
মোঃ মিজানুর রহমান, সাতকানিয়া প্রতিনিধি
সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নে নিজের মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অপরাধে মোহাম্মদ আলী(৪০) নামের এক নরপিশাচ বাবাকে আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় পুলিশের কাছে দিয়েছেন স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার(২৪ এপ্রিল)সকালে উপজেলার কেরানিহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অভিযুক্ত নরপিশাচ বাবাকে আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তাররকৃত মোহাম্মদ আলী উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত এমদাদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের স্ত্রী নাহিদা আক্তার বাদী হয়ে স্বামীকে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণের শিকার ১৩ বছর বয়সী মেয়েটি কেফায়েত উল্লাহ কবির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদীর সাথে ২০১০ সালের দিকে মোহাম্মদ আলীর বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি পরিবারের বড় মেয়ে। ১০-১৫ দিন আগে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেট ব্যাথা বলে বমি করতে থাকে। বিষয়টি তার মা জানতে চাইলেও সে ভয়ে মাকে বলেনি। গত মঙ্গলবার পুনরায় মেয়ের পেট ব্যাথা ও বমি শুরু হলে স্বামীকে দিয়ে তাকে উপজেলার কেরানীহাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এসময় চিকিৎসক নাহিদাকে হাসপাতালে ডেকে পাঠাই।
নাহিদা আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে কি হয়েছে জানতে চাইলে চিকিৎসক জানান, তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। পরে অভিযুক্ত বাবা মোহাম্মদ আলীর অনুরোধে ও মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে গর্ভপাত করানো হয়। এজাহার থেকে আরও জানা যায়, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২ টার দিকে ও ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১ টার দিকে দু’দফায় তার শয়ন কক্ষে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন তারই বাবা মোহাম্মদ আলী। এ ঘটনা কাউকে প্রকাশ করলে হত্যার হুমকিও দেন। অভিযু মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী নাহিদা আক্তার বলেন, বিষয়টি মেয়ের বাবাকে জিজ্ঞাসা করলে সে ধর্ষণের বিষয়টি আমার কাছে স্বীকার করে। বিষয়টি কাউকে না বলার অনুরোধ করেন। পরে আমার ভাই মোঃ নাজিম উদ্দিনকে হাসপাতালে ডেকে আনি। ভাইসহ নিকট আত্মীয়দের সহযোগিতায় আমার স্বামীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। তাদের সাথে পরামর্শ করে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করি। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জাহেদুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় তার মা ও আত্মীয়-স্বজনরা অভিযুক্ত বাবাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় মেয়ের মা বাদী হয়ে মোহাম্মদ আলীকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আসামিকে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।