই তিনি ছেলের বউ দেখতে অস্থির হয়ে আছেন। বিভিন্নস্থানে পাত্রি দেখছেন পরিবারের লোকজন। ভালবাসি তোমাকে, বিয়েও করবো তোমাকেই। তোমাকে না পেলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। এমন আবেগপ্রবন কথা বলে আর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীর সঙ্গে সিয়াম গড়ে তুলে শারীরিক সম্পর্ক। এভাবে চলে মাস দুথয়েক। এরপর কৌশলে ওই নারীর কাছ থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে ম্যাসেঞ্জার ও ইমুর সকল প্রেমের প্রমাণ (এসএমএস) গুলো মুছে ফেলেন সিয়াম। জীবন থেকে সটকে পড়ার পায়তারার বিষয়টি বুঝতে পারে ত্রিশাল মহিলা ডিগ্রি কলেজের ১মবর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত আক্তার স্বর্ণার। প্রতারনার স্বীকার ওই নারী গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিয়ামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসে। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে ছেলের বাবাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মারধরেরও অভিযোগ করেন ওই নারী।
দুপুরে সিয়ামের বাড়িতে গিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী স্বর্ণার সঙ্গে কথা হলে তিনি দৈনিক স্বাধীন মতকে জানান, প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার পর আবেগী কথা, বাবার অসুস্থতার কথা আর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তুলে সিয়াম। আমার প্রয়োজন ফুরাবার পর সে আমাকে এড়িয়ে চলতে থাকে। সিয়ামের প্রতারনার বিষয়টি বুঝতে পেরে, বিয়ের দাবি নিয়ে তার বাড়িতে অবস্থান করছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সিয়ামের বাবা আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিল। অন্যরাও মারধর করেছে আমাকে। যতই নির্যাতন করুক, আমি এই বাড়ি ছেড়ে যাব না। সিয়ামকে না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সিয়ামের বাবা রফিকুল জানান, বন্ধুদের মতো এক সঙ্গে তারা আড্ডা-তাড্ডা দিতো। মাসখানেক আগেও মেয়েটি একবার চলে এসেছিলো, পরে থানা পুলিশের মাধ্যমে সুরাহা করা হয়। এখন আবার আসছে।
স্থানীয় ইউপি হাবিবুর রহমান বলেন, বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে মেয়েটি দ্বিতীয়বার আসলো। একে-তে মেয়েটির বয়স অল্প, দ্বিতীয়ত সে প্রেমের সম্পর্কের কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন জানান, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিলো। মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়সি। তাই খবর পেয়ে তাকে কাউন্সেলিং করতে পুলিশ পাঠিয়েছি