Dhaka , Tuesday, 29 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও সম্মুখ যোদ্ধাদের ক্রেস্ট ও সন্মাননা প্রদান, সপ্তাহ ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ: রেল দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ লালমনিরহাটে ট্রেন সংঘর্ষ: বিজিবি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেল বিস্তারিত সীমান্তজুড়ে ১৫ বিজিবি’র সফল মাদকবিরোধী অভিযান: বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও ফেনসিডিল আদিতমারীতে জমি বিবাদে রক্তপাত: ৮৫ বছরের বৃদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু, আটক দুই নরসিংদীর রায়পুরায় অস্ত্র ও গুলি সহ দুই নারী গ্রেফতার রূপগঞ্জে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য যুবকের লাশ কবর থেকে উত্তেলন পুলিশ এখন আই উইটনেস হয়েছে, বিচার পক্রিয়া শুরু হয়েছে :- হুম্মাম কাদের নবাবগঞ্জের বক্সনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ, নিরব প্রশাসন সীতাকুণ্ডে ১০ লাখ টাকার অবৈধ সিগারেটসহ গ্রেপ্তার ১ রামগঞ্জে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেনের সুস্থতা কামনায় রামগঞ্জ প্রেসক্লাবে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল কমরেড মণি সিংহ: সংগ্রামের প্রতীক, আদর্শের বাতিঘ উখিয়ায় সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে দুদকের অভিযান কানাডা সফর শেষে সাংবাদিকদের সাথে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাতের মতবিনিময় ক্লিন বাংলাদেশ কর্মসূচিতে ১০ লক্ষ গাছ রোপণের ঘোষণা চসিক মেয়রের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে ‘জুলাই স্মরণে: স্মৃতি ও সংগ্রামের গল্প’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন মধুপুরে ডিজেল ইঞ্জিন মেকানিক শ্রমিক সমবায় সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত নরসিংদীতে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন প্রবেশ নির্দেশনা সিঙ্গাপুরের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে বাংলাদেশি কবি মুকুল রূপগঞ্জে ২ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিতাস কতৃপক্ষরা। কলমাকান্দায় ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস পালিত দুর্গাপুরে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’, সমাজগঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস সংকট নিরসনের জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন ফরিদপুরের কোতোয়ালি হতে মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী র‌্যাব-১০ কর্তৃক গ্রেফতার। ফরিদপুরের ভাঙ্গা টোল প্লাজা হতে ১৫.৫ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন মাদক ব্যবসায়ী র‌্যাব-১০ কর্তৃক গ্রেফতার এলএলবি ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন কক্সবাজার আইনজীবী সহকারী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম বিএন”পি পালিয়ে যাওয়ার দল নয়- রক্ত ঝরাইছি তবুও হাসিনার সাথে আপোষ করি নাই “শহিদুল ইসলাম বাবুল। মধুপুরে  উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে এসইডিপি পুরস্কার বিতরণ

নবাবগঞ্জের বক্সনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ, নিরব প্রশাসন

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 06:38:15 pm, Monday, 28 July 2025
  • 42 বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি:

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মহাকবি কায়কোবাদ কন্যা জাহানারা বেগম প্রতিষ্ঠিত বক্সনগর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের বিরুদ্ধে গোপনে গাছ বিক্রয়, জমি এওয়াজ বদল চেষ্টা, বিনা রশিদে রেজিস্ট্রেশন ফি আদায়, সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনসহ বিভিন্নভাবে প্রায় কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব চিত্র। অন্যদিকে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা উপজেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেও কোন রকমের প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে তারা জানিয়েছেন।

অবৈধ পন্থায় সভাপতি পরিবর্তন;

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফিউদ্দিন বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষক জাল রেজুলোশন দুর্নীতিতে ধরা পড়েন। সে সময়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি এ ই আব্দুল মুনিম এবিষয়ে প্রতিবাদ করেন। এতে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ফন্দি আটেন সভাপতিকে বিদ্যালয় থেকে বাদ দেয়ার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও অনিয়ম করে অনুমোদন বিহীন প্রাথমিক শাখার দুই ভোট যুক্ত করেন। পরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও একজন খন্ডকালীন শিক্ষককের ভোটের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটির সাজানো নির্বাচন করা হয়। অবৈধভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক সূচনা আক্তার ও অভিভাবক প্রতিনিধি মনোনয়ন দিয়ে সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে এই আব্দুল মুনিমকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে আলহাজ¦ আব্দুল বাতেন মিয়াকে সভাপতি করা হয়।

গোপনে গাছ কেটে অর্থ আত্মসাৎ;

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বিদ্যালয়ের জায়গা হতে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে গাছ বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট দেয়া পত্রে দেখা যায়, এ পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ৭৭টি গাছ বিক্রয় করা হয়েছে। যার আর্থিক বাজার মূল্য প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকা। সেখান থেকে মাত্র লক্ষাধিক টাকা বিদ্যালয় তহবিলে জমা দিলেও বাকি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গাছ বিক্রিতে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত নেই, বণ বিভাগের কোন অনুমোদন নেই বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কারফিউ চলাকালীন গাছ বিক্রয় করা হয়। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে গাছ কাটার কারণে কোন প্রচার বিজ্ঞপ্তি ছিল না। ৫ আগষ্ট পরবর্তী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ‘গাছ বিক্রয়’ দুর্নীতির বিষয় এলাকাবাসীর সামনে চলে আসে। ফলে বিষয়টি ছাত্র/ছাত্রী ও এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর তার বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর চাপে ১১টি গাছ বিক্রির টাকা বিদ্যালয় তহবিলে জমা করা হয় বলে জানা যায়।

বিনা রশিদে অতিরিক্ত অর্থ আদায়;

২০২৩ সালে ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারি রেজিস্ট্রেশনের টাকা আদায় করা হয় বিনা রশিদে। ষষ্ঠ শ্রেণি হতে সরকারি ফি ৫৮ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা, অষ্টম শ্রেণি ৭৪ টাকার স্থলে ৬০০ টাকা, নবম শ্রেণি ১৭১ টাকার স্থলে ৬০০ টাকা আদায় করা হয়। সেসময়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের কোন রশিদ দেয়া হয়নি। একই বছর ষান্মাষিক ৩০০ টাকা এবং বার্ষিক ৪০০ টাকা মূল্যায়ন ফি বিনা রশিদে আদায় করা হয়। ঠিক এভাবে প্রতি বছর জেএসসি ও এসএসসি উত্তীর্ণ ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে টেস্টিমোনিয়াল বাবদ ৫০০ টাকা ও বোর্ড সনদ বিতরণ বাবদ ৫০০ টাকা আদায় করা হয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা বিনা রশিদে আদায় করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন। একই বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট হতে কোচিং ফি এবং জরিমানা বাবদ অগ্রিম হিসেবে ৬ হাজার টাকা একত্রে আদায় করা হয়। এছাড়াও প্রতি বছর নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের নিকট হতে বিষয়প্রতি ১০০ টাকা বিনা রশিদে আদায় করা হয় বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

জমি হস্তান্তরের চেষ্টা;

আব্দুল বাতেন মিয়ার ম্যানেজিং কমিটিও দুর্নীতিতে পিছিয়ে ছিলো না। ২০২২ সালে প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়ের জায়াগার মাঝখান দিয়ে পারিবারিক রাস্তা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সে সময়ে স্থানীয় মো. তাহেরুল ইসলাম টুটুলের জায়গা এওয়াজ বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আব্দুল বাতেন মিয়ার কমিটি। প্রধান শিক্ষককের বাসভবনের কাছে রাস্তার সাথের বিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে পিছনের কম মূল্যের জায়গা এওয়াজ বদলের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আইনী জটিলতার কারণে এওয়াজ বদল করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের জায়গার মাঝখান দিয়ে রাস্তা দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হয়।

অন্যান্য দুর্নীতি;

প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে ২০১৭ সালে বিদ্যালয়ের “সুবর্ণ জয়ন্তী” উদযাপনে তহবিলে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। ২০২৪ সালে বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের সেমি পাকা ভবন বিক্রয়ে সর্বোচ্চ দরদাতার মূল্য ছিল ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তাদের পছন্দের লোককে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায় হস্তান্তর করে দেয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রাক্তন সভাপতি মরহুম এই আব্দুল মুনীম এবং তাঁর স্বীয় ভাইগণ কর্তৃক তাছাড়া বিদ্যালয়ের অনুকূলে দানকৃত সম্পত্তির হিসাব এলাকাবাসীর নিকট গোপন রাখা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, ২০২৪ সালে নির্বাচনী পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অনিয়ম করা হয়েছে। পূর্বের বছরগুলোতে খাতায় কোডিং নাম্বার দেওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীর পরিচিত অংশ বিচ্ছিন্ন করে মূল্যায়ন করা হতো। এবছর অজ্হাত কারণে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধি লিপিকা সাহা নির্বাচনী পরীক্ষার খাতা কোডিং, স্ক্রুটিং করতে দেননি। শিক্ষার্থীর পরিচিতি শতভাগ নিশ্চিত হয়েই খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন। ফলে সচ্ছতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।

মো. আক্কাস উদ্দিন, আব্দুস সালাম, রুবেল খন্দকার সহ নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন অভিভাবক জানান, যারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবী করেছিল তাদের অকৃতকার্য করতেই পরিচিতি সম্বলিত খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এবিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের প্রতিনিধি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। তিনি ভালো মানুষ তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বলেন, বিন্দু পরিমান অনিয়ম দুর্নীতি হয়নি। যা করা হয়েছে রেজুলেশন করে করা হহয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও দিলরুবা ইসলাম বলেন, আমার কাছে কোন অভিযোগ জমা পড়েনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও সম্মুখ যোদ্ধাদের ক্রেস্ট ও সন্মাননা প্রদান, সপ্তাহ ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন

নবাবগঞ্জের বক্সনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ, নিরব প্রশাসন

আপডেট সময় : 06:38:15 pm, Monday, 28 July 2025

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি:

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মহাকবি কায়কোবাদ কন্যা জাহানারা বেগম প্রতিষ্ঠিত বক্সনগর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের বিরুদ্ধে গোপনে গাছ বিক্রয়, জমি এওয়াজ বদল চেষ্টা, বিনা রশিদে রেজিস্ট্রেশন ফি আদায়, সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনসহ বিভিন্নভাবে প্রায় কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব চিত্র। অন্যদিকে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা উপজেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেও কোন রকমের প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে তারা জানিয়েছেন।

অবৈধ পন্থায় সভাপতি পরিবর্তন;

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফিউদ্দিন বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষক জাল রেজুলোশন দুর্নীতিতে ধরা পড়েন। সে সময়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি এ ই আব্দুল মুনিম এবিষয়ে প্রতিবাদ করেন। এতে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ফন্দি আটেন সভাপতিকে বিদ্যালয় থেকে বাদ দেয়ার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও অনিয়ম করে অনুমোদন বিহীন প্রাথমিক শাখার দুই ভোট যুক্ত করেন। পরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও একজন খন্ডকালীন শিক্ষককের ভোটের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটির সাজানো নির্বাচন করা হয়। অবৈধভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক সূচনা আক্তার ও অভিভাবক প্রতিনিধি মনোনয়ন দিয়ে সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে এই আব্দুল মুনিমকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে আলহাজ¦ আব্দুল বাতেন মিয়াকে সভাপতি করা হয়।

গোপনে গাছ কেটে অর্থ আত্মসাৎ;

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বিদ্যালয়ের জায়গা হতে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে গাছ বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট দেয়া পত্রে দেখা যায়, এ পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ৭৭টি গাছ বিক্রয় করা হয়েছে। যার আর্থিক বাজার মূল্য প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকা। সেখান থেকে মাত্র লক্ষাধিক টাকা বিদ্যালয় তহবিলে জমা দিলেও বাকি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গাছ বিক্রিতে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত নেই, বণ বিভাগের কোন অনুমোদন নেই বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কারফিউ চলাকালীন গাছ বিক্রয় করা হয়। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে গাছ কাটার কারণে কোন প্রচার বিজ্ঞপ্তি ছিল না। ৫ আগষ্ট পরবর্তী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ‘গাছ বিক্রয়’ দুর্নীতির বিষয় এলাকাবাসীর সামনে চলে আসে। ফলে বিষয়টি ছাত্র/ছাত্রী ও এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর তার বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর চাপে ১১টি গাছ বিক্রির টাকা বিদ্যালয় তহবিলে জমা করা হয় বলে জানা যায়।

বিনা রশিদে অতিরিক্ত অর্থ আদায়;

২০২৩ সালে ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারি রেজিস্ট্রেশনের টাকা আদায় করা হয় বিনা রশিদে। ষষ্ঠ শ্রেণি হতে সরকারি ফি ৫৮ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা, অষ্টম শ্রেণি ৭৪ টাকার স্থলে ৬০০ টাকা, নবম শ্রেণি ১৭১ টাকার স্থলে ৬০০ টাকা আদায় করা হয়। সেসময়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের কোন রশিদ দেয়া হয়নি। একই বছর ষান্মাষিক ৩০০ টাকা এবং বার্ষিক ৪০০ টাকা মূল্যায়ন ফি বিনা রশিদে আদায় করা হয়। ঠিক এভাবে প্রতি বছর জেএসসি ও এসএসসি উত্তীর্ণ ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে টেস্টিমোনিয়াল বাবদ ৫০০ টাকা ও বোর্ড সনদ বিতরণ বাবদ ৫০০ টাকা আদায় করা হয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা বিনা রশিদে আদায় করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন। একই বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট হতে কোচিং ফি এবং জরিমানা বাবদ অগ্রিম হিসেবে ৬ হাজার টাকা একত্রে আদায় করা হয়। এছাড়াও প্রতি বছর নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের নিকট হতে বিষয়প্রতি ১০০ টাকা বিনা রশিদে আদায় করা হয় বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

জমি হস্তান্তরের চেষ্টা;

আব্দুল বাতেন মিয়ার ম্যানেজিং কমিটিও দুর্নীতিতে পিছিয়ে ছিলো না। ২০২২ সালে প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়ের জায়াগার মাঝখান দিয়ে পারিবারিক রাস্তা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সে সময়ে স্থানীয় মো. তাহেরুল ইসলাম টুটুলের জায়গা এওয়াজ বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আব্দুল বাতেন মিয়ার কমিটি। প্রধান শিক্ষককের বাসভবনের কাছে রাস্তার সাথের বিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে পিছনের কম মূল্যের জায়গা এওয়াজ বদলের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আইনী জটিলতার কারণে এওয়াজ বদল করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের জায়গার মাঝখান দিয়ে রাস্তা দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হয়।

অন্যান্য দুর্নীতি;

প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে ২০১৭ সালে বিদ্যালয়ের “সুবর্ণ জয়ন্তী” উদযাপনে তহবিলে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। ২০২৪ সালে বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের সেমি পাকা ভবন বিক্রয়ে সর্বোচ্চ দরদাতার মূল্য ছিল ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তাদের পছন্দের লোককে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায় হস্তান্তর করে দেয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রাক্তন সভাপতি মরহুম এই আব্দুল মুনীম এবং তাঁর স্বীয় ভাইগণ কর্তৃক তাছাড়া বিদ্যালয়ের অনুকূলে দানকৃত সম্পত্তির হিসাব এলাকাবাসীর নিকট গোপন রাখা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, ২০২৪ সালে নির্বাচনী পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অনিয়ম করা হয়েছে। পূর্বের বছরগুলোতে খাতায় কোডিং নাম্বার দেওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীর পরিচিত অংশ বিচ্ছিন্ন করে মূল্যায়ন করা হতো। এবছর অজ্হাত কারণে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধি লিপিকা সাহা নির্বাচনী পরীক্ষার খাতা কোডিং, স্ক্রুটিং করতে দেননি। শিক্ষার্থীর পরিচিতি শতভাগ নিশ্চিত হয়েই খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন। ফলে সচ্ছতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।

মো. আক্কাস উদ্দিন, আব্দুস সালাম, রুবেল খন্দকার সহ নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন অভিভাবক জানান, যারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবী করেছিল তাদের অকৃতকার্য করতেই পরিচিতি সম্বলিত খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এবিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের প্রতিনিধি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। তিনি ভালো মানুষ তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বলেন, বিন্দু পরিমান অনিয়ম দুর্নীতি হয়নি। যা করা হয়েছে রেজুলেশন করে করা হহয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও দিলরুবা ইসলাম বলেন, আমার কাছে কোন অভিযোগ জমা পড়েনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।