
অনলাইন ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী গাড়ি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অটোমোটিভ কম্পিউটার চিপের ওপর আরোপিত রফতানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে যাচ্ছে চীন।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পাদিত নতুন বাণিজ্যচুক্তির অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
দক্ষিণ কোরিয়ায় গত সপ্তাহে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান—শি জিনপিং ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পর হোয়াইট হাউস এক ফ্যাক্টশিটে চুক্তির বিস্তারিত নিশ্চিত করে।
চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন রফতানি, বিরল ধাতু সরবরাহ এবং ফেন্টানিল তৈরির উপকরণ সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা কিছুটা কমেছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ট্রাম্প চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যার পাল্টা জবাবে চীনও পাল্টা শুল্ক দেয়—ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাস জানায়, চুক্তির বিস্তারিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করবে।
রোববার সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট বলেন— “আমরা চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাই না, বরং তারা নিজেদেরকে একজন বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে প্রমাণ করেছে।”
হোয়াইট হাউস প্রকাশিত ফ্যাক্টশিটে জানানো হয়—চীনের কারখানায় উৎপাদিত নেক্সপেরিয়ার ‘গুরুত্বপূর্ণ লিগ্যাসি চিপ’ যেন আবারও বিশ্ববাজারে অবাধে সরবরাহ করা যায়, সে জন্য চীন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
নেক্সপেরিয়া চীনা মালিকানাধীন হলেও সদর দফতর নেদারল্যান্ডসে। ইউরোপে তৈরি কোম্পানির প্রায় ৭০ শতাংশ চিপ চীনে পাঠানো হয়, যেখানে প্রক্রিয়াজাত হয়ে তা বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়।
এদিকে ভলভো, ভক্সওয়াগন ও জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারসহ একাধিক গাড়ি নির্মাতা সম্প্রতি সতর্ক করেছিল—চিপ সংকট চলতে থাকলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
চুক্তির আরেকটি অংশে চীন ঘোষণা দিয়েছে, বিরল ধাতু রফতানিতে আরোপিত নিয়ন্ত্রণ এক বছরের জন্য স্থগিত থাকবে।
একই সঙ্গে ফেন্টানিল আমদানি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক আরোপ করেছিল, সেটিও কমানো হবে।
চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ফেন্টানিল–সংক্রান্ত সমস্যায় তারা ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা’ নেবে। এই সিন্থেটিক ড্রাগটি যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসায় অনুমোদিত হলেও অতিমাত্রায় নেশাজনিত হওয়ায় দেশটিতে ওপিওয়েড–সম্পর্কিত মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে।
এছাড়া সয়াবিন রফতানিতে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০২৫ সালের শেষ দুই মাসে ১২ মিলিয়ন টন এবং পরবর্তী তিন বছর প্রতি বছর ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন করে কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এ বছরের শুরুতে সয়াবিন আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় মার্কিন কৃষকরা বড় বাজার হারিয়েছিলেন। তখন ট্রাম্প প্রশাসন কৃষকদের সহায়তায় তার আগের প্রেসিডেন্সির সময়কার বেইলআউট কর্মসূচি পুনরায় চালু করে।

























