
তৌহিদুল ইসলাম চঞ্চল, বিশেষ প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার গাটিয়ারভিটা সীমান্ত দিয়ে বুধবার দিবাগত রাতে অবিধ পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পুশইনের শিকার হওয়া শিশুসহ মোট ২০ জনকে আটক করে পাটগ্রাম থানায় সোপর্দ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বিজিবি। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে ৭জন শিশু, ১১জন নারী ও ২ জন পুরুষ। তবে এ বিষয়ে বিজিবি কোন আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
বৃহস্পতিবার -২২ মে- দুপুরে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- মিজানুর রহমান।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন – নড়াইল জেলার মোছা. সীমা খাতুন -২৮-, তার কন্যা মোছা. আঁখি -০৪-, মোছা. আফসানা খাতুন -২৫-, তার ছেলে মো. হামজা ফাসাব -০৬-, মোছা. চায়না খাতুন -২৩- , তার কন্যা শিশু মোছা. মরিয়ম খাতুন ও মোছা. তাইবা খাতুন -১০মাস-, মোছা. রুমা আক্তার -৩৫-, মোছা. রাফিজা খাতুন -৩৫-, মোছা. রিপা খাতুন -৩০-, মো. মুরাদ শেখ -২৪-, মো. রিতু বেগম -২০-, তার কন্যা মোছা. হাবিবা আক্তার -০৩- মোছা. পান্না বেগম -৪৫-, মোছা. কেয়া আক্তার -২২- , তার কন্যা মোছা. লাবিবা খাতুন -০২- ও একই জেলার মো. কাইয়ুম আলী ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন -১১- । খুলনা জেলার মোছা. আফরি খাতুন -৩০-। যশোরের মো. শাহজাহান শেখ -৪০-, তার স্ত্রী মোছা. ফারহানা বেগম, -৩০-।
বিজিবির একটি সূত্র জানায়, বুধবার রাত আনুমানিক ১১.৩০ মিনিটে পাটগ্রামের গাটিয়ারভিটা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলে কিছু ব্যক্তিকে বাংলাদেশে পুশইন করে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশ। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে তাদের আটক করে স্থানীয় ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিজিবি। পরে তাদের পাটগ্রাম থানা পুলিশের হেফাজতে সোপর্দ করা হয়।
স্থানীয় সূত্র মতে, পুশইন হয়ে বাংলাদেশের প্রবেশের পর এই ব্যক্তিরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে হেঁটে পাটগ্রামের দিকে যাত্রা শুরু করেন। তবে নতুন বাজার এলাকায় আসলে এলাকাবাসী তাদের সন্দেহজনক টের পেয় আটক করেন। পরে তারা বিজিবিকে খবর দেন।
আটককৃতদের বরাত দিয়ে স্থানীয়দের দাবি, এই সীমান্তে দুই দফার প্রায় ৫০ জন মানুষকে পুশইন করেছে ভারত। অনেকেই বিজিবি ও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছেন।
আটক ব্যক্তিদের দেয়া তথ্য মতে, ভারতের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রদেশে অন্তত ৪ হাজার জনকে ভারতীয় পুলিশ। তন্মধ্যে ১শ ৮৬ জনকে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে বুধবার বিকেলে একটি বিমানে শিলিগুড়ি বাগডোগরা বিমান বন্দরে আনা হয়। এরপর তাদেরকে ১৫-২০ জনের দলে বিভক্ত করে লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পুশইন করে বিএসএফ ও পুলিশ।
এই বিষয়ে বিজিবির কাছ থেকে কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “আটক ব্যক্তিদের ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করছি। যদি তাদের দেয়া তথ্য সঠিক হয় তবে ঊর্ধ্বতনদের আদেশ মতো ব্যবস্থা নেয়া হবে।“
উল্লেখ্য, আটককৃতদের তালিকা একটি সূত্র থেকে পাওয়া কিন্তু বিজিবি বা পুলিশ তা নিশ্চিত করেনি।