
মোঃ রুবেল খান মোংলা প্রতিনিধি।।
করোনায় আক্রান্ত মোংলার চিলা ইউনিয়নের গাববুনিয়া গ্রামের রশিদ শিকদারের ছেলে জাহাঙ্গীর শিকদার(৭০)কে ৯ জুলাই দুপুরে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ১০ জুলাই দুপুরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
৬ জুলাই একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় করোনায় আক্রান্ত আরেক রোগী শেলাবুনিয়া গ্রামের বঙ্গবন্ধু সড়কের শহিদ উদ্দীনের ছেলে আবু তালেব (৬৫)কে। তিনিও ৯ জুলাই সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ।
একইভাবে ৮ জুলাই করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সোনাইলতলা ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামের মোস্তফা শেখের স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৫৫)। ৯ জুলাই সকালে তিনিও মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সরকারি হাসপাতালে কর্মরত সোনাইলতলা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কল্যাণ সহকারি মেহেরুন্নেসা (৫৩) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনদিনের ব্যবধানে যে ৪ জনের মৃত্যু হয় তাদের সবার বয়স পঞ্চাশের উপরে।
জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে মোংলায় করোনার সংক্রমণ হার কিছুটা কমলেও বেড়েছে মৃত্যু। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাদের মৃত্যু হচ্ছে তারা বেশিরভাগই বয়স্ক। ৫০ এর উর্ধ্ব বয়সীদের মৃত্যুঝুঁকি এখন আগের যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, করোনায় আক্রান্ত এমনকি উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে যতজন রোগী ভর্তি হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই বয়স্ক। করোনায় আক্রান্ত যেসব রোগীর শারীরিক অবস্থা সন্তোষজনক নয় আমরা তাদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। মধ্যবয়সী যারা আক্রান্ত হচ্ছেন বাকীদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের মেডিকেল টিম নিয়মিত তাদের বাড়িতে গিয়ে প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর করোনায় যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বেশিরভাগই পঞ্চাশোর্ধ বয়সের।
চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম দশদিনে মোংলায় ৩৩০ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। জুলাই মাসের প্রথম দশদিনে ২০০ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭২ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়।
উপজেলায় জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে করোনার সংক্রমণ হার কিছুটা কমেছে তবে বেশি বয়সী যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারাই মারা যাচ্ছে বেশি।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শেখ রাসেল অক্সিজেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম জানান, আমাদের সংগঠন থেকে করোনায় আক্রান্ত যেসব মানুষকে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিয়েছি তাদের মধ্যে ১৫ জনই মারা গেছেন। যারা মারা গেছেন তাদের অধিকাংশের বয়স পঞ্চাশের উপরে।
তিনি আরো বলেন, সবার আগে প্রয়োজন সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। সর্বক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা মেনে চললে আমাদের মোংলা উপজেলার মৃত্যুহার অবশ্যই কমিয়ে আনা সম্ভব।