মো: গোলাম কিবরিয়া
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি।।
যশোর জেলা শহর থেকে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আমদাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের জন্য নিজের সব শখ- আহ্লাদ ও ইচ্ছা বিলিয়ে দিয়েছেন এ স্কুলের সহকারী শিক্ষকা সুফিয়া ইয়াসমিন।
শিক্ষার্থীদের জন্য ৩১ বছরের চলমান চাকরি জীবনে বিদ্যালয় থেকে একদিনও ছুটি নেননি এই শিক্ষকা। তা অর্জিত হোক বা বার্ষিক। কাটাননি অসুস্থতাজনিত ছুটিও। এছাড়া নাম ডাকা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ক্লাস নেন দাঁড়িয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত থেকে গেছেন। ঘটনাটি আশ্চর্যজনক মনে হলে বাস্তবেও এমনটি ঘটেছে এই শিক্ষিকার জীবনে।
সুফিয়া ইয়াসমিন সদর উপজেলার ছিলুমপুর গ্রামের মৃত আদম আলী সরদারের মেয়ে।
আর কদিন পরই অবসরে যাবেন তিনি। রোদ কিংবা ঝড়-বৃষ্টি- যাই হোক না কেনো- স্কুলে আসেননি সুফিয়া ইয়াসমিন এমন কোনো রেকর্ড নেই। ৩১ বছরের শিক্ষকতা জীবনে সরকার নির্ধারিতর বাইরে ছুটি কাটাননি একটি দিনও।
সুফিয়া ইয়াসমিন ১৯৮৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ওই বিদ্যালয়ে। কর্মজীবনে কখনও ফাঁকি দেবেন না- এই ব্রত ছিল তার। সে অনুযায়ী কাজ করতে করতে স্কুলই হয়ে ওঠে তার জীবনের ধ্যান-জ্ঞান। আপনজন মারা গেলেও ক্লাস বন্ধ করেননি কখনো।
এই শিক্ষিকা বলেন- মাঝে মধ্যে মনে হয় শরীরটা একটু অসুস্থ কিন্তু যখন স্কুলে আসি তখন আমার আর তেমন কিছু মনে হয় না। ছোট থেকেই ইচ্ছা ছিল সামাজিক কাজ করার। শিক্ষাকতা করার পাশাপশি সামাজিক কাজ করে চলেছেন তিনি। ব্যক্তিগত শখ-আহ্লাদ ও কোনো পিছুটান না থাকায় এটা হওয়া সম্ভব হয়েছে।
বিয়ে কেন করেননি ও কেন কোনোদিন বসে ক্লাস নেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন- বিয়ে করলে সমাজসেবা করতে পারব না এবং অসহায় শিক্ষার্থীদের সেবা করতে পারব না- এজন্য বিয়ে করিনি। এ স্কুলের শিক্ষার্থী হওয়ার কারণে কখনো বসে ক্লাস নেইনি। কারণ ওই চেয়ারে বসে আমার শিক্ষকরা ক্লাস নিতেন- তাই আমি ওই চেয়ারে কোনোদিন বসিনি।