
ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবে শনিবার হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। তারা গাজায় হামাস বন্দি রাখা ইসরাইলিদের মুক্তির জন্য ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি চুক্তি’ দাবি করেছে।
ইসরাইলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথের খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা গাজায় বন্দিদের পুরোপুরি মুক্তি দিতে একটি পক্ষপাতহীন চুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
বিক্ষোভে অনেক বন্দির পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা আংশিক বা অস্থায়ী মুক্তির বিপক্ষে স্লোগান দিয়েছেন, কারণ তারা আশঙ্কা করছেন যে সাময়িক মুক্তি দিলে পরে আবারও বন্দি সংখ্যা বাড়তে পারে।
সমাবেশে বন্দিদের আত্মীয়রা বক্তৃতা করে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে চাপ দিতে বলেছেন যাতে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ সমঝোতায় পৌঁছানো হয়।
এই বিক্ষোভের মধ্যেই ইসরাইল সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তারা কাতারের রাজধানী দোহায় একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে যারা হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে। কারণ, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাস ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
সরকারি সম্প্রচার সংস্থা কেএএন জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীরা আশা করছেন দুই পক্ষ শিগগিরই সমঝোতায় আসবে।
হিব্রু ভাষার পত্রিকা হারেৎজ জানায়, নেতানিয়াহু রোববার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ইসরাইলি সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গাজায় এখন ৫০ জন বন্দি রয়েছে, যাদের অন্তত ২০ জন জীবিত। অন্যদিকে, ইসরাইলি কারাগারে ১০,৪০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে যাদের অনাহার, নির্যাতন ও চিকিৎসা অবহেলা সহ নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হতে হচ্ছে। এর ফলে অনেক বন্দি মৃত্যুবরণ করেছেন বলে ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহল গাজায় যুদ্ধবিরতি দাবি করলেও ইসরাইল গত ২২ মাস ধরে সেখানে এক ধ্বংসাত্মক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৫৭,৪০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, অধিকাংশ নারী ও শিশু।
এছাড়া, গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি গণহত্যার মামলা চলছে।