
স্টাফ রিপোর্টার, নাদিম সরকার
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে ভেজালরোধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি পবিত্র রমজান মাসে বিএসটিআই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে। পবিত্র মাহে রমজান শুরুর এক মাস পূর্ব হতেই বিএসটিআই’র সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের আওতায় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল প্রতিরোধ এবং পণ্যের ওজন ও পরিমাপে কারচুপি রোধকল্পে চলমান মোবাইল কোর্ট ও সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে।
আজ বুধবার মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র রমজানে মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ভেজাল প্রতিরোধ ও মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে বিএসটিআই’র বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিল্প উপদেষ্টা জনাব আদিলুর রহমান খান এসব কথা বলেন।
এসময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ওবায়দুর রহমান, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পবিত্র রমজানে ঢাকা মহানগরীতে বিএসটিআইয়ের নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও এপিবিএন-এর সহায়তায় বন্ধর দিনসহ প্রতিদিন ৩টি করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
এছাডা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথা র্যাব এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। সারা দেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযযাগিতায় বিএসটিআইয়ের সব বিভাগীয়, জেলা ও আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রতিদিন একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি দেশব্যাপী বিএসটিআইয়ের সার্ভিল্যান্স টিমের অভিযান ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
এছাডা রমজান মাসে আকস্মিকভাবে পরিচালিত অভিযানগুলোতে বিশেষ করে রোজাদাররা সচরাচর যে সব খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে থাকেন ফুট ড্রিংকস, ফুট সিরাপ, মুড়ি খেজুর, সফট ড্রিংকস পাউডার, কার্বেনেটেড বেভারেজ, ভাোজ্যতেল, সরিষার তেল, ঘি, পাস্তুরিত দুধ, নুডুলস, ইনস্ট্যান্ট নুডুলস, লাচ্ছা সেমাই, পানি ইফতার সামগ্রীর বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ধরনের পণ্যের বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। বিএসটিআইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা যেমন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এসব অভিযানে অংশ নেবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি সময়ে সারা দেশে ৪৭১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়, যার মধ্যে মামলা করা হয় ৪২৮টি, জরিমানা করা হয় ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৩জনকে, কারখানা সিলগালা করা হয় ২৩টি। তাছাড়া ওজনে কারচুপির কারণে ৩৮২টি কোর্ট পরিচালনা করে ৬১৫টি মামলা করা হয়। জরিমানা করা হয় ২ কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৯২টি পেট্রোল পাম্পের ইউনিট সিলগালা করা হয়।
এ ছাড়া অনলাইনে নকল ও অবৈধ পণ্য বিক্রয়, বিতরণ ও সরবরাহ বন্ধে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অনলাইনে বিক্রি বা বিতরণ করতে না পারে, সে জন্য ইতিমধ্যে বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছে বিএসটিআই। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১৫টি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি বিএসটিআইয়ের অনুরোধ, অনলাইনে পণ্য কেনার আগে বিএসটিআইর অনুমোদন নিশ্চিত হয়ে পণ্যের অর্ডার করুন। প্রয়োজনে বিএসটিআইর হটলাইন নম্বরে -১৬১১৯- ফোন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিং এ গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম তথ্য-উপাত্ত ও ভিডিওসহ পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে ভেজালরোধে বিএসটিআই’র কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।