
তৌহিদুল ইসলাম চঞ্চল, বিশেষ প্রতিনিধি
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আচমকা বেশ কিছু পণ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। শনিবার ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিধিনিষেধের ফলে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দরে ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর” শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন আটকে পড়েছে। তন্মধ্যে রয়েছে খাদ্যদ্রব্য, বর্জ্য তুলা ও সুতার ট্রাক।
সোমবার -১৯ মে- দুপুরে বুড়িমারী স্থল শুল্ক –কাস্টমস- ও বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করে। এর আগে আরেকটি নিষেধাজ্ঞার ফলে গত ৮ এপ্রিল সড়কপথে ভারতের অভ্যন্তরে বিমানবন্দর ব্যবহার করে ভিন্ন কোন দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি বন্ধ হয় ।
জানা যায়, শনিবার ভারত সরকার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য -উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ- আইনের একটি ধারা প্রয়োগ করে আমদানি ও বন্দর সীমাবদ্ধতা নীতি, ২০২৫-২৬ কার্যকর করে। জারিকৃত ওই বিজ্ঞপ্তিতে তৈরি পোশাক, ফল বা ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেট পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য আইটেম যেমন- স্ন্যাকস, চিপস ও মিষ্টান্ন, তুলা-সুতা, প্লাস্টিক, পিভিসি ও কাঠের আসবাবপত্র বাংলাদেশ থেকে কোন বন্দর দিয়ে আমদানির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির পশ্চিমবঙ্গের অধীন চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী স্থলবন্দরের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে এক্ষেত্রে নেপাল-ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য ভারত হয়ে রপ্তানির ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবেনা বলে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামে অবস্থিত ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর’ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা স্থলবন্দরের মাধ্যমে ভারতে ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেট পানীয় –জুস-, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য আইটেম যেমন- স্ন্যাকস, চিপস ও মিষ্টান্ন, বর্জ্য তুলা-সুতা এবং কিছু প্লাস্টিক ও পিভিসিজাতীয় পণ্য রপ্তানি করা হয়।
কিন্তু ভারত সরকার নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করায় বুড়িমারী স্থলবন্দরে সকালে ২০টি রপ্তানির পণ্যবোঝাই গাড়ি আটকে যায়। পরে দুপুর নাগাদ প্রায় শতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে। এতে রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা পড়েছেন বিপাকে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রেকায়েত হোসেন লাবু বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞায় বুড়িমারী স্থলবন্দরে ফলের জুস, বিস্কুট ও নুডলসের বেশকিছু গাড়ি আটকে আছে। এছাড়াও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের গাড়িও রয়েছে। ফলে রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।’
জানা যায়, স্বাদযুক্ত ও কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী, তুলা ও সুতির সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি তৈরিপণ্য আমদানি, নিজস্ব শিল্পের জন্য ইনপুট তৈরি করে এমন রঙিন পদার্থ, রং, প্লাস্টিসাইজার, কাঠের আসবাবপত্র ও অন্যান্য পণ্য আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের কোনো স্থল কাস্টমস স্টেশন –এলসিএস-/ ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট –আইসিপি- এবং পশ্চিমবঙ্গের –এলসিএস- চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি দিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। তবে, বাংলাদেশ থেকে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণী পাথর প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয় বলা হয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহ : পরিচালক –ট্র্যাফিক- মেহেদি হাসান বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে এমন বিজ্ঞপ্তি দেখেছি। রপ্তানি পণ্যেবাহী গাড়িগুলো সকালে স্থলবন্দরের শেডে প্রবেশ করেছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে আজ ভারতে প্রবেশ করেনি। গাড়িগুলো ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত হেফাজতে রয়েছে।“